আঙ্গরপোতা ও দহগ্রামে এক মাসের মধ্যে বিদু্যত

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট থেকে দীর্ঘ প্রতীৰার পর আগামী ১ মাসের মধ্যে জেলার বহুল আলোচিত দহগ্রাম- আঙ্গরপোতা ছিটমহলের ১৫ হাজার গ্রাম বাসি বিদু্যত সংযোগ পেতে যাচ্ছে। এ বিদু্যত সুবিধা পেলেই পাল্টে যাবে ছিটমহল বাসীর জীবনযাত্রার মান। শিৰা, কৃষি ও স্বাস্থ্য সেবায় পাল্টে যাবে ছিটমহলবাসীর জীবন চিত্র। ফলে এখানে বিকশিত হবে পর্যটন শিল্প।
জানা গেছে, সর্বশেষ ৮ জানুয়ারির তিন বিঘা করিডরে বিডিআর ও বিএসএফের মধ্যে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে এক পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে দু'দেশের সীমানত্ম রৰীবাহিনী সিদ্ধানত্মে পেঁৗছেছে যে, দেশের বহুল আলোচিত দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহলে তিন বিঘা করিডর দিয়ে বিদু্যত সংযোগ দেয়া হবে। এ বিদু্যত সংযোগ পানবাড়ি বিওপি ক্যাম্পের পাশ দিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের মাধ্যমে যাবে বলে ভারতীয় সীমানত্ম রৰীবাহিনী রাজি হয়েছে। ১ মাসের মধ্যে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহলের বাসিন্দারা বিদু্যত সুবিধা পেতে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরের অর্জন হিসেবে একে দেখছেন ছিটমহলবাসী।
১৯৯২ সালের ২৬ জুন ৩ বিঘা করিডরের মাধ্যমে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহলবাসী সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যনত্ম ১ ঘণ্টা পর পর করিডরের গেট বন্ধ রাখার শর্ত সপৰে মূল ভূখ-ে যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত পেয়ে আসছিল। ১৯৯৬ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ফলে তাঁর হসত্মৰেপে সেই সময় ভারত সরকার করিডরের গেট শুধু রাতে বন্ধ রেখে সারাদিনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। সেই সময়ের সরকার দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহলে ১৫ হাজার গ্রামবাসীর জন্য ছিটমহলের ভেতরে ১০ শয্যার ১টি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করে। এ হাসপাতালে ১টি এ্যাম্বুলেন্স, আধুনিক প্যাথলজিক্যাল পরীৰাগারের যন্ত্রপাতি স্থাপন, পযর্াপ্ত ওষুধ বরাদ্দ, নার্স ও চিকিৎসক নিয়োগ করে। হাসপাতালে ও ছিটমহলে বিদু্যত সংযোগের বৈদু্যতিক খুঁটি ও কেবল টানানো হয়। করিডরের শেষ সীমানা পর্যনত্ম বৈদু্যতিক খুঁটি স্থাপন করে তার টানানো রয়েছে। কিন্তু পরবতর্ীতে বিএনপি সরকার ৰমতায় এসে এ ছিটমহলের উন্নয়নে শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া কাজকে এগিয়ে নিয়ে যায়নি। ফলে দীর্ঘদিনেও ছিটমহলবাসীর বৈদু্যতিক খুঁটিগুলোতে বিদু্যত সংযোগ হয়নি। বরং ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ৰমতায় এলে ছিটমহলটির হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা বদলি নিয়ে চলে যায়। হাসপাতালের ওষুধের বরাদ্দ বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে হাসপাতালটি ও হাসপাতালের আধুনিক যন্ত্রপাতি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে হাসপাতালটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্তমান মহাজোট সরকার ৰমতায় এলে আবারও ছিটমহলবাসী উন্নয়নের স্বপ্ন দেখতে শুরম্ন করেছে। এ উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে ছিটমহলের বিদু্যতায়ন। ১ মাসের মধ্যে বিদু্যত সংযোগ পাওয়ার মধ্য দিয়ে ছিটমহলবাসীর দর্ীঘদিন একটি দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে। ছিটমহলের বাসিন্দা মোঃ আব্দুল জব্বার (৬৫) পেশায় একজন ৰদ্র ব্যবসায়ী তিনি এ অর্জনকে শেখ হাসিনার ভারত সফরের অর্জন হিসেবে দেখছেন। স্থানীয় দহগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী মর্জিনা জানান, বিদু্যত আসছে জেনে খুব ভাল লাগছে আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি কম্পিউটার শিখতে পারম্নব।
৩১ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আসলাম হোসেন জানান, পানবাড়ি হয়ে তিনবিঘা করিডরের মাটির নিচ দিয়ে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতায় বিদু্যত সংযোগ নেয়ার ব্যাপারে ৮ জানুয়ারি তিন বিঘা করিডরে পতাকা বৈঠকে সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়।
দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, বিদু্যতের সংযোগের জন্য পানবাড়ি বিডিআর ক্যাম্পে সরঞ্জাম এনে রাখা হয়েছে। ১ মাসের মধ্যে ছিটমহলবাসী বিদু্যত সুবিধা পেতে যাচ্ছে। এ বিদু্যতের আলো গ্রামটিকে পাল্টে দেবে। ছিটমহলবাসীর কৃষি, শিৰা, স্বাস্থ্য ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান রাখবে। তিনি গ্রামটিকে পর্যটন গ্রামের রূপানত্মরের দাবি জানান।
লালমনিরহাট ২ আসনের এমপি প্রাথমিক ও গণশিৰা প্রতিমন্ত্রী মোঃ মোতাহার হোসেন লালমনিরহাটে তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রম্নতিতে বলেছিলেন তাঁর সরকার ৰমতায় গেলে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহলের সমস্যাগুলোর স্থায়ীভাবে সমাধান করবেন। বিদু্যত সমস্যার সমাধান পূরণ হওয়ায় তাঁর সরকারের নির্বাচনী ওয়াদার ১টি পূরণ হচ্ছে বলে স্থানীয় জনগণ মনে করেন।
লালমনিরহাট-৩ আসনের এমপি বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি জানান, তিন বিঘা করিডরে পর্যটন শিল্প বিকাশে সম্ভাব্য সকল পদৰেপ নেয়া হবে। তিনি আরও জানান, পাটগ্রামে তিন বিঘা করিডরে, ইমিগ্রশন রম্নট ও বুড়িমারী স্থল বন্দর বয়েছে। তাই পাটগ্রামে পর্যটনের আওতায় হোটেল মোটেল নির্মাণ করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.