পাটুরিয়া গোয়ালন্দ পয়েন্টে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু হবে

পাটুরিয়া- গোয়ালন্দ পয়েন্টে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রানত্ম মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বেসরকারী অর্থায়নে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাসত্মবায়নের নীতিগত সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়।
বৈঠকে রাজধানীর উড়াল সড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) নির্মাণে পরামর্শক নিয়োগ এবং জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। এ ছাড়া খসড়া শিল্পনীতির কিছু অংশ সংশোধনের জন্য বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যানকে প্রধান করে তিন সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৈঠকের পর আবুল মাল আব্দুল মুহিত জানান, নীতিগতভাবে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়েছে খুব শীঘ্রই সরকার এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেবে। তিনি বলেন, কি প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাসত্মবায়ন করা হবে এর দরপত্র প্রক্রিয়া কি হবে সে সব বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা হবে।
সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-আপারেশন এজেন্সি (জাইকা) পরিচালিত সমীৰায় পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য চারটি স্থান নির্বাচন করা হয়। এর মধ্যে মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে প্রথম পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। দেশের দৰিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থাসহ আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য সরকার দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাসত্মবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
জাইকার জরিপে দেখা যায় ৬ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল পথসহ মোট ব্যয় হবে ১৩ হাজার ১২১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ২য় পদ্মা সেতু নির্মিত হলে দৰিণাঞ্চলের মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর, সাতৰীরা, ঝিনাইদাহ, মাগুরা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, জেলার অংশ বিশেষের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ পূর্বাঞ্চলের দূরত্ব প্রথম পদ্মা সেতুর তুলনায় কম হবে।
পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু প্রকল্পর প্রসত্মাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন করেছেন। দ্বিতীয় পদ্মা সেতু প্রকল্পটি বেসরকারী অবকাঠামো প্রকল্প হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় বিপিএসআইজি-এর বাধ্যবাধকতা হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় সরাসরি বেসরকারী বিনিয়োগকারী নিয়োগের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হবে।
ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য প্রাকমূল্যায়ন দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ৪ তারিখে দরপত্র বাক্স খোলা হবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে যে কোম্পানিকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে একই কোম্পানি এ প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কাজ করবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন করে পরামর্শক নিয়োগ দেয়া একটি সময়সাপেৰ বিষয়। তাছাড়া নতুন পরামর্শক কোম্পানির কাজ করতে সময় লাগবে ৬ মাস, অন্যদিকে পদ্মা সেতুর পরামর্শকের সময় লাগবে ৩ মাস।
বৈঠকে শিল্পনীতির খসড়া নিয়ে আলোচনার পর কিছু সংশোধনের প্রসত্মাব দেয়া হয়েছে। সংশোধন করার জন্য বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান এস এ সামাদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সংশোধিত শিল্পনীতি বৈঠকে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। এ নিয়ে তিন দফা উত্থাপনের পরেও চূড়ানত্ম করা গেল না শিল্পনীতি।
বৈঠক সূত্র জানায়, প্রসত্মাবিত শিল্পনীতিকে দুই ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা হয়। শিল্পনীতির মৌলিক দিকগুলোর ওপর সকলে আলোকপাত করেন। আনত্মর্জাতিক বিধান, পরিবেশ সম্পৃক্ত দায়বদ্ধতা, এসএমই খাতকে অধিক গুরম্নত্ব দেয়ার সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়।
বৈঠকে কোকোকোলা কোম্পানির কনসেনট্রেট প্রদান না করায় তাবানী বেভারেজ কোম্পানির কোকোকোলা পানীয় উৎপাদন বন্ধ হওয়ার প্রেৰিতে টিসিসিসি হতে ৰতিপূরণ আদায় নিয়ে আলোচনা হয়। এতে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানকে প্রধান করে ৩ সদস্যর একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি কোকোকোলা কোম্পানি থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের পাওনা আদায় এবং নতুন বিনিয়োগে সরকারের কি পরিমাণ শেয়ার থাকবে তা নির্ধারণ করবে।
এ ছাড়া বেসরকারী উদ্যোগে ঢাকা-জয়দেবপুর এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের প্রসত্মাব অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্প বাসত্মবায়ন করতে ৮০০ কোটি টাকা খরচ হবে।
বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী পরিকল্পনা মন্ত্রী এয়ারভাইস মার্শাল (অব) একে খন্দকার, শ্রম এবং কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, শিল্পমন্ত্রী দীলিপ বড়ুয়া, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনি এবং যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.