রহস্যাবৃত গুম- ০ মার্কেটে আধিপত্য নিয়ে তিন হত্যা?- ০ রফিক হত্যায় সংশ্লিষ্টতা জোরের সঙ্গে অস্বীকার র‌্যাবের by শংকর কুমার দে

 একের পর এক গুপ্ত হত্যা থেকে যাচ্ছে রহস্যাবৃত। কেউ জানতেই পারছে না গুম করার পর খুন করছে কারা? প্রায় প্রতিটি গুম খুনের পর ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ, এর জন্য দায়ী র‌্যাব ও পুলিশ বা আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা।
বরাবরের মতো প্রতিটি ঘটনার কথা অস্বীকার করছে তারা। এভাবে বেড়ে চলেছে লাশের মিছিল। প্রথমে গুম করা হচ্ছে। তারপর কারও লাশ পাওয়া যাচ্ছে। আবার কারও লাশের হদিসই মিলছে না। গুম-হত্যা থেকে পুলিশ, সাংবাদিক, রাজনীতিক, সাধারন মানুষ কেউ বাদ যাচ্ছেন না। গুপ্ত হত্যার কারনগুলোর মধ্যে পূর্ব শত্রুতা, আধিপত্য বিস্তার, জমিজমার বিরোধ, রাজনৈতিক বৈরিতা,সহ নানা কারনের সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে রাজধানীর মার্কেট ও গার্মেন্টেসের ঝুট ব্যবসার বিরোধ। প্রায় ৪ বছর আগে রাজধানীর যুবলীগ নেতা লিয়াকত হোসেন গুপ্ত হত্যা থেকে শুরু হয়ে সর্বশেষ গুপ্ত হত্যার শিকারে পরিনত হয়েছেন বিএনপির ওয়ার্ড নেতা রফিকুল ইসলাম মজুমদার। বিগত ৪ বছরে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিখোঁজ ও নিহত হয়েছেন ৪৯৪ জন। এর মধ্যে গুম হয়েছেন ৯৭ জন। অপহৃত হয়েছেন ৭২৫জন। গুম-হত্যা মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। প্রশ্ন ওঠেছে এই গুপ্ত হত্যার শেষ হবে কবে?
রাজধানী ঢাকার ৫৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মজুমদারের লাশ হাতকড়া লাগানো অবস্থায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার আদাবাড়ি-মনোহরপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার তিনি শশুরবাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপার আনন্দনগরে যান। তারপরের দিন শনিবার তার লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের পর সোমবার নয়া পল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্র্য্যালয়ের সামনে রফিকের জানাজার আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকা- ঘটিয়েছে। এর সঙ্গে র‌্যাব-পুলিশ শতভাগ জড়িত বলে আমরা মনে করি। তিনি বলেন, এর আগে ওয়ার্ড কাউন্সিলর চৌধুরী আলমকে গুম করে ফেলা হয়েছে। আজও তার হদিস পাওয়া যায়নি। এই সরকারের আমলে গুমের মিছিলের সংখ্যা বাড়ছে। সোমবার সকাল এগারোটার দিকে তার লাশ দলীয় কার্যালয়ের সামনে আনার পর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংগ নেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা তরিকুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, সাদেক হোসেন খোকা, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দও বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। জানাজার পর লাশ দাফনের জন্য এ্যাম্বুলেন্সযোগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের শাহরাস্তির চন্ডীপুরে। হত্যাকা-ের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকালে বিএনপি রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কর্মসূচী দিয়েছে। বিএনপির ৫৬ নং ওয়ার্ডে ৩ দিনব্যাপী শোক পালনের কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। বৃধবার নিহত রফিকের স্মরণে নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কায্যালয়ে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
রফিক গুপ্ত হত্যার তদন্ত শুরু ॥ সর্বশেষ গুপ্ত হত্যার শিকার বিএনপির ওয়ার্ড নেতা রফিকুল ইসলাম মজুমদার কেন কি কারণে গুপ্ত হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত করছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা। কারন এই হত্যাকা-ের জন্য বিএনপি ও তার পরিবার থেকে র‌্যাব ও পুলিশকে দায়ী করা হয়েছে। তাকে গুপ্ত হত্যার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কেউ ব্যবহার করেছে কিনা? না-কি হাতকড়া পরিহিত লাশ ফেলে রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে? কারা কি কারণে তাকে গুপ্ত হত্যা করেছে তার রহস্য উদঘাটন করতেই তদন্ত করা হচ্ছে। নিহত রফিকুল ইসলাম ছিলেন রাজধানীর বঙ্গবাজার এলাকায় মহানগর কমপ্লেক্সে মার্কেট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি। রাজধানী ঢাকার ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডে কমিশনার প্রার্থী ছিলেন রফিকুল। তিনি এলাকায় পোস্টারও বিলি করেন। তার হত্যার পেছনে অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নিহত রফিকুলের স্বজন, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, ব্যবসায়ী ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহানগর কমপ্লেক্স মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একাধিক গ্রুপের বিরোধ চলে আসছিল দীর্ঘদিন ধরেই। রফিকুল ছিলেন এর একটি পক্ষ। রফিককে নিয়ে গত ৩ বছরে মার্কেট সংশ্লিষ্ট তিন ব্যক্তি নিখোঁজ হন। ২০১০ সালে নিখোঁজ হন বিএনপির আরেক ওয়ার্ড নেতা চৌধুরী আলম। গুলিস্তান সংলগ্ন উদ্যানের জায়গা দখল করে যে মার্কেট তৈরি করা হয়েছে তার নেপথ্যে ছিলেন
