সাতই মার্চের ছায়াচ্ছন্ন প্রহরে by তোফায়েল আহমেদ

মহাকালের কালপরিক্রমার রথে বছর ঘুরে আবার ফিরে এসেছে ঐতিহাসিক সাতই মার্চ। আজ থেকে ৩৯ বছর আগে ১৯৭১-এর রক্তঝরা মার্চের এই দিনে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ইতিহাসের মহামানব সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বজ্রকণ্ঠে জাতির উদ্দেশে প্রদান করেছিলেন তাঁর ঐতিহাসিক বক্তব্য।
২৩ বছরের শোষণ-বঞ্চনার বিপরীতে বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠ দশ লাধিক মানুষের কণ্ঠের সাথে একাকার হয়ে যে মহিমান্বিত ঐক্যনিনাদ বাংলার আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয়েছিল তাতে শত বছরের নির্যাতন-নিষ্পেষণে দলিত-মথিত-শোষিত বাঙালীর সকল বঞ্চনার যেন অবসান সূচিত করেছিল।
৭০-এর নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে, শাসনতন্ত্র তৈরি করার জন্য অধিবেশনে মিলিত হবে_ জনমনে কাঙ্তি এ রকম একটি অভিপ্রায়কে সমাধিস্থ করে ১ মার্চ দুপুর ১টা ৫ মিনিটে ইয়াহিয়া বেতার ভাষণে ৩ মার্চ ঢাকায় আহূত জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করলেন। দাবানলের মতো জ্বলে উঠল বাংলার মানুষ। তারা ােভে-বিােভে ফেটে পড়ল। শত-সহস্র মিছিলে জনসমুদ্রে পরিণত হলো পল্টন ময়দান। বিকাল ৩টায় পল্টন ময়দানে প্রতিবাদ সভা হবে। প্রতিবাদ সভায় আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও নির্দেশমতো আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাই। আজকাল অবাক হয়ে ল্য করি ইতিহাস বিকৃতির ধারায় অনেকেই মননের দীনতা ও নীচতা প্রকাশ করেন বিভিন্ন মিডিয়ায়। তাঁরা ইতিহাসের অমোঘ সত্যকে এড়িয়ে নিজেকে বড় করে দেখান। স্বাধীনতা সংগ্রামের সেই রক্তঝরা প্রতিটি দিনের কর্মসূচী নির্ধারিত হতো বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছাত্র নেতৃবৃন্দকে ডেকে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠনের নির্দেশ দেন। নেতার নির্দেশ পেয়ে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ নূরে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, আসম আব্দুর রব, আব্দুল কুদ্দুস মাখন এক বৈঠকে বিকেলে ছাত্রলীগ ও ডাকসুর সমন্বয়ে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে। একমাত্র ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দই সব ধরনের ঝুঁকির মধ্যে এ সিদ্ধানত্ম নেয়। ২ মার্চ বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালিত হয় এবং তাঁর নির্দেশে কলাভবনে অনুষ্ঠিত ছাত্র সভায় স্বাধীন বাংলার মানচিত্রখচিত পতাকা উত্তোলিত হয়। ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে পল্টনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। ৪ মার্চ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যনত্ম স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালিত হয়। ৩ ও ৪ মার্চ এই ২ দিনে চট্টগ্রামে ১২০ জন নিহত ও ৩৩৫ জন আহত হয়। খুলনায় সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণে ৬ জন নিহত ও ২২ জন আহত হয়। ৫ মার্চ টঙ্গীতে সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণে ৪ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়। খুলনা ও রাজশাহীতেও যথাক্রমে ২ জন ও ১ জন নিহত হয়। ৬ মার্চ ঢাকাসহ সারাদেশে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। এদিন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ভেঙ্গে ৩৪১ জন কারাবন্দী পলায়নকালে পুলিশের গুলিতে ৭ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়।
