ভারত-কন্যা ও বাংলাদেশী কন্যারা by মমতাজ লতিফ

ভারত-কন্যা ও বাংলাদেশের হাজার হাজার ধর্ষিত, যৌতুকের বলি কন্যারা, এ্যাসিড-সন্ত্রাসের বলি, স্বামী-শাশুড়ি নামক পশু-পিশাচীদের দ্বারা অকারণে, তুচ্ছ কারণে সহিংসতার বলি কন্যারা তোমাদের জন্য কিছু করতে না পারার জন্য ক্ষমা চাই।
ভারত জুড়ে সৃষ্ট শোক যা বাংলাদেশের সচেতন নারী-পুরুষকেও গভীরভাবে স্পর্শ করেছে, এর ফলে এ উপমহাদেশ কি আর একটু ভাল থাকতে পারবে? গত ক’দিন আগেও তো একজন ধর্ষিত বালিকা আত্মহত্যা করলে এলাকার মোল্লা-ফতোয়াবাজ ফতোয়া দিয়ে দিল তার জানাজা হতে পারবে না এবং স্থানীয় গোরস্তানে তার কবর দেয়া যাবে না। এই একুশ শতকে এই তথ্য-প্রযুক্তির যুগে ওই ধর্ষণ-সমর্থক মোল্লা-মৌলবীর দল এখনও কতখানি নারীবিরোধী কতখানি নারীনির্যাতনকারী এবং নির্মম হৃদয়ের বাস্তব উদাহরণ সৃষ্টি করল, এত বড় অপরাধ করেও এবং পার পেয়ে যাচ্ছে, দেখে নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছি! কেন আমরা আমাদের কন্যাদের নরপশুদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারছি না? ভারতে, নয়াদিল্লীর রাজপথে, মুম্বাইয়ে হাজার হাজার শোকার্ত তরুণ, তরুণী, নারী, পুরুষ দাবি তুলেছে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করার জন্য দোষীদের সর্বোচ্চ দ- দিতে হবে, পুলিশের নীতি-আচরণ বদলাতে হবে, নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে কাজ করতে হবে।
প্রশ্ন এখানেই, হাজার বছরের প্রাচীন সংস্কার দ্বারা প্রভাবান্বিত নারী যেখানে কন্যাসন্তান চাইতে পারছে না, স্বামী ও শাশুড়ির দাবিতে পুত্র সন্তানের জন্ম দিতে বাধ্য হয়, তখন অসচেতনভাবে সে নারীও তার পুত্রবধূর কাছে পুত্রসন্তানই দাবি করে। নারী অবস্থান নেয় নারীর বিরুদ্ধে। প্রশ্ন ওঠা খুবই সঙ্গত যে, জগতের উদ্ধার যার হাতে, যিনি সব নারী পুরুষের দুর্গতিনাশিনী, যিনি অসুর বধ করে পৃথিবীতে অসুর মুক্ত করেন, যিনি মা কালী হয়ে মানুষের অমঙ্গল দূর করেন, যিনি অন্নপূর্ণা হয়ে অন্ন জোগান তারা তো নারী। এ নারীর কাছে সব পুরুষ নারীই তো আশীর্বাদপ্রার্থী! উপমহাদেশে যে ধর্ম, যে মহাকাব্য মহাভারত, রামায়ণ রচিত হয়েছিল সেখানে সর্বত্র নারী স্বাধীন, কুন্তি, গান্ধারী দ্রৌপদী, অহল্যা, চিত্রাঙ্গদা, সীতা এদের মধ্যে দৃশ্যমান হয় আজকের অনেক দৃপ্ত, দৃঢ়চেতা নারীদের চারিত্র্য বৈশিষ্ট্য! যদিও মহাভারতে পাশাখেলায় দ্রৌপদীকে বাজি ধরতে দেখা যায় স্বামী যুধিষ্ঠিরকে, রামায়ণে সীতাকে অপহৃত হতে এবং তার দৈহিক পবিত্রতার অগ্নিপরীক্ষা দিতে দেখা যায়, তবুও দ্রৌপদীর পক্ষে স্বামী গ্রহণ সমাজে অপ্রচলিত প্রথা নয় বলেই গণ্য হয়। প্রজাদের মুখ বন্ধ করার কৌশল হিসেবে রাজা রাম সীতাকে যে অগ্নিপরীক্ষার ভেতর দিয়ে পবিত্রতা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত দেয়, সেটিকে নারীর প্রতি যতই অবমাননাকর মনে হোক না কেন তা কি এই বর্তমান আধুনিক শিক্ষা ও তথ্য-প্রযুক্তির যুগে সৌদি আরবে ধর্ষিতাকে বা প্রেমিকের সঙ্গে সহবাসের শাস্তি হিসেবে পাথর ছুড়ে