এক কোটি ডলার পর্যনত্ম এলসি খুলতে অনুমতি লাগবে না by মিজান চৌধুর

 বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে সর্বোচ্চ এক কোটি ডলারের এলসি খুলতে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংককে আদেশ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ অদেশ দেয়া হয়। ফলে এখন বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহার করে সরকারী কেনাকাটায় সর্বোচ্চ এক কোটি মার্কিন ডলার পর্যনত্ম এলসি খোলা যাবে। বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে তার উর্ধে ঋণপত্র খোলার েেত্র বাছাই কমিটির সুপারিশ নিতে হবে।
সূত্র মতে, আগে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ ডলার পর্যনত্ম এলসি খোলা যেত। তার ওপরে মুদ্রা ব্যয়ের েেত্র বাছাই কমিটির সুপারিশ নিতে হত। এখন থেকে এক কোটি ডলার পর্যনত্ম এলসি খোলার েেত্র বাছাই কমিটির কোন অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতর, পরিদফতর ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার সরকারের বা নিজেস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প বাসত্মবায়নে কেনাকাটার প্রয়োজন হয়। অনেক সরকারী কেনাকাটা এক কোটি মার্কিন ডলারের ওপরে চলে যাচ্ছে। কিন্তু সেেেত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নরসহ বাছাই কমিটির সুপারিশ নিতে হয়। ওই সুপারিশ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ৫০ লাখ ডলারের ওপরে এলসি গ্রহণ করে না। ফলে সরকারী কেনাকাটা এসব প্রক্রিয়া শেষ করতে অনেক সময় চলে যাওয়ায় উন্নয়ন প্রকল্প বাসত্মবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। সরকারের অনেক সিদ্ধানত্ম দ্রুত বাসত্মবায়ন হচ্ছে না।
এ ছাড়া আনত্মর্জাতিক বাজারে দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য প্রতি মুহূর্তে পরিবর্তনশীল। পাশাপাশি উচ্চ মূল্য থাকায় সরকারের অনেক দ্রব্য আমদানির েেত্র কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এেেত্র বিভিন্ন েেত্র সিদ্ধানত্ম নিতে বিলম্ব হচ্ছে। যার প্রভাব গিয়ে পড়ছে উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রমের ওপর। কারণ সিদ্ধানত্ম বিলম্বের কারণে উন্নয়ন প্রকল্প কাজ যথাসময়ে শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে উন্নয়ন প্রকল্প দ্রম্নত বাসত্মবায়নের জন্য সরকারী কেনাকাটায় বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে এলসি খোলার সীমা পুনরায় নির্ধারণ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে একটি অদেশ দেয়া হয়েছে। ওই আদেশে বলা হয়, উন্নয়ন প্রকল্প বাসত্মবায়ন এবং রাজস্ব বাজেটের আওতায় বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে এলসি খোলার বিষয়ে অর্থ বিভাগ গত ২০০৮ সালের ৫ মে তারিখে জারিকৃত বিধি (১৫)/২০০৮/৩১৩ নম্বর স্মারক বাতিল করা হল। একই সঙ্গে সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতর, পরিদফতর এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা সরকারের ও সংস্থার নিজেস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প বাসত্মবায়নে এবং রাজস্ব বাজেটের আওতায় ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের (এক কোটি ডলার) উর্ধর্ে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় এলসি খোলার পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর মহোদয়কে আহ্বায়ক করে গঠিত বাছাই কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করতে হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়রে উর্ধতন এক কর্মকর্তা জানান, এ আদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত সকল ব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়েছে। ব্যাংকগুলো আগে ৫০ লাখ ডলার পর্যনত্ম এলসি খোলার বিধান ছিল। এখন থেকে এক কোটি ডলার পর্যনত্ম বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে এলসি খুলবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সনত্মোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। এ প্রোপট থেকে সরকার এ সিদ্ধানত্ম নিয়েছে। এতে বিপুল পরিমাণ মজুদ বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবহার বাড়বে এবং উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দ্রম্নত বাসত্মবায়ন হবে। বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অবস্থা ভাল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সর্বশেষ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় এক হাজার ৫ কোটি মার্কিন ডলার। রিজার্ভ সনত্মোষজনক পর্যায়ে থাকার কারণে এলসি খোলার পরিমাণ বৃদ্ধির েেত্র কোন সমস্যা হবে না বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মতামত দিয়েছে। জানা গেছে, ২০০৪ সালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অবস্থা ভাল থাকায় ১০ লাখ মার্কিন ডলার ( ১ মিলিয়ন) থেকে বৃদ্ধি করে এলসি খোলার মার্জিন ৫০ লাখ ডলারে উন্নীত করা হয়। কিন্তু ফের রিজার্ভের অবস্থা খারাপ হলে এলসি মার্জিন কেটে পুনরায় ১০ লাখ ডলারে নামিয়ে আনা হয়। তৃতীয় দফায় এলসি খোলার মার্জিন বৃদ্ধি করে ১০ লাখ ডলার থেকে বৃদ্ধি করে ২০ ডলারে নির্ধারণ করা হয়। সর্বশেষ এখন রিজার্ভের শক্ত অবস্থানের কারণে এটা ১ কোটি ডলারে উন্নীত করা হলো।
সূত্র মতে, শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে পণ্য আমদানির েেত্র এলসি খোলার অঙ্কের পরিমাণ ৫ মিলিয়ন ডলার থেকে বৃদ্ধি করে ১০ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার প্রথম প্রসত্মাব দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়কে। ওই প্রসত্মাবে বলা হয়, সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে উৎপাদনের েেত্র বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। ওই আমদানির টাকার পরিমাণ ৩৫ কোটি বা ৫ মিলিয়ন ডলারের ওপরে হচ্ছে। এেেত্র ত্বরিত আমদানি করা যাচ্ছে না। কারণ নির্ধারিত টাকার ওপরে এলসির জন্য অনুমতি নিতে গিয়ে বিলম্ব হচ্ছে। এতে কাঁচামাল যথাসময় না পেঁৗছানোর কারণে সার উৎপাদনে বিঘি্নত হচ্ছে। এ ছাড়া বিদেশ থেকে ইউরিয়া সার আমদানির পরিমাণ ওই নির্ধারিত টাকার ওপরে এলসি খুলতে গিয়ে একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।

No comments

Powered by Blogger.