পুলিশ বাহিনীতে লোকবল-সংকটের অজুহাত কত দিন?-রাজধানীতে ছিনতাই বৃদ্ধি

রাজধানীতে ছিনতাই যে বেড়ে গেছে, তা পুলিশই স্বীকার করেছে। তাদের মতে, এর কারণ টহল কমে যাওয়া। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া অব্যাহত প্রক্রিয়া। অপরাধীদের বিরুদ্ধে সব সময় পুলিশ সদা সতর্ক থাকবে, এটাই প্রত্যাশিত। টহল কেন কমেছে—এর জবাব হচ্ছে, লোকবল-সংকট। কিন্তু সেই সমস্যার সমাধান করার দায়িত্ব সরকারেরই।


সেপ্টেম্বর মাসের ১ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে ২৭৩টি। মাত্র ১০ দিনে এতগুলো ছিনতাইয়ের ঘটনা কোনোভাবেই স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে না। ঢাকা মহানগর পুলিশের যা জনবল, তার প্রায় অর্ধেকই ব্যস্ত থাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে। বাকি অর্ধেক জনবল দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নিয়মিত কার্যক্রম সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। ঢাকা মহানগরের মতো এত জনবহুল শহরের জন্য পুলিশ বাহিনীর এই সদস্যসংখ্যা যে যথেষ্ট নয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু যে জনবল রয়েছে, তার কি যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে? এখানে যেমন পুলিশ বাহিনীর দক্ষতার প্রশ্ন রয়েছে, তেমনি রয়েছে পুলিশ প্রশাসনের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বিষয়টি। রয়েছে পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ। এ বিষয়গুলো পুলিশ প্রশাসন কীভাবে দেখছে?
প্রথম আলোয় গত শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে যেসব এলাকায় ছিনতাই বেশি হয়, তার একটি তালিকাও প্রকাশিত হয়েছে। ছিনতাইপ্রবণ এলাকাগুলো পুলিশের জানার বাইরে নেই। লোকবল-সংকটের বিষয়টি মেনে নিয়েও আমরা বলতে চাই, পুলিশ প্রশাসনের প্রশাসনিক দক্ষতা উন্নয়ন, লোকবলের যথাযথ ও কার্যকর ব্যবহার এবং অপরাধ দমনে বিভিন্ন উদ্ভাবনী পদ্ধতি অবলম্বন করে পরিস্থিতির নিশ্চিতভাবেই দৃশ্যমান উন্নতি করা সম্ভব। আমরা আশা করব, শুধু লোকবলের দোহাই না দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পুলিশ বিভাগ ও প্রশাসন যথাযথ গতিশীলতার পরিচয় দেবে। একই সঙ্গে সরকারের নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, ঢাকার মতো একটি জনবহুল শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে মহানগর পুলিশের জনবল বাড়ানো, আধুনিক প্রযুক্তিতে সক্ষম করে তোলার বিকল্প নেই।

No comments

Powered by Blogger.