ছয় মন্ত্রীকে তলব প্রধানমন্ত্রীর, বিষয়- দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ by মিজান চৌধুরী

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ছয় মন্ত্রীকে জরুরী তলব করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রীদের ডেকে মূল্য নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে বৈঠক করেন।
খাদ্য ও মূল্য পরিস্থিতি জেনে তিনি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন। আগামীতে আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা থেকে অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। সূত্রমতে ওই বৈঠকে কেন জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে জানতে চাওয়া হয়। তবে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান। প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে বলা হয়, আনত্মর্জাতিক বাজারে দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য বেড়েছে। এ কারণে অভ্যনত্মরীণ বাজারে কিছু পণ্যের মূল্য বেড়েছে। এছাড়া জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে তিনটি পত্রিকাকেও দায়ী করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধী একাধিক রাজনৈতিক দলের মদদে ওইসব পত্রিকা অতিরঞ্জিত করে রিপোর্ট প্রকাশ করায় ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিচ্ছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ওইসব পত্রিকার মাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। এছাড়া রাতের বেলায় টকশোগুলোতে বক্তব্যের কারণেও বাজারে খারাপ প্রভাব পড়ছে। টকশোগুলোতে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্যের কারণের বাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ওই বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, মৎস্য ও শিল্পমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের খাদ্য পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি এবং আগামীতে আনত্মর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। সংশিস্নষ্ট মন্ত্রীরা নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের ভূূমিকা বিশেষ করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যাবলী তুলে ধরা হয়। আনত্মর্জাতিক বাজারে আগামীতে জিনিসপত্রের দাম বাড়লে দেশে যাতে বড় ধরনের প্রভাব না পড়ে সে ব্যাপারে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এ ব্যাপারে বাণিজ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারম্নক খান জনকণ্ঠকে বলেন, ডালের মূল্য বেড়েছে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায়। তবে এ্যাংকরসহ অন্যান্য ডালের মূল্য কম আছে। চিনির দাম রোজার আগে বেড়েছে। এ ব্যাপারে সরকার অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যা অন্য কোন সরকার করতে পারেনি। টিসিবির পণ্য কেনার ৰেত্রে ট্যাক্স মওকুফ করা হয়েছে। টিসিবির মাধ্যমে পামতেল আমদানি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এক শ' মেট্রিক টন মসুর ডাল দেশে প্রবেশ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠকে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। তবে বলা হয়েছে আগামীতে আনত্মর্জাতিক বাজারে মূল্য বাড়ছে। ওই মূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশের বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে। এ জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
সূত্রমতে, সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে একটি চিঠি দিয়েছে। ওই চিঠিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনতে বলা হয়। এদিকে বর্তমান আলুর অতিউৎপাদন নিয়েও আলোচনা হয়। বর্তমান চালের মূল্য বেড়ে স্থিতিশীল রয়েছে। চালের মূল্য বৃদ্ধিও কারণে বিভিন্ন কর্মসূচীর ব্যাপারে বিসত্মারিত কৃষি মন্ত্রণালয়ের পৰ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়।
আনত্মঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক ॥ এদিকে মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাণিজ্য সচিব গোলাম হোসেন আলুর কোল্ডস্টোরেজ মালিকদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে আলু রফতানি নাকচ করে দেয়া হয়। কোল্ডস্টোরেজ মালিকরা আলু রফতানির জন্য নগদ সহায়তা ২০ শতাংশ দাবি করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.