আরও ৬৬৯ রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ

আরও ৬৬৯ রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। এ নিয়ে ১৪ দফায় মোট ৩ হাজার ৯৫৫ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হলো। এদিকে ১৪তম বৈঠকে মোট ১০৯টি আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানিমূলক মামলা না হওয়ায় এগুলো নামঞ্জুর করা হয়েছে। মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের জন্য গঠিত কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আইন প্রতিমন্ত্রী কামরম্নল ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বৈঠকে মোট ১ হাজার ৭২টি মামলা উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে দুদকের মামলা ১৩টি এবং বাকি ১ হাজার ৫৯টি মামলা ফৌজদারি দ-বিধির অধীনে দায়ের করা। দুদকের ১৩টি মামলার মধ্যে ৬টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। এর ছয়টি মামলা নামঞ্জুর করা হয়েছে। বাকি ১টি মামলা আগামী সভায় উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। ফৌজদারি দ-বিধির ১ হাজার ৫৯টি মামলার মধ্যে ৬৬৩টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। নামঞ্জুর করা হয়েছে ১০৩টি মামলা। বাকি ২৯৩টি মামলা পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য রাখা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলের নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর একটি মামলা উপস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্ত্র রাজনৈতিক হয়রানিমূলক না হওয়ায় তা প্রত্যাহার করা হয়নি। তিনি বলেন, এমনকি তার বিরুদ্ধে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টায় দায়ের করা এ মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য জেলা কমিটি সুপারিশও করেনি। তিনি বলেন, আশা করি আগামী মাসের মধ্যে আমরা রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারব। আমরা ঠিক করেছিলাম ২৮ ফেব্রুয়ারির পর আর জেলা কমিটির কোন সুপারিশ গ্রহণ করব না। কিন্তু জেলা কমিটির অনুরোধে সে সময় ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত ১৪তম বৈঠকে প্রত্যাহার সুপারিশের উল্লেখযোগ্যের মধ্যে রয়েছে জাহাঙ্গীর কবির নানকের একটি মামলা, বাহাউদ্দিন নাসিমের একটি মামলা, আসাদুজ্জামান নূরের একটি মামলা, শওকত হোসেন জীবনের একটি মামলা, হাজী মোহাম্মদ সেলিমের একটি মামলা, প্রশিকার চেয়ারম্যান কাজী ফারম্নকের একটি মামলা, ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন, ব্যারিস্টার তানিয়া হামিদসহ সুপ্রীমকোর্টের খ্যাতনামা কয়েক আইনজীবীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
১৩তম বৈঠকে প্রত্যাহার করা মামলার মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হলো জনকণ্ঠের সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদের ১০টি মামলা, জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খানের ১টি মামলা, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর ১টি মামলা, মহীউদ্দীন খান আলমগীরের একটি মামলা, কামাল মজুমদারের একটি মামলা, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর তিনটি মামলা, মোস্তফা কামালের ১টি মামলা, হাজী সেলিমের ১৩টি মামলা, খুলনার সাবেক মেয়র আমীনের একটি মামলা। তবে জনকণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদকের যে ১০টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে তার মধ্য থেকে সাতটি মামলা ইতোমধ্যে আদালত খারিজ করে দিয়েছে। কিন্তু আদালত খারিজ করার আগে জেলা প্রশাসন মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ের করা বিধায় তা প্রত্যাহারের সুপারিশ করে।
আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, জেলা কমিটি থেকে অনেক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ এসেছে যা রাজনৈতিক হয়রানিমূলক নয়। যে কারণে এ মামলা খারিজ করা সম্ভব নয়। তারা এ জাতীয় মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ কেন করেছে তার কৈফিয়ত তলব করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অচিরেই তাদের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কৈফিয়ত সন্তোষজনক না হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, খুলনা থেকে পিটিশন মামলা, ১০৭ ধারার মামলা, গুলশান থানা মামলা নং ৫৬সহ এ জাতীয় বিভিন্ন মামলা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গুলশানের মামলাটি স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে খুনের মামলা।
তিনি বলেন, খুব শীঘ্রই আমরা জেলা কমিটিকে জানিয়ে দেব তাদের কাছে যেসব মামলা রয়েছে তা যাচাইবাছাই করে দ্রুত আমাদের কাছে পাঠাতে হবে। আগামী ২৮ ডিসেম্বরের পর আর কোন মামলা আমরা গ্রহণ করব না।

No comments

Powered by Blogger.