সংগ্রামী বাংলা সেদিন ছিল অগি্নগর্ভ, দুর্বিনীত। কারও চাপিয়ে দেয়া অন্যায় প্রভুত্ব মেনে নেয়ার জন্য, কারও কলোনি বা করদ রাজ্য হিসেবে থাকার জন্য বাংলার মানুষের জন্ম হয়নি। বাংলার অপরাজেয় গণশক্তি সেদিন সার্বিক জাতীয় মুক্তি অর্জনের ইস্পাত-কঠিন শপথের দীপ্তিতে ভাস্বর প্রিয় নেতাকে যেন দুর্লঙ্ঘ্য প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ প্রদান করে উচ্চকিত হয়েছিল এই সেস্নাগানে, 'তোমার নেতা আমার নেতা শেখ মুজিব শেখ মুজিব', 'বঙ্গবন্ধু এগিয়ে চলো আমরা আছি তোমার সাথে', 'তুমি কে আমি কে_ বাঙালী বাঙালী', 'তোমার দেশ আমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ', 'বীর বাঙালী অস্ত্র ধরো বাংলাদেশ স্বাধীন করো', 'স্বাধীন করো স্বাধীন করো বাংলাদেশ স্বাধীন করো।' আর ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান যেন আবহমান বাংলার বাসনত্মী সূর্য আর উদার আকাশকে সাী রেখে সেদিন নির্ভীক নেতা এবং বীর বাঙালীর একই সুরে ধ্বনিত হয়ে ওঠে যুগ-যুগানত্মর, দেশ-দেশানত্মরের সকল মুক্তিপিপাসু সভ্য জাতির অমোঘ মন্ত্র_ 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম' এই মন্ত্র। দিগনত্ম কাঁপিয়ে নিযুত কণ্ঠে ধ্বনি ওঠে 'জয় বাংলা।' সাতই মার্চ তাই বাংলাদেশের সার্বিক মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে দুর্গম প্রসত্মর পথের প্রানত্মে অতুলনীয় স্মৃতিফলক।
সেদিন ছিল রবিবার। সকাল থেকেই ধানম-ির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুর বাসভবনটি আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ও স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ছাত্রনেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সরগরম। পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী বেলা ২টায় সভা শুরম্ন হওয়ার কথা। জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দসহ আমাদেরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করে বঙ্গবন্ধু জনসভার উদ্দেশে যাত্রা করেন। রাজ্জাক ভাই, সিটি আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী গোলাম মোসত্মফা, মণি ভাই, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবদুর রউফ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালেদ মোহাম্মদ আলী, নূরে আলম সিদ্দিকী, আবদুল কুদ্দুস মাখন, সিরাজুল আলম খানসহ আমরা একটি গাড়িতে রওনা করি। নিরাপত্তার জন্য রাজ্জাক ভাই ও গাজী গোলাম মোসত্মফা ড্রাইভারকে ৩২ নম্বর সড়কের পশ্চিম দিক দিয়ে যেতে বলেন।
সেদিন রেসকোর্স ময়দানে মুক্তিকামী মানুষের ঢল নেমেছিল। আকারের বিশালত্ব, অভিনবত্বের অনন্য মহিমা আর সংগ্রামী চেতনার অতুল বৈভবে এই গণমহাসমুদ্র ছিল নজিরবিহীন। চারদিকে ল মানুষের গগনবিদারী কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে 'জয় বাংলা।' কার্যত ১৯৬৯ থেকেই 'জয় বাংলা' সেস্নাগানটি ছিল বাঙালীর রণধ্বনি। বীর বাঙালীর হাতে বাঁশের লাঠি এবং কণ্ঠে জয় বাংলা সেস্নাগান যেন প্রলয় রাত্রির বিদ্রোহী বঙ্গোপসাগরের সঘন গর্জন।
