স্বাগত-২০১১-আশা-নিরাশার দোলাচলের বছর by আতাউস সামাদ

পেছনে রেখে আসা ২০১০ সালের বেশ কয়েকটা দিন আমাদের কেটেছে বৃষ্টির জন্য আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে। আসমান ধূসর থাকত, মাঝেমধ্যে কালো মেঘ আনাগোনাও করত; কিন্তু পানি ঝরত না। ভয় হতো ধানক্ষেতগুলো শুকিয়ে না যায়। আবার শরতে এমন বৃষ্টি শুরু হলো যেন বর্ষা ফিরে এসেছে।
এবার আতঙ্ক, দেরিতে বন্যা হয় বুঝি। তবে বৃষ্টি হচ্ছিল বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ায়। সেটা দুর্বল হয়ে গেল বলে সাইক্লোন থেকে বাঁচা গেল, বৃষ্টিও বন্ধ হলো। গতবার গরম পড়েছিল অনেক। সেটা সহ্য করে নিতে হয়েছিল, কারণ দেশের ফসলের মাঠে পানি সেচ দিতে পারা নিশ্চিত করার জন্য ঢাকা শহরে এক ঘণ্টা পর এক ঘণ্টা করে দিনে-রাতে লোডশেডিং করতে হয়েছে। অন্য অনেক শহরে আরো বেশি লোডশেডিং হয়েছে। শহর-গ্রাম সবখানেই মানুষ এসব মেনে নিয়েছে, অভ্যস্ত হয়ে গেছে, তবু তারা চেয়েছে ধানের ফলন যেন ভালো হয়। ফসল ফলেছে। সরকার বলছে, ধান ভালোই হয়েছে। তবে তার পরও চালের দাম কমল না, বরঞ্চ অনেক বেড়ে গেল, এ ক্ষেত্রে আমরা আশাহত হলাম।
গত বছরটা এ রকমই গেল, কি রাজনৈতিক, কি অর্থনৈতিক, কি সামাজিক_প্রায় সব দিকে। এই ভালো তো এই মন্দ। আমাদের উপলব্ধিতে অর্থাৎ যেসব ঘটনা গায়ে কাঁটার মতো লাগে, যার দরুণ শরীরে ব্যথা লাগে বা মনে যন্ত্রণা হয়, তার হিসাবে_বছর শেষে মন্দের সংখ্যা বেশি হয়েছে। তবুও আমাদের বিবেচনায় ভালো যা হয়েছে, সেসবের কথা আগে কিছু বলে নিই। না হলে কে আবার বকা দেয়। সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করলে কালের কণ্ঠে তার সমর্থনে কিছু কথা লিখেছিলাম। সেই লেখাটার শেষে, একটা প্যারায় নম্বর বসিয়ে মূল লেখা থেকে আলাদা করে নিয়ে সংক্ষেপে লিখে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম, দ্রব্যমূল্য আবারও বাড়ছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও অবনতি হচ্ছে, তাই এগুলো ঠেকাতে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে সরকারের ভালো কাজের কৃতিত্ব ওই দুই সমস্যার আবর্তে হারিয়ে যাবে (কথাগুলো স্মৃতি থেকে লিখলাম, সেই লেখার কোটেশন নয়)। সেদিনই এক মন্ত্রী লেখাটিকে আক্রমণ করে বলেন, আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে লেখক বাস্তবে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতা করেছেন। আমি কিন্তু তেমন কিছুই করিনি। শুধু জরুরি মনে করে লেখার শেষে এ দুই সমস্যা এখনই মোকাবিলা করা দরকার_এ কথা মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যে দেশজুড়ে সব স্কুলের প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সব ছাত্রছাত্রীকে বিনা মূল্যে পাঠ্য বই সরবরাহ করেছেন, এটা খুব ভালো এবং খুব বড় একটা কাজ হয়েছে। ১৯৯২ সালে খালেদা জিয়ার আমলে প্রাথমিক পর্যায়ে, অর্থাৎ ক্ষুদ্রতর পরিসরে এ কর্মসূচির শুরু হয়েছিল। পরের সব সরকার একে এগিয়ে নিয়ে আজকের অবস্থায় এনেছে। এ কর্মসূচি তাই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার গুরুত্বও প্রমাণ করেছে। শেখ হাসিনা স্নাতক শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া অবৈতনিক করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আশা করব, তাঁর এ সদিচ্ছা শিগগিরই সরকারি প্রস্তাব