সংকট এড়ানোর বিষয়ে আশাবাদী ওবামা

নতুন বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে বাঁচাতে শেষ মুহূর্তে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এ আশার কথা জানান।
সময় ফুরিয়ে এলেও এখন পর্যন্ত সমস্যাটির সমাধান করতে না পারায় কংগ্রেসের সমালোচনাও করেন তিনি।
ওবামা বলেন, 'সিদ্ধান্ত নেওয়ার মুহূর্ত চলে এসেছে। একটি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে এখনো আশাবাদী আমি।'
প্রসঙ্গত, সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের আমলে বিশেষ আইনের মাধ্যমে কর কমানো হয়েছিল। ওই আইনের মেয়াদ ছিল ১০ বছর। ৩১ ডিসেম্বর এর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ আইনের নবায়ন বা নতুন আইন তৈরি করা না গেলে ১ জানুয়ারি থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আগের আইন (বিশেষ আইনের পূর্ববর্তী আইন) বলবৎ হবে। সে ক্ষেত্রে মার্কিন নাগরিকদের কর বাড়বে অন্তত ৬০ হাজার কোটি ডলার। সরকারের দিক থেকেও কঠোর ব্যয় সঙ্কোচন শুরু হবে। এই সংকটকেই ফিসক্যাল ক্লিফ নামে অভিহিত করা হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছে, আগের আইন কার্যকর হলে এর প্রথম ধাক্কাটা যাবে বয়স্কদের স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির ওপর দিয়ে। এর সঙ্গে কর্মসংস্থান ও উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়বে। এতে যুক্তরাষ্ট্রে ফের আর্থিক মন্দা দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইউরোপসহ বিশ্ব অর্থনীতির জন্যও তা ভয়ের কারণ হতে পারে।
কিন্তু কংগ্রেসে সরকারের ব্যয়ের পরিধি এবং করের হার নির্ধারণের বিষয়টি নিয়ে রিপাবলিকানদের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে পারছে না ওবামা প্রশাসন। সরকারের ঋণসীমা বাড়ানোরও বিরোধিতা করছে রিপাবলিকানরা। শিগগির ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে নিয়ে কংগ্রেসে দুই দলের নেতাদের সঙ্গে বসছেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। কর বৃদ্ধি ও ব্যয় সঙ্কোচনের মাধ্যমে বাজেট ঘাটতি ৬০০ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে আনার পরিকল্পনা আরো কিছুদিন পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সমঝোতায় পৌছানোই তাদের লক্ষ্য।
ওবামা জানান, মার্কিন সিনেটের ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান সদস্যরা এমন একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন, যা কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেট উভয় কক্ষেই পাস হতে কোনো বাধা থাকবে না। তবে এ ধরনের কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো না গেলেও অন্তত স্বল্প আয়ের মার্কিন নাগরিকদের জন্য আয়করের বর্তমান মাত্রা এবং বেকার ভাতা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে ভোটের মাধ্যমে একটি কার্যকর সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ওবামা আরো বলেন, সাম্প্রতিক এ অচলাবস্থা ইতিমধ্যে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। ওয়াশিংটনে এ অচলাবস্থা দেখে ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা নিজেদের গুটিয়ে নিতে শুরু করেছে।
কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে মতভেদ দূর করার সুযোগ করে দিতে ১ জানুয়ারির পরেও কিছুটা সময় দেওয়ার জন্য বিশেষ বাজেট পরিকল্পনা করার ঘোষণা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সূত্র : এএফপি, গার্ডিয়ান, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.