সঠিক কর্মী নির্বাচন

একটি মিডিয়া হাউজের অ্যাসোসিয়েট এডিটর পমি। কাজের হাজারো দায়িত্বের মধ্যে আরও একটি গুরুদায়িত্ব কর্মী নির্বাচন। তবে এই কর্মী নির্বাচন নিয়ে প্রায়ই মুশকিলে পড়তে হয় পমিকে।
ইন্টারভিউ বোর্ডে আপাততভাবে যে ক্যান্ডিডেটকে একেবারে সঠিক বলে মনে হয় প্রস্তাবিত জব প্রোফাইলের জন্য, অনেক সময়েই পরে কাজের সময়ে বোঝা যায় যে, সেই পদের জন্য হয়ত বা সেই কর্মী একেবারেই উপযুক্ত নন। কিন্তু নিজে বস হয়েও পমি কিছুতেই কারও সঙ্গেই কড়া ব্যবহার করতে পারে না। সব সময় মনে হয় কোথাও যেন এর জন্য কিছুটা হলেও দায়ী সে নিজে, কারণ ইন্টারভিউ বোর্ডে সেভ একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পমির মতোই এমন সমস্যার সম্মুখীন আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়ে থাকেন যখন ইন্টারভিউ বোর্ডে বাছা আপাততভাবে উপযুক্ত প্রার্থী পরে গিয়ে নির্দিষ্ট কর্মক্ষেত্রে নিজের ট্যালেন্ট সঠিকভাবে প্রমাণ করতে পারেন না।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইন্টারভিউ বোর্ডে ঠিক কোন কোন দিকে নজর রাখলে এমন পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব অথবা একান্তই যদি সেই সময়ে বুঝতে না পারেন পরে কিভাবে সামলাবেন এমন পরিস্থিতি তা নিয়েই রইল
* ইন্টারভিউ নেয়ার সময় দেখে নিন যার ইন্টারভিউ নিচ্ছেন তিনি লেখাতে কতটা দক্ষ। শুধু এ্যাকাডেমিক রেজাল্টের ওপরে ভরসা না করে একটা ছোটখাটো রিটন এগজামিনেশন নিতে পারলে ভাল। কারণ যে কোন চাকরিতেই ভাল লিখতে পারা খুবই প্রয়োজন।
* লেখার সঙ্গে সঙ্গে অনেক সময়েই দেখা যায় ভাষার অসুবিধের জন্যও অনেকেরই ওয়ার্ক প্রোডাকিটভিটি নষ্ট হয়ে যায়। তাই যে সংস্থার যে বিভাগের জন্য কর্মী নির্বাচন করবেন, সেই বিভাগের প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মীর নির্দিষ্ট ভাষার ওপর দখল কতটা আছে সেই বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নেবেন। সেরকম প্রয়োজন পড়লে গ্রুপ ডিসকাশনের মতো একটি ইন্টারভিউয়ের পর্বও রাখতে পারেন। জিডি অথবা গ্রুপ ডিশকাশনের মাধ্যমে খুব সহজেই আন্দাজ করা যায় সে নির্দিষ্ট প্রার্থীর কথা বলার দক্ষতা কতটা আছে।
* যদি কোন রকমের সেলস টিমের জন্য প্রার্থী বাছাই করতে চান, সে ক্ষেত্রে দেখে নিন যে, সেই নির্দিষ্ট প্রার্থীর মধ্যে কনভিন্স করার ক্ষমতা কতটা আছে। কারণ সেলসে সব থেকে বেশি যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো কনভিন্সিং পাওয়ার। তিনি যদি ক্লায়েন্ট অথবা কাস্টমারকে সঠিকভাবে কনভিনসই করাতে না পারেন তা হলে অবশ্যই ধরে নিতে হবে যে তিনি সেই বিশেষ কাজের জন্য একেবারেই উপযুক্ত নন। তাই প্রয়োজন পড়লে তাঁকে ২-৩ মাস শুধুমাত্র ট্রেনিং হিসেবেই রাখুন, দেখে নিন তিনি তাঁর কাজ কতটা দক্ষতার সঙ্গে করতে পারছেন। আপনি অথবা ইন্টারভিউ বোর্ডের অন্যরা যদি ২-৩ মাস পরে তাঁর কাজ দেখে কনভিনসড হন, তা হলেই তাঁকে কনফার্ম করুন।
* ফ্রেশার্স ক্যান্ডিডেট বাছাই করার সময়ে কর্মদক্ষতা বিচার করার সুযোগ খুব একটা থাকে না। তবে এই ক্ষেত্রে দেখে নিন, ক্যান্ডিডেটের এ্যাকাডেমিক রেজাল্ট কেমন। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রশ্ন এবং মকসিচুয়েশনের মাধ্যমে বুঝে নেয়ার চেষ্টা করুন যে তার মধ্যে উৎসাহ এবং কাজের প্রতি ঠিক কতটা আগ্রহ আছে। প্রশ্ন করে জেনে নিন যে ভবিষ্যতের কাজের প্রতি তিনি কতটা কমিটেড থাকবেন। এবং প্রয়োজন পড়লে নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে গিয়ে ও কাজ করলে তাঁর কোন রকমের অসুবিধা আছে কিনা।
* এক্সপিরিয়েন্ড কোন ক্যান্ডিডেটকে নির্বাচন করার সময়ে ভালভাবে জেনে নিন তাঁর আগের জব। তার আগের জব প্রোফাইল স্টিক মাথা কেমন ছিল। কী ধরনের কাজে তার দক্ষতা বেশি।
* অনেক সময়েই দেখা যায় বিভিন্ন ওয়ার্ক কালচারের জন্য মাঝে মাঝে কাজে অসুবিধে তৈরি হয়। তাই কোন এক্সপেরিয়েন্ডস ক্যান্ডিডেটকে নির্বাচন করার আগে দেখে নিন। তিনি আগে যেভাবে চাকরি করতেন, সেখানকার ওয়ার্ক কালচার কেমন ছিল। যদি আগের কর্মস্থলের ওয়ার্ক কালচারে বিস্তর ফারাক থাকে। সেখানে যদি প্রফেশনালিজম না থাকে এবং আপনার সহবস্থান যদি একটু বেশিই প্রফেশনাল হয়, তাহলে কাজের সময়ে অবশ্যই নানা রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে বস হিসেবে আপনাকেই তাঁর সঙ্গে ভাল করে কথা বলে বুঝিয়ে দিতে হবে যে আপনার কোম্পানিতে আপনি কি ধরনের ওয়ার্ক অ্যাটিটিউড পছন্দ করেন।
শামিমা রিমা

No comments

Powered by Blogger.