হিসেবে আসবে এবং তাঁর আমলেই এ লক্ষ্য অর্জনে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে যাবে। আমাদের দেশে গরিব মানুষ অনেক। অনেকের পক্ষেই ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালানো সম্ভব হয় না, তাই অনেক কিশোর-কিশোরীরই লেখাপড়া করা সম্ভব হয় না। এ অবস্থায় সরকার যদি সব ছেলেমেয়ের জন্য স্নাতক শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক করে দেয় এবং কলেজেও সবাইকে বিনা মূল্যে পাঠ্য বই সরবরাহ করতে পারে, তাহলে দেশে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। বর্তমান সরকার যে প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে সমাপনী পরীক্ষার আয়োজন করে সব ছাত্রছাত্রীকে একটা সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে তা-ও প্রশংসনীয়। এ দেশে যেকোনো সার্টিফিকেটই মূল্যবান, বিশেষ করে নিয়মিত কাজ পাওয়ার জন্য। শিক্ষায় বিনিয়োগ রাষ্ট্রকে তুলনামূলকভাবে কম খরচে বেশি লাভবান করে। যেমন ঢাকা শহরে উত্তর থেকে দক্ষিণে যে উড়াল সড়ক (বষবাধঃবফ বীঢ়ৎবংং ধিু) করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা তৈরি করতে খরচ হবে অন্তত ৯ হাজার কোটি টাকা। আর এবার স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিনা মূল্যে বই সরবরাহ করার জন্য খরচ হচ্ছে ৫৬৮ কোটি টাকা। তবে বছর বছর ছাত্রছাত্রী সংখ্যা বাড়বে তাতে খরচও বাড়বে, কিন্তু এ-ও ঠিক, শিক্ষিত জনগোষ্ঠী দেশকে বেশি উপার্জন করে দিতে পারবে। সরকারের অন্য বড় কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়া। এটা না করলে খাদ্যমূল্য আরো অনেক বেশি হতো, এমনকি কৃষি উৎপাদনের পরিমাণও এখনকার চেয়ে কম হতো, কারণ কম এলাকায় চাষ হতো। শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে নগরাঞ্চলে জনপ্রিয়তা কিছু কমার ঝুঁকি নিয়েও গ্রামে কৃষকের ক্ষেতে সেচ দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ দিচ্ছে, তা-ও লক্ষণীয়। সার কারখানায় গ্যাস না দিয়ে তা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা এবং প্রয়োজনীয় সার বিদেশ থেকে আমদানি করার সিদ্ধান্তও সাহসিকতাপূর্ণ। এই আমদানি সম্ভব করেছে প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্স। নাগরিকের উপকার করলে তারা যে রাষ্ট্রকে তার প্রতিদান দেয় এটা তার একটা জাজ্বল্যমান প্রমাণ। তবে এভাবে সার উৎপাদন বন্ধ রাখা যাবে না খুব বেশি দিন।
গত বছর আমরা কষ্ট পেয়েছি বহু রকমভাবে। উৎকণ্ঠায় ও উদ্বেগে রেখেছে চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম। ১০ টাকা কেজি দরে মোটা চাল দেওয়ার প্রতিশ্রুতির পরও সরকারের চোখের সামনেই সে চালের দাম হয়ে গেল ৩৮ টাকা কেজি। পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা। সয়াবিন তেলের লিটার ১০৪। টেট্রা প্যাকে এক লিটার দুধ ৫০ টাকা। সদ্য গ্রাম থেকে ফিরে এসে এক আত্মীয় বললেন, 'এ কী অদ্ভুত ব্যাপার, আলু ব্যতীত ৩০ টাকা কেজি দামের নিচে কোনো সবজি দেখলাম না।' সেই আলুও ২৫ টাকা কেজি। নিম্নবিত্ত ও বেতনভুক মধ্যবিত্তরা জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে গিয়ে হাঁফিয়ে উঠেছেন। ধারকর্জ করেও হিসাব মেলাতে পারছেন না। এখন সরকার সমর্থক ব্যক্তি ও সংবাদপত্রগুলোও এ কথা বলছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সত্যিই