ইরাকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ-সহস্রাধিক ব্রিটিশ সেনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে

ইরাকে যুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে এক হাজার ব্রিটিশ সেনাকে তদন্তের মুখোমুখি হতে হবে। যুদ্ধাপরাধ তদন্তে ব্রিটিশ সরকার গঠিত ইরাক হিস্টোরিক অ্যালিগেশন টিমের (আইএইচএটি) সদস্যরা ইতিমধ্যে সন্দেহভাজন সেনাদের শনাক্ত করেছেন।


তবে সেনাদের পক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, সেনাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও সংগৃহীত প্রমাণ খুবই 'দুর্বল'।
ইরাকিদের পক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ইরাকে ২০০৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সাধারণ নাগরিকদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আন্তর্জাতিক বাহিনীর সেনারা শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সদস্য সন্দেহে সাধারণ ইরাকিদের আটক করে বন্দিশিবিরে নিয়ে যেত। এরপর তাদের ওপর নির্যাতন চালাত। সেনাদের নির্যাতনে অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যগ্রহণের ওপর ভিত্তি করে ব্রিটিশ সেনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর আগে স্বল্প সংখ্যক সেনার বিচার করা হয়েছে। আর বিচারে সাজা পেয়েছে মাত্র চারজন।
আইএইচএটি আগামী ১২ মাসের মধ্যে যুদ্ধাপরাদের বিষয়ে আরো বেশ কয়েকটি তদন্ত করবে। ইতিমধ্যে তদন্তকারীরা সরকারিভাবে পরিচালিত দুটি তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখেছেন। ২০০৪ সালের ড্যানি বয় যুদ্ধের তদন্তে আল-সুয়িদি কমিশন গঠন করা হয়। আল-সুয়িদি তদন্তে ৫০০ সেনাকে শনাক্ত করা হয় দোষী হিসেবে। এসব সেনার সঙ্গে আইএইচএটির তদন্তকারীরা কথা বলেছেন। এ ছাড়া ব্রিটেনের সামরিক বাহিনীর স্পেশাল এয়ার সার্ভিস (এসএএস) এবং স্পেশাল বোট সার্ভিসের (এসবিএস) সেনাদের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলেছেন।
ব্রিটিশ সেনাদের পক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সেনাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও প্রমাণ 'মাত্রাতিরিক্ত দুর্বল'। এক আইনজীবী বলেন, তাঁর মক্কেল বিশেষ বাহিনীর সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে 'অমানবিক ও দুর্ব্যবহার' করার অভিযোগ করা হয়েছে। কারণ তিনি এক বন্দিকে ২৪ ঘণ্টা খেতে দেননি। আরেক আইনজীবী জানান, জিজ্ঞাসাবাদের সময় এক ইরাকি নাগরিকের মাথার পেছনে এ-ফোর সাইজের একটি কাগজের রোল দিয়ে আঘাত করায় আরেক ব্রিটিশ সেনার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া ইরাকি সন্দেহভাজন জঙ্গিকে দিয়ে কয়েক ঘণ্টা শরীরচর্চা করানোয় দুই ব্রিটিশ সেনার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
ফৌজদারি আইন ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ সিমন ম্যাককি অভিযুক্ত বেশ কয়েকজন সেনার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সংগৃহীত তথ্য-প্রমাণ খতিয়ে দেখেছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের দুর্বল প্রমাণ দিয়ে আসলে কোনো অভিযোগই প্রমাণ করা যাবে না। আর গুরুতর অভিযোগের উপযুক্ত প্রমাণও নেই তাঁদের কাছে। সূত্র : টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.