প্রচুর টাকার দরকার, কারোর হাতে সময় নেই by ড. আর এম. দেবনাথ

 আমার ধারণা বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমানের মন খুব খারাপ। মন খারাপের কারণ তাঁর ব্যক্তিগত নয়। কারণটি কৃষিঋণ সম্পর্কিত একটি খবর যা কিছু দিন আগে একটি খবরের কাগজে প্রকাশিত হয়েছে।
খবরটির শিরোনাম হচ্ছে : 'কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের পর্যবেণ, দালাল ধরে ঘুষ না দিলে কৃষিঋণ পাওয়া যায় না।' খবরের ভেতরে বলা হয়েছে মোট ঋণের ১০ শতাংশ দালালকে দিতে হয়। এই টাকা ভাগাভাগি হয়। টাকা দিলেই ঋণ পাওয়া যায়, না দিলে নয়। রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে, অনেক কৃষক জানেই না তারা কত টাকা ঋণ পেয়েছে। হাতে যা পায় সেটাই তার টাকা। ব্যাংক তার খাতায় কত টাকা ঋণ হিসেবে লিখে রেখেছে সে সম্বন্ধে কৃষক কিছুই জানে না। এ সমস্যা ছাড়াও কৃষিঋণ বিতরণে আর কি কি সমস্যা হচ্ছে তার একটা বর্ণনাও রিপোর্টটিতে আছে। রিপোর্টটি কিসের ভিত্তিতে করা হয়েছে? রিপোর্টটি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি পর্যবেণ দলের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে। এই পর্যবেণ দলে ছিলেন ৭৮ জন সহকারী পরিচালক। ৩৫টি গ্রম্নপে বিভক্ত হয়ে তাঁরা ৩৫টি জেলায় এই পর্যবেণ কাজ চালান। এই পর্যবেণ দল তাদের প্রতিবেদন তৈরি করার পূর্বে দু'সপ্তাহ মাঠ পর্যায়ে খবরাখবর নেয়। তার ভিত্তিতেই তৈরি হয় প্রতিবেদনটি। উলেস্নখ্য, এই কর্মসূচীর নাম ছিল 'কৃষকের জন্য যাত্রা।' 'কৃষকের জন্য যাত্রা' করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৭৮ জন সহকারী পরিচালক যে মূল্যবান তথ্য মাঠ পর্যায় থেকে সংগ্রহ করে এনেছেন তার মধ্যে নতুনত্ব কতটুকু আছে? ঘুষ-দুনর্ীতির খবর এই কি প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছে?
আমি চোখ বুজে বলতে পারি, যে রিপোর্ট ৭৮ জন সহকারী পরিচালক অত্যনত্ম গোপনীয় মোড়কে গবর্নরের কাছে জমা দিয়েছেন তাতে নতুনত্ব কিছু নেই। কৃষকদের নাম হয়ত নতুন, তাদের ঠিকানা হয়ত নতুন, ব্যাংক অফিসারদের নাম হয়ত নতুন; কিন্তু 'কাম' বহু পুরনো। কৃষিঋণ নিয়ে এ ঘটনা ঘটছে বহুকাল পূর্ব থেকেই। সাধারণ কর্মসূচীতে তা যেমন ঘটে, বিশেষ কর্মসূচীতেও তা ঘটে, তবে ঘটে বিশেষভাবে। এবারের ঘটনাটিও ঘটছে বিশেষভাবে। কারণ এবারের কর্মসূচীটি ছিল বেশ বড়। কত বড়? অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তাঁর ২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেটে কৃষিঋণের বাজেট ধরেন ১০,০০০ কোটি টাকা। সর্বকালের সর্বোচ্চ বাজেটকে ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান এগিয়ে যান। তিনি এ কর্মসূচীকে সফল করার জন্য সমসত্ম ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কৃষক যাতে ঋণ পায়, বর্গাচাষী যাতে ঋণ পায়, প্রকৃত কৃষক যাতে ঋণ পায় তার জন্য তিনি আটঘাট বাঁধেন। কর্মসূচীটি যাতে দুনর্ীতির কবলে না পড়ে তার অগ্রিম চিনত্মাও তিনি করে রাখেন। সর্বোচ্চ আনত্মরিকতাসহ তিনি এ কাজ করেন। কিনত্মু কাগজে যে রিপোর্টটি পড়লাম তা যদি সত্য হয় তাহলে বলতে হয়, গবর্নরের হতাশ হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। কারণ আছে তাঁর মন খারাপ হওয়ার। দেখা যাচ্ছে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও গ্রামীণ টাউট, দালাল, মধ্যস্বত্বভোগীরা এক শ্রেণীর ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বিশেষ কৃষিঋণ কর্মসূচীটিকে খাবলা খাবলা করে ছাড়ছে। পত্রিকার (১৬.