'পাহাড় অশান্ত করতে পরিকল্পিত ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত'

পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল ও সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার জন্য একটি কুচক্রী মহল পাহাড়ী-বাঙালীদের মধ্যে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত সৃষ্টি করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।
সুপরিকল্পিতভাবে খাগড়াছড়ি ও বাঘাইছড়িতে এ সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়েছে। শনিবার খাগড়াছড়ি ও বাঘাইহাটে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ৰিত ঘটনার ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প থেকে এ মন্তব্য করা হয়েছে।
শনিবার সকাল ১০টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাহ আলম এমপির নেতৃত্বে ১০ সদস্য বিশিষ্ট সংসদীয় টিমের ৫ সদস্য বাঘাইছড়ি উপজেলার বাঘাইহাট, সাজেক, গংগারাম মুখ ও খাগড়াছড়ি শহরের তিগ্রসত্ম এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা তিগ্রসত্মদের সঙ্গে কথা বলেন। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাহ আলম এমপি বলেন, কিছু দুষকৃতকারীর জন্য এ অনাকাঙ্ৰিত ঘটনা ঘটেছে। পাহাড়ে পাহাড়ী-বাঙালী সহাবস্থানে বসবাস করার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে। তিনি তিগ্রসত্মদের আশ্বসত্ম করে বলেছেন, পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে। ইতোমধ্যে সরকারের প থেকে তিগ্রসত্মদের মাঝে প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় তিনি এলাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। বর্তমান সরকার পার্বত্য এলাকায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে।
প্রতিনিধি দলটি দুপুরে বাঘাইহাট থেকে ফিরে খাগড়াছড়ি শহরের তিগ্রসত্ম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় এলাকা, সাতভাইয়া পাড়া, মহাজন পাড়া, চেঙ্গীস্কোয়ার ও শানত্মিনিকেতন এলাকা পরিদর্শ করেন। খাগড়াছড়ির তিগ্রসত্ম এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রেস ব্রিফিংয়ে কমিটির সদস্য এবিএম ফজলে করিম এমপি বলেন, পার্বত্য এলাকাকে অশানত্ম করার জন্য এবং সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ সময় প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য ও স্থানীয় সংসদ সদস্য যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, পাহাড়ে স্থায়ী শানত্মি প্রতিষ্ঠার জন্য পাহাড়ী-বাঙালী সকলকে কুচক্রী মহল হতে সাবধান থাকতে হবে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু এ দেশ স্বাধীন করেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য এলাকার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আনত্মরিক। তাই আমাদের পাহাড়ী-বাঙালী ভাই ভাই হিসাবে সম্প্রীতির বন্ধন রচনা করে এ এলাকায় বসবাস করতে হবে। তাহলেই এ অঞ্চলের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে, সুখে শানত্মিতে সকলে বসবাস করতে পারবে।
এদিকে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিনিধি দলের নিকট বাঘাইছড়ির গংগারাম মুখ এলাকার নন্দিতা চাকমা, মিন্টু চাকমা, বাঘাই হাটের রফিকুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি শহরের মিলন চাকমা ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন। এদিকে অগি্নকা-ের ঘটনায় দাতা সংস্থা ইউএনডিপির স্থানীয় প্রতিনিধিরা পাহাড়ীদের ইন্ধন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাঘাইহাটে তিগ্রসত্ম বাঙালী পরিবারগুলো। তাদের অভিযোগ ঘর পোড়ানোর পর ইউএনডিপি প্রত্যেক উপজাতি পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ৩ লাখ টাকা ও পরে প্রতি পরিবারকে আরও ১২ লাখ টাকা করে তিপূরণ দেবে বলে একটি প্রচারণা চালিয়েছে। ফলে মোটা অংকের তিপূরণের লোভে উপজাতীয় পরিবারগুলো নিজেরাই তাদের বাড়িঘর পোড়াচ্ছে। ১৯ ফেব্রম্নয়ারির পর আরও কয়েক দফায় বিচ্ছিন্নভাবে উপজাতীয় এলাকায় বাড়িঘর পোড়ানোই তার প্রমাণ বহন করে।

No comments

Powered by Blogger.