চৌধুরী আলম। আইন শৃংখলা বাহিনীর ধারণা, চৌধুরী আলম নিখোঁজের এটিও একটি অনত্যম কারণ হতে পারে। ২০১১ সাল থেকে নিখোঁজ আছেন হাজী ওয়াজিউল্লাহ। তার পরিবার দাবি করেছেন নিখোঁজ ওয়াজিউল্লাহ ছিলেন মহানগর সুপার মার্কেটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। সর্বশেষ রোববার উদ্ধার হলো একই মার্কেটের সহ-সভাপতির লাশ। এই মার্কেটের সভাপতি হওয়ার জন্য চেষ্টা-তদবির করে আসছিলেন তিনি। এই মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রফিকুল খুন হয়ে থাকতে পারেন বলে তদন্তকারীরা ধারণা করছেন। তকে প্রতিপক্ষ গ্রুপ কোন আইনশৃংখলা বাহিনীর বিপদগামী সদস্য নামের দুর্বৃত্তদের ব্যাবহার করছেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্তকারী সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে বঙ্গবাজার এলাকায় রেলওয়ের জায়গায় গড়ে তোলা হয় ঢাকা সুপার মার্কেট ও বাংলাদেশ সুপার মার্কেট। ওই সময় ঢাকা সুপার মার্কেটের নিয়ন্ত্রণে ছিল হাজী ওয়াজি উল্লাহ। আর বাবুল গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ ছিল বাংলাদেশ সুপার মার্কেটের। ২০০৯ সালে রফিকুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বে মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারা দু’টি মার্কেট একত্রিত করে নাম রাখে মহানগর কমপ্লেক্স। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারে সময়ে মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় ওয়াজি উল্লাহ। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রভাবশালী কয়েক রাজনৈতিক নেতার সহায়তায় ফের মার্কেটের নিয়ন্ত্রন নেয় রফিকুল। বর্তমানে এই মার্কেটের সভাপতি হচ্ছেন আ: রহমান। বিতাড়িত হন ওয়াজি উল্লাহ। এরপরও তিনি মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা চালান। মহানগর কমপ্লেক্স দখল নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে একাধিক মামলাও রয়েছে। এই মার্কেটটির নিয়ন্ত্রন নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপের কোন্দলের সুযোগে আইন শৃংখলা বাহিনীর অসৎ কর্মকর্তারা মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে পক্ষাবলম্বন করেন।
নিহত রফিকুল ইসলাম শুধু মহানগর কমপ্লেক্সই নয়, বঙ্গবাজার ও গুলিস্তানে একাধিক মার্কেটে রফিকুল ইসলামের শেয়ার ও দোকান রয়েছে। মহানগর মার্কেটের এনেক্সকো টাওয়ারেও রফিকুলের দোকান ও গো-ডাউন রয়েছে। মার্কেটকেন্দ্রীক ব্যবসা ছাড়াও রফিকুল জুট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সাভার ইপিজেড, কালিগঞ্জ থেকে ঝুট পাইকারী দরে কাপড় রাজধানীতে বিক্রি করতেন তিনি। তার ব্যবসার অন্যতম অংশীদার ছিলেন আশরাফ ও আখতার। বিএনপি সরকারের আমলে তারা সাভার ইপিজেডের দু’টি গার্মেন্ট থেকে ঝুট নামাতেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর অন্যদের হাতে জুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় তাদের হাত থেকে। তারপরও ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন তারা।
বিএনপির শাসনামলে রফিকের সঙ্গে অপর নিখোঁজ চৌধুরী আলম ও তাদের লোকজনই মহানগর কমপ্লেক্স দখলে ছিল। বর্তমান সরকার আসার পর বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই দলই মিলে মিশে ভাগাবাটোয়ারা করে খাচ্ছে মার্কেট। একার সিদ্ধান্তে সব কাজ করতেন রফিকুল। এ নিয়ে অন্যদের সঙ্গে ছিল তার বিরোধ। মহানগর কমপ্লেক্স ছাড়াও সুন্দরবন স্কয়ার, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে ও এনেক্সো কমপ্লেক্সে নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক প্রভাবে এক শ্রেনীর মস্তান ব্যাবহৃত হয়। এসব মার্কেটে ব্যাবসা ও নিয়ন্ত্রন ছিল রফিকুলের। রফিকুল জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। সে কমিশনার প্রার্থীও ছিল। সরকারবিরোধী রাজনীতিতে সে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। মার্কেট নিয়ে বিরোধ ছিল। মার্কেটের বিরোধের কারণে প্রতিপক্ষের দ্বারা তিনি খুন হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