২.১০) রিপোর্টে বলা হয়েছে ১০ শতাংশ ঘুষের কথা। বাসত্মবে আরও বেশি। এটা কোনভাবেই ২০ শতাংশের কম অতীতেও হয়নি, এবারও না। এই হিসেবে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে দশ হাজার কোটি টাকা থেকে দুই হাজার কোটি টাকা স্রেফ মেরে দেয়া হয়েছে। এ টাকা কি সৎ পথে উপার্জিত টাকা? এই ঘুষ-দুনর্ীতির টাকাই হচ্ছে 'কালো টাকা' যাকে ইদানীংকালে কিছু লোক নানা নামে ডেকে এর কালিমা লাঘব করতে চায়। সে যাই হোক, দেখা যাচ্ছে শুধু বার্ষিক বিশেষ কৃষিঋণ কর্মসূচী থেকেই গ্রামাঞ্চলে তৈরি হচ্ছে দুই হাজার কোটি টাকার কালো অর্থনীতি এবং তা হচ্ছে সরকারী কার্যক্রম থেকে। তাহলে অন্যান্য েেত্র কি হচ্ছে? তাহলে অন্যান্য সরকারী বিশেষ কর্মসূচী কি কি আছে যেখানে তৈরি হচ্ছে কালো টাকা?
দেখা যাচ্ছে সরকারী সমসত্ম কার্যক্রম, বিশেষ কার্যক্রম, প্রকিউরমেন্ট, নিয়োগ, সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম, ভর্তুকি এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এমন একটা বলয় যেখানে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে কালো টাকা। এ জায়গাগুলো কি যেখানে কালো টাকা তৈরি হচ্ছে? ২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী দারিদ্র্য নিরসন ও কর্মসংস্থানের জন্য ডজন ডজন কর্মসূচীর কথা ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে আছে বয়স্ক ভাতা, দুস্থ মহিলা ভাতা, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, দরিদ্র মা'র মাতৃত্বকালীন ভাতা, শহুরে নিম্ন আয়ের কর্মজীবী মহিলাদের মাতৃত্বকালীন ভাতা এবং এতিম শিশুর খোরাকি ভাতা নামীয় সাতটি ভাতা। এছাড়া রয়েছে নানা রকমের তহবিল। রয়েছে মহিলাদের ও মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মকর্মসংস্থান তহবিল, এ্যাসিডদগ্ধ মহিলা ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসন তহবিল, পোল্ট্রি খামারিদের সহায়তা তহবিল। বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে 'ঘরে ফেরা কর্মসূচী', অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী, একটি বাড়ি, একটি খামার ইত্যাদি। এ ছাড়া সরকার বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করছে টিআর, কাজের বিনিময়ে খাদ্য ইত্যাদি কর্মসূচীতে। রয়েছে নানা ধরনের ভতর্ুকির টাকা। কৃষকদের জন্য আছে সারের ভর্তুকি, বিদু্যতের ভর্তুকি ইত্যাদি। ভর্তুকি আছে শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের জন্য। সর্বোপরি রয়েছে সরকারের বড় খরচের খাত অর্থাৎ উন্নয়ন বাজেট। একমাত্র উন্নয়ন বাজেটেই সরকারের বরাদ্দ এ বছরে ৩০,৫০০ কোটি টাকা। এ সমসত্ম খাত, বরাদ্দ এবং নানা ধরনের কর্মসূচী, ভর্তুকির কথা উলেস্নখ করলাম কেন? করেছি সরকারের ব্যয় সম্বন্ধে একটা ধারণা দেয়ার জন্য। সরকার প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে নানা খাতে। প্রতিবছরই এসব বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ছে। বরাদ্দ বাড়বে এটাই কাম্য। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে সরকার এসব টাকা ব্যয় করছে যে উদ্দেশ্যে সেই উদ্দেশ্য পূরিত হচ্ছে কম। লুট হচ্ছে বেশি। যদি তা না হতো তাহলে এতদিনে প্রচুর সংখ্যক লোক উপকৃত হতে পারত। কিন্তু তা না হয়ে দেখা যাচ্ছে যেখানেই সরকারের খরচ বাড়ছে সেখানেই তৈরি হচ্ছে কালো টাকা। শুধু ব্যয়ের েেত্রই নয় এই কালো টাকার জন্ম হচ্ছে নিয়োগ েেত্রও। কীভাবে?
