বৃত্তের ভেতরে বৃত্ত-জাতীয় প্রবৃদ্ধি, জাতীয় সুখ এবং আমাদের চিত্র by দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণু

এ দেশে সাধারণ মানুষের জীবন কাটে অন্তহীন সমস্যার মাঝে। এখন আর কেবল নিম্ন-আয়ের মানুষজনই নয়, নিম্ন-মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত, এমনকি যাদের সংগতি যথেষ্ট পুষ্ট তাদের জীবনও নানা রকম বিড়ম্বনার ঝড়ে ঝড়াক্রান্ত। ২২ সেপ্টেম্বর কালের কণ্ঠে 'বাঁচব কী করে!'_শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সেই চিত্রই চিত্রিত হয়েছে।
জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার যে চিত্র এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে, তাতে খুব সহজেই প্রতীয়মান হয় যে জনজীবন কঠিন সমস্যাক্রান্ত। মানুষের আয়ের অর্ধেকের বেশি অর্থ চলে যাচ্ছে শুধু খাদ্য কিনতেই। পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক জরিপে দেখা গেছে, ২০০৫ সালে ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করলেও ২০১০ সালে এ সংখ্যা ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে। আয় বেড়েছে তা অসত্য নয় বটে; কিন্তু আয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্যয়ও। চরম দারিদ্র্য পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেও উচ্চ মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তদের জীবনযাপনের মান অনেক নেমে গেছে। গত পাঁচ বছরে ভোগ্যপণ্যের ব্যয় বেড়েছে ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ, অন্যদিকে মাসভিত্তিক আয় বেড়ছে ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন উচ্চ মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ। সীমিত আয়ের মানুষের ওপর চাপ বাড়ছে, তাদের জীবনযাত্রার মান ক্রমেই নিচের দিকে যাচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, বিগত পাঁচ বছরে সাধারণ মানুষের খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন এসেছে। এ সময়ে মাথাপিছু ভাত গ্রহণের পরিমাণ কমেছে; কিন্তু বিকল্প খাদ্য হিসেবে বেড়েছে আটার চাহিদা।
শুধু খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রেই যে ব্যয় বেড়েছে তা-ই নয়, ব্যয় বেড়েছে শিক্ষা, চিকিৎসা, পরিবহনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এই ব্যয় কুলিয়ে ওঠা সাধারণ মানুষের পক্ষে দুরূহ হয়ে পড়েছে। একটা কথা অবশ্যই সত্য, উচ্চ মূল্যস্ফীতির হার মানুষের নিট আয় কমিয়ে দেয়। কারণ উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে পণ্য ক্রয় ও সেবা গ্রহণ করতে মানুষকে সঙ্গতই বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়। অর্থাৎ টাকার ক্রয়ক্ষমতা কমে যায় কিংবা টাকা পণ্যের বিপরীতে দুর্বল হয়ে পড়ে। অর্থনীতির এই সূত্র সব মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হলেও এর বিরূপ মাসুল গুনতে সবাইকে সমভাবে হিমশিম খেতে হয় না। ভিন্ন এক সমীক্ষায় প্রকাশ, গত এপ্রিলে দেশে মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ছিল ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ দশমিক ৩৬ ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এই সমীকরণে গ্রাম ও শহরের মধ্যে পার্থক্যও রয়েছে। শহরাঞ্চলে খাদ্যবহির্ভূত ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি গ্রামাঞ্চলের তুলনায় বেশি। খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতির পেছনে জ্বালানি তেলের মূল্য দফায় দফায় বৃদ্ধি বিরূপ প্রভাব ফেলছে। পরিবহন খাত এর বাইরে নয়। তবে পাচার ঠেকাতে ও ভর্তুকি হ্রাসে এর বিকল্পও নেই। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার যেকোনো দেশের তুলনায় আমাদের দেশের মূল্যস্ফীতির হার অনেক বেশি। যাঁরা বেকার, যাঁদের মাসিক আয় নির্ধারিত, আর্থিক সংগতি দুর্বল, অবসরভোগী মূল্যস্ফীতিতে তাঁরাই আক্রান্ত হন বেশি। তাঁদের আয় বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। যাঁরা এ অবস্থায় ব্যাংকে আমানত রাখেন কিংবা কাউকে ঋণ প্রদান করেন, তাঁরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন। যেমন_তাঁরা যখন টাকা ওঠাবেন একই পরিমাণ টাকা পাবেন, যার ক্রয়ক্ষমতা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় কম। চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশের ওপরে চলে যেতে পারে। এর অর্থ দাঁড়ায়, আমাদের উৎপাদন বাড়ছে সাড়ে ৬ শতাংশ হারে, আর খরচ বাড়ছে সাড়ে ১০ শতাংশ হারে। এ ধরনের জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে মোদ্দাভাবে নিশ্চয়ই উন্নতি বলা যায় না। তাই মূল্যস্ফীতির হারকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দরিদ্রের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। শুধু তা-ই নয়, অনেকে নতুন করে চরম দরিদ্রের বৃত্তেও ঢুকে যেতে পারেন। এমনটি ঘটলে আমাদের বিপদ আরো বাড়বে। আমাদের সব সমস্যার উৎস হলো দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অদূরদর্শিতা আর সম্পদের অসম চিত্র। নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রেও প্রাধান্য পায় দল বা ব্যক্তিবিশেষের ইচ্ছা ও অনিচ্ছা। এসব কিছুই বিদ্যমান নেতিবাচক চিত্রকে আরো পুষ্ট করে।
দেশের কর্মক্ষম যুবগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য একটা অংশ_যাঁরা কর্মহীন, তাঁরা সম্প্রতি শেয়ারবাজারে প্রবেশ করে বিপন্ন হয়েছেন। ক্রমবর্ধমান শেয়ারবাজার সংকট কিংবা অস্বাভাবিক পর্যায়ে বাজার ওঠানামার কারণে তাঁরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁদের স্বপ্নের স্তম্ভ ভেঙে গেছে, সুখ নয়_দুঃখের পারদ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। অনেকে এই শেয়ারবাজারে এসেছেন ব্যক্তি কিংবা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে, কেউ এসেছেন বাবা কিংবা মায়ের পেনশনের টাকা নিয়ে, কেউ এসেছেন জমি কিংবা অন্য কোনো সম্পদ বিক্রি করে। অসংখ্য কর্মহীনের ভিড়ে এই ভাগ্যহতদের কিংবা রাতারাতি অধিক সচ্ছল হওয়ার স্বপ্নবাজদের চোখের সামনে সব টাকা হাওয়া হয়ে গেল। বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা তুলে নিল ক্ষমতাবান আর্থিক সন্ত্রাসীচক্র। তাদের চিহ্নিত করে সরকার গঠিত তদন্ত কমিশনের দাখিলকৃত প্রতিবেদনটি হিমঘরে চলে গেছে কি না, এ নিয়ে জনমনে নতুন করে ব্যাপক সন্দেহসূচক প্রশ্ন আছে। এই আর্থিক সন্ত্রাসীরা শেয়ারবাজারে তুঘলকি কাণ্ড ঘটিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সর্বস্বান্ত করে অন্যায়ভাবে নিজেদের উদর পূর্তি করে নিল এবং থেকে গেল একেবারে অস্পর্শিত! এর ফলে সার্বিক চিত্র আরো নাজুক হচ্ছে এবং চিহ্নিত অর্থ সন্ত্রাসীরা আগামীতে আরো উন্মত্ত কর্মকাণ্ড চালাবে_এমন ভাবনা অমূলক নয়। গ্যাস-বিদ্যুৎসহ প্রায় প্রতিটি সেবা খাতের সেবার মান ক্রমে কমলেও এসবের মূল্য কিন্তু ঊর্ধ্বমুখীই। একই সঙ্গে লক্ষণীয়, সরকার যদি গ্যাস, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ কিংবা পানির দাম এক টাকা বাড়ায়, অন্য সুবিধাভোগী শ্রেণীগুলো এ থেকে ব্যাপক ফায়দা লোটার জন্য উন্মত্ত হয়ে ওঠে এবং তারা বাড়ায় পাঁচ টাকা। এমন ভূরি ভূরি দৃষ্টান্ত আমাদের সামনেই আছে। এই নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতি দেশের সাধারণ মনুষকে আরো বেশি পিষ্ট করছে। পাশাপাশি নানা রকম চেষ্টা সত্ত্বেও দেশের আত্মকর্মসংস্থানের ক্ষেত্রটি উজ্জ্বল করা যায়নি। আমলাতান্ত্রিক নানাবিধ জটিলতা এ ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে আছে। এখানে প্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখ করা যায়, ধান উৎপাদনে এগিয়ে থাকা অঞ্চলগুলোর কোনো কোনো বাজারে বিক্রেতার চেয়ে ধান-চালের পাইকারি ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। প্রতিযোগিতা করে তাঁরা অধিক দামে ধান-চাল কিনে মজুদ করেন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো দালাল সংস্কৃতির কারণে মজুদ কাজে ঋণ দিয়ে যাচ্ছে। এরাই আবার বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেন। এ কথা সত্য, বিশ্ববাজারের পরিস্থিতিও ভালো নয়। দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে চাল-গমসহ প্রধান প্রধান খাদ্যপণ্য রপ্তানিকারী দেশগুলোতেই উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বিদ্যমান এসব কারণে খাদ্যনিরাপত্তার ঝুঁকিও বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে দফায় দফায় বাড়ছে খাদ্যপণ্যের দাম। অঙ্ফামের এক সহযোগী সংগঠনের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম যতখানি বেড়েছে বাংলাদেশে বেড়েছে এর থেকে ১০-১৫ শতাংশ বেশি! এসব কারণে মাসে গড়ে ১২ শতাংশ হারে বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়।