হত্যা করার চেয়ে কম নির্মমই মনে হয় না? অগ্নিপরীক্ষা অবশ্যই ছিল রূপকার্থে। কিন্তু সীতার আত্মমর্যাদা বোধের যে পরিচয় তার মাতৃরূপী মৃত্তিকার গর্ভে চির প্রস্থানের মধ্যে পাই, সেটি যেমন আধুনিক, তেমনই দৃঢ় আত্মমর্যাদাবোধের পরিচায়ক। এই নারীরা আর যাই হোক অন্দরমহলের সোনার শিকলে বাঁধা বেগম রোকেয়ার নারীদের মতো নয়। প্রাচীন নারীরা যখন মা জননী, জগৎ জননী হয়ে উঠেছিল, তখন তাদেরকে অবগুণ্ঠনে, অন্দর মহলে বন্দী করল কারা? সে ইতিহাস এখানে নয়।
আজ যখন ভারতের রাজধানী দিল্লীতে একজন তরুণী চলন্তবাসে তার ছেলে বন্ধুসহ ছয় গু-ার কবলে পড়ে, ধর্ষিত শুধু নয় লোহার রড দ্বারা চরমভাবে নির্যাতিত হয়, যে নির্যাতনে তার মস্তিষ্ক, অন্ত্র পর্যন্ত ভীষণভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়, যা দেখে চিকিৎসকরা বিমূঢ় হয়েছেন এবং তখন তাঁরা একের পর এক অস্ত্রোপচার করেও ওর অবস্থার কোন উন্নতি ঘটাতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন এবং জখমের গভীরতা নিয়ে বিস্ময় ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এ্যান্টি বায়োটিকের ম্যাক্সিমাম ডোজ দিয়েও গুরুতর অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারেননি, তারপরও ভারত ও পৃথিবীর সব মানুষের সাথে আমাদেরও অলৌকিক কোন ঘটনার জন্য প্রার্থনা ছিল যা তের দিনের লড়াইয়ের পর শেষ হয়ে গেল! তরুণী মেয়েটি যে পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিল প্রায় তেমনই পৈশাচিক বর্বরতার শিকার হয়েছিল হাতিরপুলে মোতালেব প্লাজার পাশের একটি হোটেলের কক্ষে একটি মফস্বল থেকে আগত কিশোরী যে মোবাইলের সূত্রে পরিচয় হওয়া এক প্রেমিক খুনীর হাতে খ--বিখ-িত হয়েছিল! পাশের বাড়ির ছাদ থেকে পাওয়া সরল বিশ্বাসী বালিকার পায়ের ছোট টুকরো নিয়ে কাকদের জমায়েত ওই ঘটনাটির খবর দেয়! জানি না, অন্য অনেক ধর্ষকের মত, খুনী-ধর্ষকদের মতো ঐ খুনীও জামিনে বেরিয়ে পলাতক কি না, যা আমরা বার বার শুনতে চাই না। ভারতে ক্ষুব্ধ জনগণ রাজনীতিবিদ, পুলিশ এবং সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ও নিরাপত্তা নীতির পরিবর্তন দাবী করেছে। কেননা, আমরা লক্ষ্য করেছি ভারতের প্রেসিডেন্ট অত্যন্ত বিজ্ঞ রাজনীতিক প্রণব মুখার্জীর পুত্র মেয়েদের আধুনিক পোশাক, মেকআপের প্রতি কটাক্ষ করে যে মন্তব্য করেছে তাতে আমাদের দেশেরও একটি গোঁড়া প্রাচীনপন্থী গোষ্ঠীর নারীর ধর্ষিত হবার কারণ হিসেবে নারীর আধুনিক পোশাক ও বেশবাসকে চিহ্নিত করার প্রবণতাকে প্রকাশ পেতে দেখি যা ধর্ষক এবং নারী ও দরিদ্র মানুষের স্বার্থবিরোধী ফতোয়াবাজদেরই উৎসাহিত করে! ভারতে কয়েক হাজার বছর আগে অজন্তা ও ইলোরার খোদাই কাজে শিল্পীরা সঙ্গমদৃশ্যকে অত্যন্ত স্বাভাবিক জীবনযাত্রার একটি দিক হিসেবে ভাস্কর্যের একটি বিষয় হিসেবে গ্রহণ করেছিল! নর-নারীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রার অঙ্গ যৌনজীবনকে কেন্দ্র করে প্রণীত হয়েছে কামসূত্র! এর বিপরীতে, সৌদি আরবের, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দেখা