আলোড়ন সৃষ্টিকারী গুম ও হত্যাকা- ॥ গত বছরের শুরুর দিকে ১০ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ ফ্ল্যাটে খুন হন মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি। গত ৫ মার্চ গভীর রাতে গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কে নিজ বাসার অদূরে দুস্কৃতিকারীদের গুলিতে নিহত হন সৌদি দূতাবাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খালাফ মোহাম্মদ সালেম আল আলী। এ ঘটনায় আদালত ৫ জনকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল বনানী থেকে অপহƒত হন বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী। গত ৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাংলাদেশ গামের্ন্টস এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশন নামের শ্রমিক সংগঠনের ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানা শাখার সভাপতি ছিলেন আমিনুল ইসলামকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পর দুই দিন পর গত ৬ এপ্রিল সকালে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে একটি সড়কের পাশ থেকে বেওয়ারিশ হিসাবে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তার লাশ উদ্ধার করে দাফন করে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম। পরে তার পরিবার লাশ শনাক্ত করে। এ হত্যার পেছনে গার্মেন্টস শ্রমিক সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর সমন্দেহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে। গুপ্ত হত্যার শিকারে পরিনত হয়েছে এটিএন বাংলার সিনিয়র ক্যামেরাম্যান শফিউল ইসলাম মিঠু,পুলিশের এএসআই মিজানুর রহমান। আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার আসামী সেলিম, মনির, সাইফুল, সাত্তারসহ ৫জন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাও আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের দিকেই সন্দেহের তির। প্রায় চার বছর আগে র‌্যাব পরিচয়ে সাদা পোষাকের সশস্ত্র ব্যাক্তিরা মোহাম্মদপুরের বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে যায় মাইক্রোবাসযোগে যুবলীগ নেতা লিয়াকতকে । সে জীবিত না মৃত তাও কেউ বলতে পারে না। লিয়াকতের আত্মীয়স্বজনরা তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করে দাবী করেছে, সাদা পোষাকের র‌্যাব তাকে তুলে নিয়ে গেছে। প্রায় দুই বছরেও লিয়াকত জীবিত আছে নাকি তাকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে তার কোন হদিস মিলেনি। যুবলীগ নেতা লিয়াকত নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার ব্যাপারেও সন্দেহের তির আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের দিকেই।
পরিসংখ্যান যা উল্লেখ করা হয়েছে ॥ মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিগত ৪ বছরে আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে নিহত ও নিখোঁজ হয়েছেন ৪৯৪ জন। আসকের হিসাব অনুযায়ী বিদায়ী বছর ২০১২ সালের ১১ মাসে নিখোঁজ হয়েছেন ৫১জন। এর মধ্যে ১৫ জনের লাশ পাওয়া গেছে। অন্যদের হদিস নেই। পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১২ সালের ১১ মাসে ৭২৫জন অপহৃত হয়েছে। এর মধ্যে পাচার ও ও মুক্তিপনের জন্য অপহৃত হয়েছেন ৮৮ জন।
র‌্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বলেছেন, অপরাধীরা অনেক সময় কোনো অঘটন ঘটিয়ে আইন-শৃগ্ধখলা বাহিনীর ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করার ঘটনা নতুন নয়। হ্যান্ডকাপসহ আইন-শংখলা বাহিনীর যে কোনো সরঞ্জাম খোলা মার্কেটেও হরহামেশা পাওয়া যাচ্ছে। পেশাদার দৃর্বৃত্তরা হ্যান্ডকাপ এমনকি ইউনিফর্ম পর্যন্ত ব্যাবহার করছে। হ্যান্ডকাপ পরিহিত অবস্থায় কারও মৃতদেহ উদ্ধার করা হলেই এটা প্রমাণ করে না যে, আইন শৃংখলা বাহিনী এই ঘটনা ঘটিয়েছে। অপরাধীরা নিজেদের আড়াল করার জন্য প্রায়শ:ই এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে চলছে পেশাদার দুর্বৃত্তরা। এসব পেশাদার দুবৃর্ত্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থাগ্রহনের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। রফিকুল ইসলাম মজুমদার হত্যাকান্ডের সঙ্গে র‌্যাব বা পুলিশ কোনভাবেই জড়িত নয় বলে দাবী করেছেন র‌্যাব কর্মকর্তা।
পুলিশ সদর দফতরের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিএনপির ওয়ার্ড নেতা রফিকুল ইসলামসহ দেশের সকল গুম, অপহরন, হত্যাকান্ডের তদন্ত করে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। তদন্তে যত প্রভাবশালী ব্যাক্তি বা আইন শৃংখলা বাহিনীর কোন সদস্য দোষী সাব্যস্ত হন তার বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে রফিকুল ইসলাম হত্যাকান্ডের ব্যাপারে কোন পুলিশ বাহিনীর সদস্য জড়িত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা।

No comments

Powered by Blogger.