সেদিন রেসকোর্স ময়দানে ল ল মানুষের মহাসমাবেশ ঘটেছিল সার্বিক জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের পরবতর্ী কর্মসূচী সম্পর্কে পথনির্দেশ লাভের জন্য। আমরা যারা সেদিনের সেই জনসভার সংগঠক ছিলাম, যারা আমরা মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর পদতলের পাশে বসে ময়দানে উপস্থিত পুরনারী, অশীতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, কচি-কিশোর, তরম্নণ-যুবক, কৃষক-শ্রমিক জনতার চোখে-মুখে প্রতিবাদের-প্রতিরোধের যে অগি্নশিখা দেখেছি তা আজও স্মৃতিপটে ভাস্বর। কিন্তু তারা ছিল শানত্ম-সংযত। নেতার পরবতর্ী নির্দেশ শোনার প্রতীায় তারা ছিল ব্যগ্র-ব্যাকুল এবং মন্ত্রমুগ্ধ। কী উত্তেজনাময়, আবেগঘন মুহূর্ত ছিল সেদিন! বঙ্গবন্ধু যখন বক্তৃতা শুরম্ন করলেন জনসমুদ্র যেন প্রশানত্ম এক গাম্ভীর্য নিয়ে পিনপতন নিসত্মব্ধতার মধ্যে ডুবে গেল। এত কোলাহল, এত মুহুমর্ুহু গর্জন নিমেষেই উধাও। আবার পরণেই সেই জনতাই সংগ্রামী শপথ ঘোষণায় উচ্চকিত হয়েছে মহাপ্রলয়ের উত্তাল জলধির মতো, যেন জনসমুদ্রে নেমেছে জোয়ার। তাই তো জোয়ার-ভাটার দেশ এই বাংলাদেশ, আশ্চর্য বাঙালীর মন ও মানস।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমরা সভামঞ্চে এলাম ৩টা ১৫ মিনিটে। কিন্তু ঊর্মিমুখর জনতার মধ্যে অধৈর্যের কোন লণ দেখিনি। নির্দিষ্ট সময়ের বহু আগেই অর্থাৎ সকাল থেকে জনতার স্রোত এসে মিলিত হতে থাকে রেসকোর্স ময়দানে। জনস্রোতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় সভাস্থল। মানুষ গাছের উপরে উঠে বসে নেতার বক্তৃতা শোনার জন্য। সেদিনের সেই গণমহাসমুদ্রে আগত মানুষের বয়স, পেশা, সামাজিক মর্যাদা, পোশাক-পরিচ্ছদ ও শ্রেণীগত অবস্থানের যতই ফারাক থাকুক না কেন, সে জনতার মধ্যে আশ্চর্য যে ঐকতান ছিল তা হচ্ছে হাতে বাঁশের লাঠি, কণ্ঠের সেস্নাগান আর অনত্মরের অনত্মরতম কোণে লালিত জাতীয় মুক্তির স্বপ্ন-আকাঙ্া।
সাদা পাজামা-পাঞ্জাবির পর কালো মুজিব কোট পরিহিত বঙ্গবন্ধু যখন মঞ্চে এসে দাঁড়ালেন, বাংলার বীর জনতা বজ্রনির্ঘোষে তুমুল করতালি ও সেস্নাগানের মধ্যে তাঁকে বীরোচিত অভিনন্দন জ্ঞাপন করে। তাঁর চোখে-মুখে তখন সাড়ে সাত কোটি মুক্তিকামী মানুষের সুযোগ্য সর্বাধিনায়কের দুর্লভ তেজোদৃপ্ত কাঠিন্য আর সংগ্রামী শপথের দীপ্তির মিথস্ক্রিয়ায় জ্যোতির্ময় অভিব্যক্তি খেলা করতে থাকে।
রেসকোর্স ময়দানে প্রাণের টানে বাংলার মানুষ বারবার ছুটে আসে। এর আগেও এসেছিল ১৯৬৯-এর ২৩ ফেব্রম্নয়ারি। সেদিন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসির মঞ্চ উপো করে, বাঙালীর মুক্তির জয়গান গেয়ে ৩৩ মাস কারাবন্দী থেকে এক অপূর্ব ধৈর্য ও নির্লিপ্ততার মধ্য দিয়ে তিনি স্বৈর শাসক আইয়ুব খানের মোকাবেলা করেন। বাঙালী জাতি সেদিন তাঁর মুক্তির জন্য রাজপথে সেস্নাগান তুলেছিল_ "শপথ নিলাম শপথ নিলাম, মুজিব তোমায় মুক্ত করবো; শপথ নিলাম শপথ নিলাম, মা-গো তোমায় মুক্ত করবো।" এবং তাঁকে মুক্ত করে মুক্তমানব শেখ মুজিবকে বাঙালী জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে 'বঙ্গবন্ধু' উপাধিতে ভূষিত করেছিল। এই সেই রেসকোর্স ময়দান যেখানে বাংলার মানুষ শুনেছে এক ইউনিট আর প্যারিটির মৃতু্যঘণ্টা, ৭০-এর ৭ জুনে শুনেছে ৬ দফার জয়নিনাদ, আর ৭১-এর ৩ জানুয়ারি শুনেছে ৬ দফা ও ১১ দফা বাসত্মবায়নে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অগি্নশপথ। আর সাতই মার্চের রেসকোর্স বাংলার মানুষকে শুনিয়েছে স্বাধীনতার অমোঘ মন্ত্র।