অবনতি ঘটেছে। রাজধানী ঢাকায় গত সপ্তাহে দুটি খুন হয়েছে এমন পরিস্থিতিতে যা অবিশ্বাস্য। গত বুধবার তাঁতীবাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ী আবুল কালাম খুন হলেন। ওই এলাকায় সন্ত্রাসীরা এর আগে আরো দুজনকে হত্যা করেছে। পুলিশ তাহলে কী করল? এর দুই দিন আগে মোহাম্মদপুরে চাঁদাবাজরা হুমকি দেওয়ার পর এক দোকান মালিক পুলিশে জিডি করে দোকানে ফিরে এসে দেখেন, সন্ত্রাসীরা তাঁর কর্মচারীকে গুলি করে হত্যা করে গেছে। তাহলে পুলিশের কাছে গিয়ে তাঁর কী উপকার হলো? আর ঢাকার বাইরে আলোচিত হত্যাকাণ্ড_তা তো লেগেই আছে। এর মধ্যে আছে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফলে খুন। এসবের মধ্যে আওয়ামী লীগের হাতে নিজ দলীয় লোক খুন হওয়াও আছে অনেক, আর বিরোধী দল বিএনপির লোককে মেরে ফেলা তো আছেই। সর্বশেষ লোমহর্ষক ঘটনা যুবলীগের দ্বন্দ্বে একই জায়গায় তিন খুন। জোট সরকারের আমলে বেশি খুন হয়েছে আওয়ামী লীগের লোক। কিন্তু আওয়ামী লীগ দুই বছর ক্ষমতায় থাকার পর তো বিপরীত ধারাটা বন্ধ হতে পারে! তা হচ্ছে কই। বেড়েছে ইভ টিজিং ও হত্যাসহ নারী নির্যাতন। সম্প্রতি কোনো এক নরপশু সাত বছর বয়সী এক নারী শিশুকে ধর্ষণ করে, তাকে ক্ষতবিক্ষত করে, তারপর হত্যা করে তার মৃতদেহটি একটা ক্ষেতে ফেলে রেখে যায়। মেয়েটি এক গরিব শ্রমিকের। নরপিশাচ না হলে যে কারোর দীর্ঘনিঃশ্বাস পড়বে হতভাগিনীর মুখের ছবি দেখে। এ রকম ঘটেই চলেছে, কোথায় পুলিশ, কোথায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার চেষ্টা। রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকায়ও আজকাল শুনি গাড়ি ছিনতাইয়ের কাহিনী। এখন এমন অনেক গাড়ির মালিক আছেন, যাঁরা গাড়ির যাত্রী স্ত্রী-কন্যা ও চালকের নিরাপত্তা নিয়ে বেশি চিন্তিত থাকেন এ জন্য যে গাড়ি ছিনতাইকারীরা তাদেরই না মেরে ফেলে। কমপক্ষে গুরুতর আহত করে। অন্যদিকে জনগণের সঙ্গে পুলিশের দুর্ব্যবহার মাঝেমধ্যেই মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। সম্প্রতি গার্মেন্ট শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় পুলিশের তাড়া খেয়ে একটি অল্পবয়সী (এবং দুর্বল) নারী শ্রমিক ফুটপাতে পড়ে যায়। তখন এক বিশালবপু পুলিশ মেয়েটিকে বুটের লাথি মারতে থাকে। বহু পত্রিকায়ই এ ঘটনার ছবি বেরিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বা অন্য কোনো মন্ত্রী বা পুলিশ কর্মকর্তা এ জন্য এতটুকু দুঃখ প্রকাশ করেননি। আর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, যার অবিরাম যাত্রা শুরু হয়েছিল খালেদা জিয়ার জোট সরকারের আমলে। ক্লিনহার্ট অপারেশন দিয়ে এবং পরবর্তী সময়ে যা বেড়ে যায় র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর। অপসংস্কৃতি কুচকাওয়াজ করে এগিয়েই যাচ্ছে প্রতিদিন। সম্প্রতি এসব সম্পর্কে যখন পশ্চিমা বিশ্বে কিছু লেখালেখি হয়েছে তখন বাংলাদেশি কর্মকর্তারা বলে দিয়েছেন, 'আমরা কিছু জানি না, যা হয় ওপরের নির্দেশেই হয়।' ওদিকে আওয়ামী লীগ দলের জাতীয় সংসদ সদস্যের লাইসেন্স করা রিভলবার ব্যবহার করে তাঁরই অতিপরিচিত কাউকে খুন করা হয় তখন দেখা যায়, পুলিশ অসহায় হয়ে গেছে। আমাদের মনে হয়, সরকারের উচিত 'রাজনৈতিক বিবেচনায় করা হয়েছিল' এ অজুহাতে আওয়ামী লীগের নেতা বা কর্মী