যশোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- খালেদা জিয়া তেল মারতেই ভারত গিয়েছিলেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে বলেছেন, তিনি তেল মারতেই ভারতে গিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) ক্ষমতায় থাকলে একেবারে ভারতপ্রীতি আর বিরোধী দলে থাকলে ভারতবিরোধিতা।
এবার ভারত সফরে গিয়ে টিপাইমুখে বাঁধ ও সীমান্ত হত্যার কথা একেবারে ভুলে গিয়ে তেল মারায় ব্যস্ত ছিলেন।’
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শহরের ঈদগাহ মাঠে জনসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি যশোরের জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘যশোর একটি পুরোনো শহর। আমরা যদি আগামীবার ক্ষমতায় আসতে পারি, তাহলে যশোরকে সিটি করপোরেশন করে দেব।’
প্রধানমন্ত্রী জনগণের উদ্দেশে বলেন, যারা দুর্নীতিবাজ এবং আন্দোলনের নামে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে চাইছে, তাদের আবার ক্ষমতায় আসার সুযোগ দেবেন না। তিনি বলেন, তাঁর সরকার কখনো দুর্নীতিতে জড়ায়নি। স্থানীয় সাংসদদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, টিআর প্রকল্পের টাকা দিয়ে প্রতিটি গ্রামের হাটে-বাজারে, স্কুলে সোলার প্যানেল স্থাপন করে প্রতিটি গ্রাম আলোকিত করার ব্যবস্থা নিন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী রেজা রাজুর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, জাতীয় সংসদের হুইপ শেখ আবদুল ওহাব, সাংসদ খালেদুর রহমান, খান টিপু সুলতান, রণজিৎ কুমার রায় প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অতীতে বিএনপি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুর্নীতি সমর্থন করেছে। খালেদা জিয়ার দুই ছেলেও দুর্নীতি করেছে এবং তিনি নিজেও (খালেদা জিয়া) জরিমানা দিয়ে কালোটাকা সাদা করেছেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি খুবই অদ্ভুত যে যারা দুর্নীতি করে টাকা বানিয়ে দেশটাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে এবং তা প্রবাদের মতোই শোনাচ্ছে যে “চোরের মায়ের বড় গলা”।’ তিনি বলেন, তাঁর সরকার কখনো দুর্নীতিতে জড়ায়নি এবং সব স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতে বিশ্বাস করে।
খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে চান আর মুখে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলেন। বাংলাদেশে এ খেলা খেলতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীর বিচার করে জাতিকে কলুষমুক্ত করব।’
বিমানবাহিনী একাডেমিতে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন: এর আগে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমি যশোরে শীতকালীন কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। সেখানে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পূর্বসূরি বীরদের অবদান ও ত্যাগ-তিতিক্ষা অনুসরণ করতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। গতকাল একাডেমির সাতজন মহিলা ক্যাডেটসহ মোট ২২ জন ফ্লাইট ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন।
এরপর বেলা আড়াইটায় শহরের গরীবশাহ সড়কে নির্মিত দেশের বৃহৎ বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি ঈদগাহ মাঠে ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রথম জেলা হিসেবে যশোরের উদ্বোধন করে জনসভায় ভাষণ দেন।

No comments

Powered by Blogger.