অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা

মহাজোট সরকার জনগণের বিপুল সমর্থন পেয়েই দেশকে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নেয়ার অঙ্গীকারে আন্তরিক। মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত এই ভূ-খ-টির মহিমা ও গৌরবকে অমলিন রাখার ক্ষেত্রেও সরকার আপোসহীন।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, জাতির জনকের ঘাতকদের ফাঁসিরে দণ্ডাদেশ কার্যকর করা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য শুরুর উদ্যোগ গ্রহণ, সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের হাইকোর্টের রায় সুপ্রীম কোর্টে বহাল রাখা এ সরকারের মেয়াদকালের প্রথম পর্বেই অর্জিত হয়েছে। আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মহাজোট সরকার আর্থ-সামাজিক অবস্থানে সুদৃঢ় করার জন্য সর্বাত্বক প্রচেষ্ট চালিয়ে যাচ্ছে। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে কৃষকের মুখে আজ হাসি ও সন্তুষ্টির ছাপ। জাতীয় শিৰানীতি প্রণয়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লৰ্যে এবং বেকারত্ব দূরীকরণে সরকারের বাস্তবমুখী উদ্যোগ নতুন প্রজন্মকে করেছে আশাবাদী, বহির্বিশ্বেও সরকারের যাবতীয় ইতিবাচক উদ্যোগ প্রশংসিত হচ্ছে। এরই মধ্যে পররাষ্ট্র নীতিতে উজ্জ্বল স্বাৰর রাখতে সৰম হয়েছে। সাংবিধানিক পন্থায় দেশ পরিচালনা করতে সরকারের কোনও বাধা নেই আর। অর্থাৎ গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেৰতা_এই চার মূল সত্মম্ভের ওপর অবস্থান হবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের।
কিন্তু এমনতর শুদ্ধতম ও পরম অগ্রযাত্রাকে পরাজিত এবং অসহিষ্ণু একটি রাজনৈতিক মহল সুন্দর দৃষ্টিতে তো দেখছেই না, উপরন্তু চিরতরে রুদ্ধ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। দেশের অভ্যনত্মরে ইসু্যবিহীন কর্মকা-কে ধর্মীয় জঙ্গীবাদের লাগাম পরিয়ে বেগবান করতে চাইছে, মূলত চাইছে অস্থিতিশীলতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করতে। বিএনপি-জামায়াত এই অপকৌশলে সখ্য বজায় রাখতে পারঙ্গম। ঢাকা, রাজশাহী এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হত্যার মধ্য দিয়ে তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। উপরন্তু সিরিজ কিলিংয়ের নীলনকশা তৈরিও করে রেখেছে তারা। আন্ডারগ্রাউন্ডে জঙ্গীদের সঙ্গে রয়েছে চলিস্নশটির বেশি উগ্রপন্থী সংগঠন। এদের মূল নাটাইটি যুদ্ধাপরাধীদের হাতে। মোটা অঙ্কের অর্থও যোগান দিচ্ছে দেশের ভেতর থেকে এবং বাইরে থেকেও_ কারণ এদের নেটওয়ার্ক খুবই শক্তিশালী এবং বিস্তৃত। পার্বত্য চট্টগ্রামে রক্ত ঝরল আবার গত ১৯ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি পাহাড়ী-বাঙালী সংঘর্ষে আহত হয়েছে উভয় পৰ থেকেই। বৌদ্ধ বিহার আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। উখিয়ার অরণ্যে ১৭টি ইসলামী জঙ্গী সংগঠন প্রশিৰণ নিচ্ছে। প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা পাকিস্তানপ্রেমীরা এই প্রশিৰণকে গতিশীল করবে, এটা স্বাভাবিক। এদের চিহ্নিত করে প্রশাসন থেকে সরাতে না পারলে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সরকারকে বেগ পেতে হবে, এটাও সত্য। বাংলাদেশের জনগণ চায় স্বস্তিময় জাতীয় অবস্থান, যা পূরণ করার দায়িত্ব সরকারের। বর্তমান মহাজোট সরকার আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন। আওয়ামী লীগের রয়েছে শ্রমিক ও কৃষকদের মধ্যে দীর্ঘকালের গ্রহণযোগ্যতা। এদের সংখ্যাই বাংলাদেশে বেশি। সুতরাং আওয়ামী লীগের ভিত্তি সুযোগসন্ধানী সংগঠনের মতো নড়বড়ে নয়। তাই বিশাল ঐতিহ্যের অধিকারী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের কাছে জাতির প্রত্যাশা, বাহাত্তরের সংবিধান মোতাবেক দেশ পরিচালিত হোক। অস্থিতিশীল করার জন্য যেসব উগ্র সংগঠন প্রত্যৰ ও পরোৰভাবে ইন্ধন যুগিয়ে যাচ্ছে তাদের নিষিদ্ধ করা হোক, নইলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নষ্ট হয়ে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.