কর ফাঁকি দিচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংকের ছয় সহযোগী প্রতিষ্ঠান- এনবিআরের গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নামছে by হামিদ-উজ-জামান মামুন

কর ফাঁকি দিচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী ছয় প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শীঘ্রই মাঠে নামছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) গোয়েন্দা সংস্থা। তার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি গ্রামীণ ব্যাংক কমিশন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে এনবিআর।


কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে গ্রামীণ শিক্ষা, এটির ঠিকানা হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক ভবন, মিরপুর ঢাকা। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৭ সালের ১৯ আগস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে নিবন্ধিত হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত একবারের জন্যও আয়কর রিটার্ন দাখিল করেনি। এটির ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (টিআইএন) হচ্ছে ০৭০-২০১-৩৮৪/সা-২৮৭ (কোং)।
গ্রামীণ স্টার এডুকেশন লিঃ, ঠিকানা গ্রামীণ ব্যাংক ভবন, মিরপুর-২ ঢাকা। করদাতা এ কোম্পানিটি ২০০২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধিত হয়েছে। কিন্তু বর্তমান পর্যন্ত কোন আয়কর রিটার্ন দাখিল করেনি। এর টিআইএন হচ্ছে ০৭০-৩০০-০০৬৬/সা-২৮৭ (কোং)।
গ্রামীণ ইনফরমেশন হাইওয়ে লিঃ, ঠিকানা গ্রামীণ ব্যাংক ভবন, মিরপুর-২, ঢাকা। করদাতা এ কোম্পানিটি ২০০১ সালের ২৪ নবেম্বর নিবন্ধিত করা হয়। কিন্তু তারপর থেকে কোন আয়কর রিটার্ন দাখিল করা হয়নি। এর টিআইএন হচ্ছে ০৭০-২০১-২৩২১/সা-২৮৭ (কোং)।
গ্রামীণ শক্তি সামাজিক ব্যবসা লিঃ, ঠিকানা গ্রামীণ ব্যাংক ভবন, মিরপুর-২, ঢাকা। করদাতা এ কোম্পানিটি ২০১০ সালের ১২ ডিসেম্বর নিবন্ধিত করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন আয়কর রিটার্ন দাখিল করেনি। এটির টিআইএন হচ্ছে ০৭০-২০১-৩৮৩৪/সা-২৮৭ (কোং)।
গ্রামীণ ইউকিগুনি মুইতাকি লিঃ, ঠিকানা গ্রামীণ ব্যাংক ভবন, মিরপুর-২, ঢাকা। করদাতা এ কোম্পানিটি ২০১১ সালের ১১ জুলাই নিবন্ধিত হয়েছে। কিন্তু এখনও আয়কর রিটার্ন দাখিল করেনি।
এছাড়া গ্রামীণ ইউনিক্লো লিঃ, ঠিকানা, গ্রামীণ ব্যাংক ভবন, মিরপুর-২, ঢাকা। করদাতা এ কোম্পানিটি ২০১১ সালের ১৪ জুলাই নিবন্ধিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন আয়কর রিটার্ন দাখিল করেনি। এটির টিআইএন হচ্ছে ০৭০-২০২-১১৫৬/সা-২৮৭ (কোং)।
জাতীয় রাজস্ববোর্ড সূত্র জানায়, গ্রামীণ ব্যাংক আয়কর মুক্ত হলেও সহযোগী এ ছয়টি সংস্থা আয়কর মুক্ত নয়।
সূত্র জানায়, নোরাডের অর্থ স্থানান্তরসহ নানা বিষয় নিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কর্মকা- প্রসঙ্গে দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমের আলোচনা-সমালোচনার মুখে ১০ জানুয়ারি একএম মনওয়ার উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে সরকার। ২৫ এপ্রিল অর্থমন্ত্রীর কাছে গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কিত পর্যালোচনা প্রতিবেদন জমা দেয় এ সংক্রান্ত কমিটি। অন্যদিকে অনুমোদন না নিয়ে পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২ মার্চ গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব থেকে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে অব্যাহতি দেয়।
এর বিরুদ্ধে ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের ৯ পরিচালকের করা দুটি রিট আবেদন গত মার্চে সরাসরি খারিজ করে দেয হাইকোর্ট। এর পর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ইউনূসের করা আপীলের আবেদন ৫ এপ্রিল খারিজ করে আপীল বিভাগ। কিন্তু তিনি আদেশ প্রত্যাহারের (রিকল) আবেদন করেন। আপীল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ শুনানি শেষে ওই আবেদনও খারিজ করে দেয়। এর পর গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে অব্যাহতি নেন ড. ইউনূস। এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের সংঘাত বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.