পুরান ঢাকায় তীব্র পানি সংকট-সরবরাহ নিশ্চিত করুন

শীত পেরিয়ে গ্রীষ্মের তাপ এখনো শুরু হয়নি। কিন্তু আরো তীব্র হয়েছে পুরান ঢাকার পানি সংকট। এর সঙ্গে রয়েছে আরেক বিড়ম্বনা। তা হলো, পানি যখন অল্পবিস্তর পাওয়া যায়, তাতে থাকে দুর্গন্ধ, ময়লা ও ফেনা_যাকে বিশুদ্ধ পানি তো দূরের কথা, পানি না বলাই ভালো।


পত্রিকার রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, পুরান ঢাকার কোথাও কোথাও এখন এক বালতি পানি জোগাড় করাও অসম্ভব হয়ে পড়ছে। কোনো কোনো এলাকায় টানা ১০ দিন ধরে পানি সরবরাহ ভয়ানকভাবে বিঘি্নত হচ্ছে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ না পাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমে পেঁৗছে গেছে। পানির এ সংকট এ বছরই নতুন নয়, বহুকাল ধরেই আছে। কিন্তু কিছুতেই যেন এর কোনো সুরাহা হচ্ছে না। ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত পানির সরবরাহ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলে থাকেন, পাইপে ফাটল ও ছিদ্র থাকার কারণে এ ধরনের ময়লা পানি কোথাও কোথাও মানুষ পেয়ে থাকেন। কিন্তু দীর্ঘকাল ধরেই অভিযোগ আছে, শতভাগ বিশুদ্ধ না করে বুড়িগঙ্গার রাসায়নিক পদার্থসর্বস্ব পানি সরবরাহ করে থাকে ওয়াসা। অথচ আমরা জানি, বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার পানি এতটাই দূষিত যে উচ্চমাত্রার বিশুদ্ধকরণ কেমিক্যাল দিয়েও তা পরিশোধন করা সম্ভব হচ্ছে না।
রাজধানী ও আশপাশের বিশালসংখ্যক মানুষের দুর্ভোগ, দুর্গতি লাঘব করতে সরকারের যথাসময়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। বাস্তবতা হলো, কর্তৃপক্ষের এখন সম্পূর্ণ নতুন পানির উৎস বের করতে হবে। বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার পানি সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত করে সরবরাহ করা এখন দুরূহ কাজ এবং এই উৎস অবশ্যই হতে হবে সারফেস বা উপরিস্তর থেকে। কারণ ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে বিপজ্জনকভাবে। সব থেকে বড় কথা, নগরবাসীর পানি সংকট কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যে করেই হোক, সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নগরবাসীর পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। সামনে গ্রীষ্মকালে এ সংকট যে আরো তীব্র হয়ে উঠবে_এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়।

No comments

Powered by Blogger.