সাতই মার্চের রেসকোর্সে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলার মানুষকে সম্বোধন করেছেন, 'ভায়েরা আমার।' সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর নির্যাতিত-মুমূষর্ু-বিুব্ধ চেতনাকে নিজ কণ্ঠে ধারণ করে নির্দেশ দিয়েছেন_ "...প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রম্নর মোকাবিলা করতে হবে, এবং জীবনের তরে রাসত্মাঘাট যা যা আছে সবকিছু_ আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, তোমরা বন্ধ করে দেবে।" ১১০৮টি শব্দ সংবলিত প্রায় ১৮ মিনিটের এই বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু যা নির্দেশ প্রদান করেছিলেন বাঙালী জাতি তা অরে অরে পালন করেছিল। বঙ্গবন্ধু যখন জাতির মুক্তি সংগ্রামের রূপরেখা আর নিজের চরম ত্যাগের কথা ঘোষণা করছিলেন তখন তাঁর কণ্ঠ কাঁপেনি, থামেনি। জনশক্তির বলে বলীয়ান গণনায়কের কণ্ঠ বজ্রের হুঙ্কারের মতোই গর্জে উঠেছিল। ইতিহাসের আশীর্বাদস্বরূপ নেতা আর জনতার শিরদেশে যেন বসনত্মের আকাশ হতে বিদায়ী সূর্যের আলোকরশ্মি ঝরে পড়ছিল। ঐতিহাসিক সেই দুর্লভ ণটিতে আমার পরম সৌভাগ্য হয়েছিল নেতার পদপ্রানত্মে বসে সাড়ে সাত কোটি বঞ্চিত-অবহেলিত-নিরন্ন নরনারীর অবিসংবাদিত নেতার অপরূপ রূপ প্রত্য করার।
সর্বাত্মক মুক্তি সংগ্রামের অগি্নশপথে ভাস্বর, যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত সভাস্থলের প্রতিটি নিরস্ত্র মানুষ যেন সেদিন সশস্ত্র হয়ে ওঠে; তাদের চোখ-মুখ শত্রম্নর বিরম্নদ্ধে চূড়ানত্ম বিজয় অর্জনের আত্মত্যাগের অপার মহিমায় আলোকিত হয়। নেতার বক্তৃতার শেষাংশ 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম' হৃদয়ে ধারণ করে সংগ্রামী জনতার দীপ্ত সেস্নাগানে রাজপথ প্রকম্পিত হয়।
স্বাধীনতা সংগ্রাম তথা রাজনৈতিক সংগ্রামে জয়যুক্ত আমরা হয়েছি। আমরা ভৌগোলিক স্বাধীনতা, একটি পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত পেয়েছি। কিন্তু মুক্তি সংগ্রাম তথা অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে আমরা জয়যুক্ত হতে পারিনি। অদ্যাবধি আমরা সেই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। তাই তো সাতই মার্চের ভাষণের আবেদন এখনও অটুট, এখনও স্থায়ী জাতির মননে-হৃদয়ে-চেতনায়। সাতই মার্চ অনন্য, অবিস্মরণীয়।
সাতই মার্চ যেমন সমগ্র বাঙালী জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সুনির্দিষ্ট ল্যে ধাবিত করেছিল, তদ্রূপ আজ ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২৯ ডিসেম্বরের গণরায়ে বলীয়ান হয়ে জাতির জনকের খুনীদের বিচারের রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে, সংবিধানের কলঙ্কতিলক ৫ম সংশোধনী বাতিল করে কলঙ্কমুক্ত হয়ে, ইতিহাসের মূল স্রোতধারায় জাতির বীর সনত্মানদের যথাযথ মর্যাদা প্রদান করে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ শুরম্ন করে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাসত্মবায়ন করে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ইতিহাসের কাছে আমাদের অঙ্গীকার।
লেখক : সভাপতি, শিল্প মন্ত্রণালয় সংক্রানত্ম সংসদীয় স্থায়ী কমিটি

No comments

Powered by Blogger.