সারা দেশে তীব্র গ্যাস-সংকট

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এ সংকট আবাসিক থেকে শিল্প-বাণিজ্য, সার কারখানা, বিদ্যুেকন্দ্রসহ সর্বত্র। অনেক এলাকায় বাসাবাড়িতে দিনের বেলায়ও গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না।
সরকারি সূত্রগুলো জানায়, গ্যাসের চাহিদার তুলনায় উত্পাদন-ঘাটতি অনেক দিনের। এখন শীত বাড়ায় চাহিদা আরও বেড়েছে। সার ও বিদ্যুত্ উত্পাদনের জন্য সরবরাহ বাড়াতে হচ্ছে। এ ছাড়া শীতে গ্যাসের পাইপলাইনে কনডেনসেট (গ্যাসের সঙ্গে থাকা তেল) জমেও সরবরাহ কিছুটা বিঘ্নিত হয়। এসব মিলে সংকট তীব্রতর হয়েছে।
ঢাকায় সংকট বেশি: রাজধানীর শ্যামলী থেকে কয়েকজন গ্রাহক টেলিফোনে প্রথম আলোকে জানান, তাঁদের গ্যাস-সংকট সহনীয় পর্যায়ে ছিল। হঠাত্ করে গতকাল বৃহস্পতিবার সারা দিনেও চুলা জ্বালানোর মতো গ্যাসের চাপ ছিল না। ফলে সকাল-দুপুরের খাবার বাইরে থেকে কিনে খেতে হয়েছে।
পূর্ব রাজাবাজারের একজন গ্রাহক জানান, তাঁদের এলাকায় গ্যাসের চুলা জ্বলছে কুপি বাতির মতো। ফলে রান্না হয়নি। পূর্ব দোলাইরপাড়, দনিয়া প্রভৃতি এলাকায় আগেও দিনের বেলা গ্যাসের সংকট ছিল। কয়েক দিন ধরে তা বেড়েছে বলে ওই এলাকার কয়েকজন গ্রাহক জানান।
নয়াপল্টন এলাকায় কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু গতকাল থেকে হঠাত্ করে তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
কামরাঙ্গীরচরে গ্যাস-সংকট তীব্র। সুলতানগঞ্জ ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডের ছয়টিতেই এখন সকাল আটটা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। সেখানকার নুরিয়া মাদ্রাসার প্রায় ৭০০ ছাত্রের রান্না এখন লাকড়ি দিয়ে করতে হচ্ছে।
ঢাকা ও এর আশপাশের শিল্পকারখানা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোও গ্যাস-সংকটে আক্রান্ত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল আজিজ খান প্রথম আলোকে বলেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ আগে থেকেই কম ছিল। সার কারখানায় সরবরাহ শুরু করার পর সমস্যা আরেকটু বেড়েছিল। এরপর চাঁদপুর বিদ্যুেকন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ শুরু করায় পুরো বিতরণব্যবস্থাই সংকটে পড়েছে। দেশের সব এলাকার গ্রাহকেরাই এ জন্য ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে চাঁদপুর বিদ্যুেকন্দ্রে দৈনিক দুই কোটি ৭০ লাখ ঘনফুট করে গ্যাস দেওয়া হচ্ছে। তিতাস ছাড়াও কর্ণফুলী ও বাখরাবাদ বিতরণ কোম্পানির বিতরণব্যবস্থা থেকে এই গ্যাস নেওয়া হচ্ছে। ফলে গ্যাস-সংকট বেড়েছে দেশের প্রায় সর্বত্র। কয়েক দিন পর বোরো চাষে সেচের জন্য বিদ্যুত্ উত্পাদন বাড়াতে হবে। তখন বিদ্যুেকন্দ্রে গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে হবে। ফলে সংকট থাকবে।
বর্তমানে দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা প্রায় ২৯০ কোটি ঘনফুট। উত্পাদিত হচ্ছে ২২০ কোটি ঘনফুটের কিছু বেশি।

No comments

Powered by Blogger.