বিনিয়োগ বাড়বে

জানুয়ারি-মার্চ দেশে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ইতিবাচক সাড়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বৃদ্ধির হার অনত্মত ৮ শতাংশ হবে বলেস মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট কাইমেট ফান্ড (বিআইসিএফ) পরিচালিত এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন খাতে অনত্মত ৬০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বছরের প্রথম প্রানত্মিকে বিনিয়োগের কথা ভাবছে। আগের বছর একই সময়ে এ হার ছিল ৫২ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (মিলনায়তনে বিআইসিএফ ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসি-বি)-র যৌথ আয়োজনে জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।
এতে দেখানো হয়, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও মুনাফার ধরন_ এই তিনটি বিষয়ে বিবেচনায় গত তিন মাসে ১-১০০-র স্কেলে সূচক ৫১ থেকে বেড়ে ৫৬-এ দাঁড়িয়েছে।
ব্যবসা-বাণিজ্যের তিনটি মূল ৰেত্র সম্পর্কে সারাদেশের ১ হাজার ৪৪০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। এর আগে গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যনত্ম তিন মাসে ৭০০ প্রতিষ্ঠনের ওপর জরিপ চালানো হয়েছিল।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শিল্প-কারখানা ও সেবা খাতে বিগত প্রানত্মিকের তুলনায় চলতি প্রানত্মিকে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভাল হবে বলে দেখা যাচ্ছে।
এছাড়া চট্টগ্রাম, ঢাকা, বরিশাল ও সিলেটে ব্যবসা পরিস্থিতি আগের প্রানত্মিকের তুলনায় উন্নতি হবে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।
১০০ পয়েন্টের মাপকাঠিতে ৫০-র বেশি পয়েন্টধারী ভাল, ৫০ পয়েন্টধারী স্থিতিশীল এবং এর নিচের অবস্থানে থাকলে মানদ-ের বিবেচনায় তা খারাপ বলে বিবেচিত হয়েছে।
এ বিবেচনায় চট্টগ্রামের স্কোর আগের বছরের চেয়ে ২৫ পয়েন্ট বেড়ে ৮৯ পয়েন্ট হয়েছে। তবে রাজশাহী আশানুরূপ স্কোর অর্জন করতে পারেনি। এ বিভাগের স্কোর ৬৫ পয়েন্ট।
২০১০ সালের প্রথম প্রানত্মিকে রাজশাহী আরও ভাল করবে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।
শিল্প-কারখানা ও সেবা খাতের ওপর পরিচালিত এ জরিপে দুই খাতের পাশাপাশি উপ-খাত হিসেবে বস্ত্র, তৈরি পোশাক, খাদ্য, চামড়া, ওষুধ ও হাল্কা যন্ত্রপাতি উৎপাদন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোও অনত্মভর্ুক্ত ছিল।
এছাড়া খুচরা ও পাইকারি প্রতিষ্ঠান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, হোটেল, টেলিকম, তথ্য-প্রযুক্তি খাতকে সেবা খাতের মধ্যে ধরা হয়েছে।
বিআইসিএফ প্রধান জেমস ক্রিটল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরম্নত্বারোপ করে বলেন, এমনটি করা হলে ব্যবসায়ীদের আত্মবিশ্বাস ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী এমএ তাসলিম বলেন, বৈশ্বিক মন্দার সময় বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালর দিকে ছিল। অতএব হতাশ হবার কিছু নেই।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্বাভাসের সঙ্গে বিআইসিএফ-র এই জরিপের ফলের যথেষ্ট মিল রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, "এটি নীতি নির্ধারকদেরও যথেষ্ট কাজে আসবে।"
বাংলাদেশ নিটওয়ার মেনুফ্যাকচারার্স এ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)-র সভাপতি ফজলুল হক জরিপের ত্রম্নটির কথা তুলে ধরে বলেন, এ জরিপ থেকে কোন খাতগুলোকে আরও বেশি প্রাধান্য দেয়া উচিত সে রকম কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। কিংবা উদ্যোক্তাদের বিষয়েও তেমন কিছু বলা হয়নি। এটা অবশ্যই একটি গুরম্নত্বপূর্ণ বিষয়।
অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দীন মাহমুদ বলেন, প্রতিবন্ধকতা; বিশেষ করে জ্বালানি সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে না পারলে জরিপে যে প্রত্যাশা করা হয়েছে সেরকম নাও ঘটতে পারে। অবশ্য বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান যথেষ্ট বিনিয়োগ বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অর্থনীতি প্রতিবেদক

No comments

Powered by Blogger.