শিম্পাঞ্জীর সহমর্মিতা by শরীফুল ইসলাম

স্বেচ্ছায় অন্যের সঙ্গে কিছু ভাগাভাগি করার অভ্যাস মানুষের একচেটিয়া নয়। শিম্পাঞ্জীর শাখা প্রজাতির বনোবোর মধ্যেও রয়েছে মানুষের মতো এই অভ্যাস। 'কারেন্ট বায়োলজি' পত্রিকায় সম্প্রতি এ সংক্রানত্ম গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।
এই গবেষণা নিবন্ধের মূল লেখক হচ্ছেন নর্থ ক্যারোলিনার ডিউক ইউনিভার্সিটির ব্রায়ান হেয়ার। তিনি বলেন,্ এতদিন ধারণা করা হতো একমাত্র মানুষই সহমর্মিতার নিদর্শন হিসেবে অন্যকে তার খাদ্যের ভাগ দেয়। অবশ্য জীবিত প্রাণীদের মধ্যে মানুষের ঘনিষ্ঠতম স্বজন বনোবোদের আচরণের ওপর এর আগে কখনও গবেষণা করা হয়নি।
গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের অভয়ারণ্য 'লোলা ইয়া বানাবো'-তে অনাথ বানাবোদের প্রচার গবেষণা করেন ড. পেয়ার ও সুজি কেউইটুন্ডা। তারা পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কহীন ৰুধার্ত কয়েক জোড়া বানাবোকে কাছাকাছি রেখে তাদের খাদ্য গ্রহণ সম্পর্কে গবেষণা করেন। তারা পরীৰা চালিয়ে দেখেন বনোবোরা নিজেরা তাদেরকে দেয়া খাবার একা একা খেয়ে ফেলে যা অন্যকে তার ভাগ দেয়। বিষয়টি পরীৰা করার সময় লৰ্য করা হয় বনোবো তাকে দেয়া খাবার সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলে না পাশর্্ববতর্ী খালি ঘরে থাকা আরেক স্ব-গোত্রীয়কে তার ভাগ দেয়ার জন্য দরজা খোলে। গবেষণার সঙ্গে সংশিস্নষ্ট প্রাণীরা সহজেই ঐ কৰসমূহ দেখতে পেত। তাই তারা জানত কোন্ কৰটি খালি এবং কোন্্ কৰটিতে অপর্ব বনোবোরা রয়েছে।
ড. হেয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, আমরা দেখতে পেলাম পরীৰাধীন বনোবোরো স্বেচ্ছায় ঐ দরজা খুলছে যাতে অন্যরা তাদের পরম কাৰিত এই খাদ্যে ভাগ বসাতে পারে। অথচ তারা সহজেই তা একাকী খেয়ে ফেলতে পারত। আজকে নিজের খাবারের ভাগ দেয়ার ৰেত্রে কোন রকম আগ্রহী আচরণ, হতাশা বা অস্বাভাবিকতার বিন্দুমাত্র কোন লৰণ তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। গবেষকগণ উলেস্নখ করেন, এমনও হতে পারে যে, বনোবেরো ভবিষ্যতে আনুকূল্য লাভের আশায় সম্ভবত অন্যদেরকে তাদের খাবারের ভাগ দিয়েছে। বনোবো এবং মানুষ কেন অন্যকে নিজেদের খাবারের ভাগ দেয় সে প্রশ্নের জবাব পেতে বিজ্ঞানীদেরকে আরও গবেষণা চালাতে হবে। ড. হেয়ার বলেন, এ বিষয়ে কোন মনসত্মাসত্মি্বক প্রক্রিয়া কাজ করেছে কিনা তাও আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।
তবে হঁ্যা, হোমোস্যাপিয়েন্স বা সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে মানুষের মধ্যে যে গুণ থাকা স্বাভাবিক তা যদি কোন অধসত্মন প্রাণীর মধ্যে পাওয়া যায় তা বিজ্ঞানীদের না ভাবিয়ে পারে না।

No comments

Powered by Blogger.