পরিচয় দানকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশের করা হত্যা মামলাসহ সব ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে, সেই নিন্দিত প্রক্রিয়াটি এখন বন্ধ করা উচিত। এভাবে মামলা প্রত্যাহার করা যে অপ্রকাশ্য খুনি ও ধর্ষকদেরও অপরাধ করতে উৎসাহী করে সেটা অনুমান করা যায় সহজেই। প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য দুর্নীতিও বেড়েছে। ১৯৯৬ সালের মতো শেয়ারবাজার আবার লাফিয়ে লাফিয়ে উঠে ধপাস করে পড়ে যাওয়া, খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধার করতে ব্যাংকগুলোর ব্যর্থতা, ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের নামে ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে শেয়ারবাজারে খাটানো, নিয়ম ভঙ্গ করে মন্ত্রীর পারিবারিক কম্পানির শেয়ারবাজারে আসা, মজুদদারি ও মুনাফাখোরির মাধ্যমে নিত্যপণ্যের বাজার থেকে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া_এ সব কিছুতেই দুর্নীতি বিদ্যমান। শুধু শুধু টিআইবির সমালোচনা করে লাভ কী?
গত বছর হতাশার আরেক বড় কারণ বিচার বিভাগে বিশৃঙ্খলা। এ বিশৃঙ্খলার বড় প্রমাণ আইন, উচ্চ আদালতের নির্দেশ এবং প্রকৃত ঘটনা জানার তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন নিম্ন আদালত কর্তৃক সরকারের বিরুদ্ধমতাবলম্বীদের গ্রেপ্তারের পরোয়ানা জারি করা ও বন্দিকে রিমান্ডে পাঠানো। এমনও ঘটেছে, জেলে আটক আছেন এমন ব্যক্তিকে সেই সময় জেলের বাইরে ঘটেছে এমন ঘটনায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এসবের প্রতিকার কই? আমাদের আছেন বিজ্ঞ আইনমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উচ্চ আদালতের শক্তিশালী বিচারকবৃন্দ, অ্যাটর্নি জেনারেল ও মানবাধিকার বিষয়ে সচেতন প্রধানমন্ত্রী। তাঁরা একটু নড়লে চড়লে তো হতো। অন্যদিকে দেশে এখন বেশ কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা আদালতের শরণাপন্ন হতে চাচ্ছেন না এই ভয়ে যে তাতে তাঁরা আরো বেশি নিগৃহীত হবেন বা ন্যায়বিচার পাবেন না। আমি এসব প্রসঙ্গে আমার দেশ পত্রিকা এবং তার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের কথা বলি বলে অনেকে বিরক্ত হন। কিন্তু এই যে আদালতের রায়ে কারাদণ্ড ভোগকারী মাহমুদুর রহমানকে ঢাকার কাশিমপুর জেল থেকে কঙ্বাজার আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় ১৫ ঘণ্টার যাত্রাপথে খেতে দেওয়া হলো না, এমনকি এক ঢোঁক পানি পান করতে দেওয়া হলো না, এটা কোন মানবিক বা ন্যায়সংগত আচরণ? আদালত নিজেই দেখুন না বিষয়টি! কোনো ব্যক্তির আদালতে সাজা হলে তার সব মানবাধিকার কি লোপ পায়? তা তো না। কিন্তু এ রকম ক্ষেত্রে আদালত ছাড়া আর কার প্রতিকার করার ক্ষমতা আছে? আমরা সাংবাদিকরাও তো ভালো নেই। জীবনযাত্রার কষ্ট তো আছেই, সঙ্গে বেকারত্বের ভয়। আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ হয়েছিল সরকারি আদেশে, এখন চলছে হাইকোর্টের হুকুমে। চ্যানেল ওয়ান টিভি বন্ধ করল বিটিআরসি। যমুনা টিভিও বন্ধ। দেশের পিএসটিএন (প্রাইভেট ফোন কম্পানির নেটওয়ার্ক) বন্ধ। এতে সরকারের কী উপকার হচ্ছে? সব কিছুর পরও আশা করব, ২০১১ সাল আমাদের সুখশান্তির বাঁকে নিয়ে আসবে। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

No comments

Powered by Blogger.