বিশ্ববাজারে পণদ্রব্যের দাম বেড়ে গেলে দেশেও তা বাড়বে_এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু বৃদ্ধির হারটা যদি হয় অস্বাভাবিক মাত্রায়, তখন সংগত কারণেই প্রশ্ন দাঁড়ায়। সারা জীবন জ্বালানির দাম একই থাকবে, তাও ভাবার সংগত কোনোই কারণ নেই। কিন্তু এগুলো বাড়ার পরও মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার সুযোগ আছে। ওত পেতে থাকা সুযোগসন্ধানীদের উন্মত্ততা থামানোর উপায় আছে। এর জন্য প্রয়োজন সরকারের তরফে কঠোর তদারকি ও প্রতিকারের ব্যবস্থা। মানুষের ব্যয় যদি এভাবে বাড়তে থাকে কিংবা জীবনযাত্রা আরো দুরূহ হয়ে পড়ে, তাহলে সামাজিক নানা রকম বিশৃৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। বাড়িভাড়া_ (বিশেষ করে ঢাকায়) সীমাহীনের সীমাও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বাড়িওয়ালারা কোনো কিছুর তোয়াক্কা করেন না। সরকারের সেবামূল্য বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়িভাড়া বেড়ে যায় আরেক ধাপ। বাড়িওয়ালাদের এমনটি করার অবকাশ নেই। কারণ একজন বাড়িওয়ালা স্থির মূল্যেই তাঁর বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। বাড়িভাড়া-সংক্রান্ত কাগজে-কলমে আইন আছে বটে; কিন্তু তা একেবারেই অকার্যকর। আর এসব কারণে প্রায় সব ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষকে মাসুল গুনতে হয়। আমাদের এখানে উপলক্ষের পাশাপাশি 'অজুহাত' নামক শব্দটি যেন দৌড়ে বেড়ায়। এখানে শর্ষের মধ্যে ভূত রেখেই এই শর্ষে দিয়ে ভূত তাড়ানোর চেষ্টা চলে! দেশ যেন একটা দুষ্টচক্রের মধ্যে পড়ে গেছে। সব সরকারের আমলেই এই চক্র খোলস পাল্টে সক্রিয় হয়ে ওঠে। একই সঙ্গে আরো একটি বিষয় লক্ষণীয়, ক্রমেই সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এমন ব্যয়ও হচ্ছে, যা স্রেফ অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। অনেক ক্ষেত্র আছে, যেখান থেকে সরকারের ব্যয় হ্রাস করা সম্ভব। এই ক্ষেত্রগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং সাশ্রয়ে যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। অর্থনৈতিক অবস্থার ধস ঠেকাতে এর বিকল্প নেই। সাধারণ মানুষের কাঁধে সওয়ার হওয়ার অবকাশও কোনো সরকারেরই নেই। দেশে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার রয়েছে। যেকোনো জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকারের আমলে যদি জনজীবন সংকটগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তবে তা ভালো লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না।
লেখাটি শেষ করার আগে একটা দৃষ্টান্ত দিতে চাই। সার্কভুক্ত একটি দেশ ভুটান। হিমালয়ের ছোট দেশ ভুটান সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দুটি কারণে অধিক পরিচিত হয়ে উঠেছে। প্রথমত, কিংডম অব ভুটানে পর্যটকদের আগমন হ্রাস করতে উচ্চ ভিসা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। দ্বিতীয়টি খুব মজার। ভুটানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বদলে উন্নয়ননীতি হিসেবে গৃহীত হয়েছে মোট জাতীয় সুখের ধারণা। গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস_অর্থাৎ জাতীয় সুখ নিশ্চিত করার ব্যাপারে ভুটান ইতিমধ্যে জোরদার পদক্ষেপও নিয়েছে। দেশটির নীতিনির্ধারকরা ভালো করেই জানেন পর্যটকের সংখ্যা বাড়লে অর্থনীতি আরো চাঙ্গা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে স্থানীয় পরিবেশ ও সংস্কৃতি। শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য এ দুই-ই জরুরি। পরিবেশ ও সংস্কৃতি আক্রান্ত হলে মানুষের সুখ কমে যাবে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই দেশটির নীতিনির্ধারকরা সাধারণ মানুষের সুখ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভিসা ফি অত্যধিক বাড়ানোর কারণ হলো, বেশি পর্যটক যাতে না আসতে পারেন। একটা বিষয়ে আমরা একমত হতে পারি, উপার্জন বা মোট দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধির (জিডিপি) চেয়েও জরুরি মানুষের সুখ বাড়ানো। সম্পদের সুষ্ঠু ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করে, দুর্নীতি নির্মূলে কঠোর হয়ে সীমিত সম্পদ দিয়েই এসব বিষয় অনেকখানি নিশ্চিত করা সম্ভব। জাতিসংঘের গত সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে (জুলাই) ভুটানের উপস্থাপিত একটি রেগুলেশন গৃহীত হয় মতবিরোধ ব্যতিরেকে। দৃষ্টান্তটি এ জন্য টানা হলো, সুখ-সমৃদ্ধি অর্জনের বিষয়টি একদিন আন্তর্জাতিক আন্দোলনে পরিণত হবে, যে দিনটি খুব দূরে নয়। কিন্তু এর আগে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা, স্বেচ্ছাচারিতার জটাজাল ছিন্ন করে, যা আমাদের দুর্ভোগের অন্যতম বড় কারণ।
লেখক : সাংবাদিক
deba_bishnu@yahoo.com

No comments

Powered by Blogger.