দৈনিক জনকণ্ঠের খবর : "সরকারী চাকরি বাজারে 'ডাক' উঠেছে তবে আমলা চাতুর্যে পরাসত্ম মন্ত্রীরা।" ফেব্রম্নয়ারি ২২ তারিখের খবর। খবরের ভেতরে প্রতিবেদক মামুন-অর-রশিদ লিখেছেন, বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলেও প্রাথমিক শিক নিয়োগ থেকে শুরম্ন করে স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ, ভূমি মন্ত্রণালয়ে 'এমএলএসএস' নিয়োগ থেকে চিকিৎসক নিয়োগ কিংবা থানা পলস্নী উন্নয়ন কর্মকর্তা অথবা অডিটর এবং প্রতিরা অডিটর নিয়োগ_ সর্বত্রই পূর্ববতর্ী জোট সরকারের মতোই চলছে টাকার খেলা। যে পদে আয়ের সুযোগ বেশি সেই পদে নিয়োগে ডাকের অর্থের পরিমাণ বেশি। ত্রেভেদে পদের গুরম্নত্ব অনুযায়ী দর কষাকষির অর্থ চার/পাঁচ লাখ থেকে দশ/পনেরো লাখ পর্যনত্ম উঠেছে। সরকারের মন্ত্রী ও আমলাদের মধ্যে লেনদেনের সুরাহা করতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। জনকণ্ঠের এই রিপোর্টটি কি কোন অভিনব রিপোর্ট? কোনভাবেই এই রিপোর্টটি নতুন কোন রিপোর্ট নয়। প্রতিদিন বিভিন্ন কাগজে নিয়োগ বাণিজ্যের ওপর খবর ছাপা হচ্ছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ঘটনাটি তো সদ্য ঘটে গেল। এছাড়া দেখা যাচ্ছে যেখানেই নিয়োগের কথা উঠছে, সেখানেই বাণিজ্যের কথা হচ্ছে। স্কুলে ভর্তি, কলেজে ভর্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি_ এসব েেত্রও চলছে টাকার খেলা। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে এটা সরকারের খরচের ত্রেই হোক, আর উন্নয়নের টাকাই হোক, হোক কৃষিঋণের টাকা সর্বত্রই চলছে হরিলুট। এসব দেখে কি মনে হয়?
