মহাসড়ক সংস্কারে ধীরগতি

যশোর শহর থেকে অভয়নগর উপজেলার রাজঘাটের দূরত্ব প্রায় ৩৪ কিলোমিটার। যশোর-খুলনা মহাসড়কের এই অংশে কয়েক কিলোমিটার বাদে অধিকাংশ স্থান ভাঙাচোরা, ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দ। বিধ্বস্ত এ মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। এক ঘণ্টার মহাসড়কে সময় লাগছে প্রায় দুই ঘণ্টা।

এ অবস্থায় মহাসড়কটির ওই অংশের সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। কার্যাদেশও দেওয়া হয়। ২৭ জানুয়ারি কাজের উদ্বোধন করেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর মধ্য দিয়ে দরপত্র আহ্বানের ঠিক এক বছরের মাথায় মহাসড়কটির সংস্কার শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু কাজ শুরু করা হয়েছে আরও ১৫ দিন পর। মাঝখানে কয়েক দিন কাজ বন্ধ রাখা হয়। বর্তমানে মাত্র ২৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এ অবস্থায় মহাসড়কটির সংস্কারের কাজ চলছে অত্যন্ত ঢিমেতালে। ভুক্তভোগীদের আশঙ্কা, এভাবে কাজ চলতে থাকলে আগামী বর্ষা মৌসুমে মহাসড়কটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্র জানায়, গত বছরের ২৭ জানুয়ারি ১৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে মহাসড়কটির যশোর শহরের চাঁচড়া চেকপোস্ট থেকে অভয়নগর উপজেলার রাজঘাট পর্যন্ত ৩৩ দশমিক ৬০ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। খুলনার যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্য বেসিক ইউআইএল-জেভি কাজটি পায়। কিন্তু দরপত্র-প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ ওঠায় ওই প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। তদন্তে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত না হওয়ায় গত ২০ ডিসেম্বর ওই যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
গত বুধবার দুপুরে মহাসড়কের প্রেমবাগ অংশে গিয়ে দেখা যায়, একটি খননযন্ত্র মহাসড়কটি থেকে পুরোনো খোয়া ও পিচ তুলছে। পাশে পড়ে আছে আরেকটি নষ্ট যন্ত্র। কয়েকজন শ্রমিক খোয়া ও বালু ফেলছেন। ইকবাল হোসেন নামের এক শ্রমিক সরদার তা তদারকি করছেন। তিনি জানান, এখানে ২৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। ১২ দিনে এক কিলোমিটারের মতো পিচ তোলা ও খোয়া দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। এখানকার ভাঙা রাস্তার কাজ আপাতত শেষ। এরপর রূপদিয়া অংশে কাজ শুরু করা হবে।
ব্যাংক কর্মকর্তা জি এম কামরুজ্জামান জানান, যশোর থেকে নওয়াপাড়া আসতে আগে এক ঘণ্টা লাগত। এখন প্রায় দুই ঘণ্টা লাগে। ঝাঁকুনিতে শরীরে ব্যথা হয়ে যায়। ঠিকাদার এনামুল হক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনেছি জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। আমাদের ওপর খুব চাপ রয়েছে দ্রুত কাজ শেষ করার। ওই সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করতে আমরা চেষ্টা করছি। আশা করছি তা সম্ভব হবে।’ সওজ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হায়দার মুঠেফোনে বলেন, ‘আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং কাজটি অতিদ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারের ওপর প্রচণ্ড চাপ অব্যাহত রেখেছি।’

No comments

Powered by Blogger.