গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সহায়তা দেওয়ার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধেও সর্বদা সোচ্চার থাকতে তাদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার নগরের মিরপুর ক্যান্টনমেন্টে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) ২০১১-২০১২ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনী হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের মূর্ত প্রতীক। প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার সুমহান দায়িত্ব আমাদের সেনাবাহিনীর ওপর ন্যস্ত।’ তিনি বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও তাঁর সরকার সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন এবং বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে সংগতি রেখে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নে নিরলসভাবে কাজ করছে।
আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় তাঁর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বশান্তি রক্ষা এবং সব ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত সুস্পষ্ট—এই আদর্শ সামনে রেখে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে এগিয়ে যেতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পদ সীমিত। সীমিত এই সম্পদ দিয়েই আমরা একটি যুগোপযোগী দক্ষ ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে চাই।’ এই লক্ষ্য অর্জনে তিনি উন্নত প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের ওপর আরও বেশি গুরুত্বারোপ করেন।
নতুন গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান একটি সুশৃঙ্খল ও পেশাদার সেনাবাহিনী গড়ে তোলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, ৩৪টি বন্ধুপ্রতিম দেশের ৭২০ জন কর্মকর্তাও এই কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করেছেন। তাঁরা এখন নিজ নিজ দেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ইতিহাসে বিমানবাহিনী থেকে সদ্য সমাপ্ত এই কোর্সে একজন নারী কর্মকর্তার প্রথম গ্র্যাজুয়েশন অর্জনে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, তাঁর সরকার সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজের অবকাঠামোগত সুবিধা সম্প্রসারণে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। এর আওতায় একটি বহুতল একাডেমিক ও আবাসিক ভবন প্রকল্পের নির্মাণকাজ চলছে।
জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, অন্যান্য মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনীতিক এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. শামীম চৌধুরী স্বাগত বক্তৃতা করেন।
এ বছর সেনাবাহিনীর ৯৬ জন, নৌবাহিনীর ১৬ জন, বিমানবাহিনীর ৪৭ জন এবং বিভিন্ন দেশ থেকে ৪৭ জনসহ মোট ১৮১ জন কর্মকর্তা এই কলেজ থেকে সাফল্যের সঙ্গে গ্র্যাজুয়েশন অর্জন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও মিলিটারি একাডেমী ও স্টাফ কলেজের ১৩তম যৌথ সভার উদ্বোধন করেন। সভায় তিনি এই দুই প্রতিষ্ঠানের সম্পদ, প্রশিক্ষণ বিষয়াদি ও বাজেট বরাদ্দের যথাযথ ও সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। বাসস।

No comments

Powered by Blogger.