মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম জয়ন্তীতে নানা আয়োজন- সংস্কৃতি সংবাদ

বাংলা সাহিত্যের নবজাগরণের অন্যতম পুরোধা মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। ঊনবিংশ শতকের এই কবি গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে কবিতাকে দিয়েছিলেন নবরূপ।
কবিতার অঙ্গে জুড়েছিলেন অমিত্রাক্ষর ছন্দ। প্রথম বাংলা মহাকাব্য মেঘনাদবধও রচিত হয়েছিল এ কবির সৃজনী প্রতিভায়। নাটক কিংবা প্রহসন রচনায়ও ছিলেন সিদ্ধহস্ত। গত ২৫ জানুয়ারি ছিল মহাকবির জন্মদিন। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার প্রদান ও ১৮৯তম জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিকেলে শিল্পকলা একাডেমীর সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রেনেসাঁ সাংস্কৃতিক পরিষদ।
দুটি পর্বে বিভক্ত ছিল অনুষ্ঠান। প্রথম পর্বে ছিল আলোচনা ও পুরস্কার প্রদান। আর দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। প্রথম পর্বের আয়োজনে চারজন কৃতী ব্যক্তিত্বকে মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার ২০১২ প্রদান করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন কৃষি সাংবাদিকতার অগ্রজ ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, পরিবেশ আন্দোলন কর্মী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং চিকিৎসক নেয়াজ আহমেদ ও ডা. মোহাম্মদ আবু সিদ্দিক।
আলোচনা পর্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি যাযাবর ওসমান। সভাপতিত্ব করেন পরিষদের চেয়ারম্যান ড. মীজানূর রহমান শেলী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিষদের মহাপরিচালক কবি আজাদ যশোরী। আলোচনায় বক্তারা বলেন, বাংলা সাহিত্যে মাইকেল মধুসূদনের অবদানের যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি। এছাড়াও বক্তারা কবির জন্মভিটা যশোরের সাগরদাঁড়ি গ্রামে মাইকেল মধুসূদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
আলোচনা শেষে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুরুতেই দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে ঘুঙুর সাংস্কৃতিক একাডেমী। পরে মঞ্চস্থ হয় মধুসূদন দত্ত রচিত প্রহসন বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ। পরিবেশন করে জ্যোতি নাট্য সম্প্রদায়। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন লায়লা পারভিন কেয়া।
জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু আজ ॥ যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি আজ কবিতার সেøাগানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে আজ শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে দু’দিনব্যাপী জাতীয় কবিতা উৎসব ২০১৩। সকাল দশটায় জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত উৎসবের উদ্বোধন করবেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। সভাপতিত্ব করবেন পরিষদের সভাপতি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। উৎসবস্থলে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর একুশের গান ও উৎসব সঙ্গীত পরিবেশন করা হবে। এছাড়াও উদ্বোধনী আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের পাশাপাশি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও শিল্পী কামরুল হাসানের সমাধিতেও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এবারের উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে পরিষদের অন্যতম প্রাণপুরুষ কবি ও ছড়াকার ফয়েজ আহমদ ও জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশের সুহৃদ কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে।
মিরপুর মুক্তির উৎসব ॥ কার্যত একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ। তবে পুরো দেশ স্বাধীন হলেও রাজধানীর মিরপুরের বিহারী অধ্যুষিত একটি অংশ তখনও দখলমুক্ত হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের শেষ রণাঙ্গন হিসেবে বিবেচিত এলাকাটি মূলত স্বাধীন হয় বাহাত্তরের ৩১ জানুয়ারি। পরবর্তীতে এই দিনটি মিরপুর মুক্ত দিবস হিসেবে বিবেচিত হয়। আর দিবসটি উপলক্ষে চার দিনব্যাপী মিরপুর মুক্তির উৎসব শীর্ষক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে মিরপুর সাংস্কৃতিক ঐক্য ফোরাম। বুধবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে জল্লাদখানা বধ্যভূমিতে শহীদ আবু তালেব মঞ্চে স্বাধীন বেতারের শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনা দিয়ে শুরু হয় আয়োজন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ছিল মিরপুর ২ নম্বরের ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এতে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পাশাপাশি ছিল আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আজ শুক্রবার কেলে মিরপুর গোল চত্বরের মুনীর চৌধুরী মঞ্চে থাকবে পথনাটকের পরিবেশনা।
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে নাট্যকর্মীদের বৈঠক ॥ সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে দেশব্যাপী নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা। এই সহিংসতা রোধে ও আইন প্রয়োগের মাধ্যমে কঠিন শাস্তির বিধান নিশ্চিত করতে গোলটেলি বৈঠকের আয়োজন করে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় শিল্পকলা একাডেমীর নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে প্রয়োজন মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ, প্রয়োজন আইনের যথাযথ প্রয়োগ’ শীর্ষক এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
দেশবরেণ্য সাংবাদিক, আইনজীবী, নারী নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল ঝুনা চৌধুরী। সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করবেন অভিনেত্রী ও নারী নেত্রী রোকেয়া রফিক বেবী। সভাপতিত্ব করবেন ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।

No comments

Powered by Blogger.