ডিসিসি নির্বাচনে আর বাধা নেই- হাইকোর্ট সীমানা রিট খারিজ করে দিয়েছে

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (ডিসিসি) সীমানা পুনর্নির্ধারণে করা রিট আবেদন খারিজ হওয়ায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আর কোন বাধা রইল না। ফলে প্রস্তুতি অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট রিটটি খারিজ করে দেয়। বিচারপতি এমএইচ শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি বোরহানউদ্দিনের বেঞ্চ রিট খারিজের রায় দেয়। ঢাকার ৯০টি ওয়ার্ডের সীমানা পুনর্নির্ধারণে গত ৭ ফেব্রম্নয়ারি রিট আবেদন করেন পলস্নবীর বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন। রিটের প্রেৰিতে গত ২৩ ফেব্রম্নয়ারি পর্যনত্ম ডিসিসির তফসিল ঘোষণা না করতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। নির্দেশে নির্বাচনের আগে জনসংখ্যা অনুপাতে ওয়ার্ডের সীমানা কেন পুনর্নির্ধারণের আদেশ দেয়া হবে না, তার কারণ জানাতেও বলা হয় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে। রিট খারিজ হয়ে যাওয়ায় নির্বাচন কমিশনের পৰের আইনজীবী শাহাবুদ্দীন বলেন, এর ফলে সিটি কর্পোরেশন নির্র্বাচনের তফসিল ঘোষণাসহ নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরম্ন করতে আর কোন বাধা রইল না। চলতি বছরের মার্চের মধ্যেই পুরনো সীমানায় ডিসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেয়া শুরম্ন করে নির্বাচন কমিশন। সে হিসেবে চলতি ফেব্রম্নয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল। এরই মধ্যে এক ব্যক্তি সীমানা পুনর্নির্ধারণে হাইকোর্টে রিট করলে এবং আদালত ২৩ ফেব্রম্নয়ারি পর্যনত্ম তফসিল ঘোষণা স্থগিত রাখতে নির্দেশ দেয়ায় পুরো বিষয়টি ঝুলে যায়। এর আগে গত বছরের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইসি ডিসিসি নির্বাচন করার ঘোষণা দেয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় জারি করা অধ্যাদেশ দিয়ে নির্বাচন করার জন্য নিয়ম অনুযায়ী সে সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে চিঠিও পাঠায় নির্বাচন কমিশন। তবে পিলখানায় নারকীয় হত্যাকা-ের ঘটনায় নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে অনাগ্রহ দেখায় মন্ত্রণালয়। তাই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও এ রকম নানা আইনী জটিলতায় ডিসিসির নির্বাচন আটকে যায়। তবে জাতীয় সংসদের গত অধিবেশনে সিটি কর্পোরেশন সংক্রানত্ম বিল পাস হয়ে নতুন আইন হলে কমিশন পুরোদমে নির্বাচনী প্রস্তুতি নেয়া শুরম্ন করে। ঘোষণা দেয় মার্চের মধ্যেই নির্বাচন করার।
এদিকে হাইকোর্টের রায়ের পর নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, রিট খারিজের কথা শুনেছি। তবে এখনও রায়ের কপি পাইনি। এ মাসে তফসিল ঘোষণা করা হবে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখন এসএসসি পরীৰা চলছে। পরীৰার মধ্যে নির্বাচন করা যাবে না। এর পরও কমিশন আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধানত্ম নেবে কবে তফসিল ঘোষণা করা যায়। ডিসিসি নির্বাচন এপ্রিল-মে মাস নাগাদ গড়াতে পারে বলে আভাস দেন তিনি। কমিশন জানায়, এবার ডিসিসির ভোটারসংখ্যা ৩৭ লাখ ৫৫ হাজার ৭৪। এবার সর্বোচ্চ ভোটার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এক লাখ ৫ হাজার ৯৬। আর সর্বনিম্ন ভোটার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১১ হাজার ৮৭৫। ভোটার হিসেবে ঢাকায় দুই হাজার ২৭টি ভোটকেন্দ্র তৈরি করা হবে। ২০০২ সালে এ সংখ্যা ছিল এক হাজার ৩৪২। প্রতি ৩৯৫ ভোটারের জন্য একটি বুথ হিসেবে ৯ হাজার ৫০৫ বুথ থাকবে। ২০০২ সালে ছিল ৭ হাজার ৬২৪। এবার মোট ৮৭৭ প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র করা হচ্ছে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকায় এক হাজার ৪১৯ ভোটকেন্দ্র ছিল। এ নির্বাচনে ইসির জনবল প্রয়োজন হবে প্রায় ৩৪ হাজার। একজন ভোটারকে ভোট দেবার সময় মেয়র, কাউন্সিলর এবং সংরতি আসনের মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য তিনটি ব্যালট পেপার দেয়া হবে।
উলেস্নখ্য, ডিসিসি নির্বাচন হয়েছিল ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল। আর প্রথম সভা হয়েছিল ১৫ মে। ডিসিসি বিধিমালা অনুযায়ী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথ নেবার পর প্রথম অধিবেশনের দিন থেকে এর পাঁচ বছর মেয়াদ গণনা শুরম্ন হয়। সে হিসেবে মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০০৭ সালের ১৪ মে।

No comments

Powered by Blogger.