দেশে ঘটমান হরিলুট দেখে মনে হচ্ছে প্রভাবশালী লোকজন, সরকারী কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, ব্যাংক কর্মকর্তা, ছাত্রনেতা থেকে শুরম্ন করে যাদেরই কিছু মতা আছে তাঁরাই ছুটেছেন টাকার পেছনে। যাঁদের মতা নেই, প্রভাব-প্রতিপত্তি নেই তাঁরা ছুটেছেন শেয়ারবাজারে। তাঁদের উদ্দেশ্যও টাকা রোজগার করা। দুটো ভিন্ন ভিন্ন পথ হলেও একটি জিনিস লণীয়। সবাই চাইছে দ্রম্নত টাকা বানাতে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে কারও হাতে সময় নেই। যত দ্রম্নত টাকা বানানো যায়! সবারই কাছে এখন মনে হয় টাকাই সবকিছু, 'তঙ্কা হি কেবলম্।' এ পরিস্থিতি কিন্তু আগে ছিল না। এর সূত্রপাত করেন '৭৫ পরবতর্ী সামরিক শাসকরা। অবৈধ সামরিক শাসনের আমলে দেশে অবৈধভাবে টাকা বানানোর খেলা শুরম্ন হয়। এই প্রক্রিয়া চূড়ানত্ম রূপ পায় বিগত জোট সরকারের আমলে। টাকা বানানো কাকে বলে তারা তা দেশবাসীকে দেখিয়ে দেয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দিনের পর দিন কে কত টাকার মালিক তার খবর ছাপা হয়েছে। দেশের মানুষ অবাক হয়ে সে সব খবর পড়েছে দিনের পর দিন। জোট সরকারের টাকা বানানোর প্রক্রিয়া অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় থেমে যায়নি। সবারই ধারণা হচ্ছে টাকা বানানো দরকার, ভোগ করা দরকার। বিশেষ করে সবার মনে ধারণা জন্মেছে যে দুনর্ীতি করেই হোক, ঘুষ খেয়েই হোক টাকা বানালে তার বিচার নেই। অতএব টাকা বানাও। যত দ্রম্নত তা সম্ভব তত দ্রম্নত তা করা দরকার। কারও হাতে এখন সময় নেই। জীবন-জীবিকা হয়ে পড়ছে ভীষণ কঠিন। সবকিছু দুমর্ূল্য। সংসার খরচ উচ্চ। শিার খরচ মাত্রার বাইরে, চিকিৎসার খরচ মাত্রার বাইরে। জমির মূল্য, ফ্যাটের মূল্য মাত্রার বাইরে। কোন কিছুই এখন মধ্যবিত্তের আওতার মধ্যে নেই। এমতাবস্থায় সবারই মনে ধারণা হচ্ছে টাকা ছাড়া বাঁচার আর কোন ব্যবস্থা নেই। ফ্যাট হবে না, ছেলেমেয়ের লেখাপড়া হবে না, নিজের চিকিৎসা হবে না। চলবে না সংসার। অতএব? অতএব টাকা দরকার। বিচারহীন সমাজে এটাই হয়। কিন্তু প্রশ্ন_ এর পরিণতি কি? অতিদ্রম্নত টাকা বানানোর এই প্রতিযোগিতায় শেষ পর্যনত্ম আমরা কোন গনত্মব্যে পেঁৗছব? এতে তো কিছু লোকের দিন বদল হবে সত্য, কিন্তু কোটি কোটি লোকের কি হবে? সবচেয়ে দুশ্চিনত্মার বিষয় আরেকটি। সেটি হচ্ছে লুটে যতটুকু না রাজনীতিবিদরা জড়িত তার চেয়ে অনেক বেশি জড়িত সাধারণ শ্রেণীর লোক। এতে গ্রাম-শহর কোন পার্থক্য নেই। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তিতাসের মিটার রিডার, বিদু্যতের মিটার রিডার যেমন এই লুটে অংশীদার তেমনি অংশীদার সচিব পর্যায়ের লোক। এ এক সর্বগ্রাসী অবস্থা। সমসত্ম সমাজকে ধ্বংস করার জন্য এ অবস্থা যথেষ্ট। বলা বাহুল্য এটি পুঁজিবাদ নয়। পুঁজিবাদ অবাধ লুণ্ঠন এখন সমর্থন করে না। পুঁজিবাদ এখন অতি লোভ পছন্দ করে না। পুঁজিবাদ এখন আইনের অধীনে কাজ করে। কিন্তু অতি লোভ এবং আইন লঙ্ঘন করার প্রবণতায় পেয়ে বসেছে আমাদের সমাজকে। অতি লোভ অথচ সময় কম। এ এক আত্মবিধ্বংসী অবস্থা। জানি না বাঙালী এ েেত্র সম্বিত ফিরে পাবে কি না! পেলে ভাল, না পেলে তার জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া গত্যনত্মর নেই।

লেখক : অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার
ঊ-সধরষ : ৎধহধফবনহধঃয@সংহ.পড়স
   
প্রচুর টাকার দরকার, কারোর হাতে সময় নেই
প্রসঙ্গ ইসলাম
স্মৃতিসৌধগুলো সুরক্ষিত নয়
দ্রব্যমূল্য মাথাব্যথার কারণ ...
আহরণ
ফিরে দেখা
সাবধানবাণী: বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এই সাইটের কোন উপাদান ব্যবহার করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ এবং

No comments

Powered by Blogger.