যায় চরমভাবে নারীরা ক্ষমতাহীন ও নির্যাতিত! এখন তো পিতা, স্বামী, ভাই ছাড়া আরবী নারীর কাছে অন্য পুরুষেরা বেগানা পুরুষ, দেখা-সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ! এদিকে অন্দরমহলে চলছে ঝি-চাকরানী গৃহকর্মীদের ওপর নিয়মিত ধর্ষণ যা স্ত্রীদের কাছেও রীতি হিসেবে গ্রহণযোগ্য! চৌদ্দ-পনের বছর বয়সের কিশোরদের যৌনকর্মে দীক্ষা দিতে ঐ গৃহকর্মীদের বাধ্য করা হয়! আমাদের দেশের, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স, শ্রীলঙ্কার গৃহকর্মীদের মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মের সঙ্গে মালিক ও মালিকপুত্রদের সঙ্গে যৌনমিলন অন্তর্ভুক্ত! অথচ অন্দরের বাইরে মেয়েরা এ কাজ করলে মৃত্যুদ-।
নারীর ওপর যৌন নির্যাতনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ নামে একটি সংস্থা। এ প্রতিবেদনে ছোট কন্যাশিশু তার বাবা, মামার দ্বারা শিশু বয়স থেকে কিছুই না বুঝে যে প্রক্রিয়ায় প্রতিরাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছিল, তা পাঠ করে নিজেকে মানুষ নামধারী নর্দমার কীট মনে হয়েছিল। বড় হয়ে মেয়েটি সবরকম পুরুষ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে বান্ধবীর সঙ্গে বসবাস করছিল! দীর্ঘকাল যাবত সমাজের দেহের গোপন নানা রোগের মধ্যে বড় রোগ ধর্ষণ। নারী, সে শিশু থেকে প্রৌঢ়, সব বয়সে যে সব পুরুষের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়, আমরা স্তম্ভিত হয়ে দেখেছি, জেনেছি যে
* তাদের মধ্যে শিশু-কিশোরীরা নির্যাতিত হয়েছে তাদের খুব কাছের স্বজনদের দ্বারা এর মধ্যে পিতাও অন্তর্ভুক্ত। মামা, চাচা, খালু, তুতো ভাই, পাড়ার মোল্লা, মৌলবী, সমাজপতি, প্রাইভেট টিউটর, ডাক্তার, ওঝা, গৃহকর্তা, কর্মক্ষেত্রে বস, মালিক-কর্মকর্তা, কর্মচারী, চালক কে মেয়েদেরকে ধর্ষণ, না হয় শ্লীলতাহানি না করে?
* সাধারণভাবে দেখা যায়, পারিবারিক ধর্ষকরা মুসলমানদের মধ্যে সংখ্যায় অনেক বেশি। পাকিস্তানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশে, আফ্রিকার বেশ কিছু মুসলিমপ্রধান দেশে ধর্ষণের ঘটনা খুব বেশি যা নারীর স্বাধীন চলাফেরা, উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ ও সমাজের নানা ক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ার প্রধান বাধা।
’৮০-৯০-এর দশকে ভারতের শহরগুলো নারীদের চলাফেরার জন্য ছিল উল্লেখজনকভাবে নিরাপদ। ২০০০ সালের পর থেকে দিল্লীতে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পায়। যে ভারত-কন্যা অসীম সাহস ও নারী দেহ নিয়ে ছয়জন পুরুষ গু-ার নির্মম নির্যাতন সহ্য করেও তের দিন বেঁচে থাকার লড়াই করেছে, সাধারণত এই উচ্চ মধ্যশ্রেণীর উচ্চ শিক্ষা গ্রহণরত আধুনিক মেয়েরা ধর্ষণের শিকার কম হয়ে থাকে তাদের সমবয়সী গ্রামীণ ও শহরে নিম্নবিত্তের তরুণীদের তুলনায়। যেখানেই হোক না কেন মানতে হবে, ধর্ষণ একটি চরম নির্যাতন যা নারীর মানসিক পঙ্গুত্বের জন্ম দেয় যা হয় দীর্ঘকালীন অথবা চিরস্থায়ী। কিভাবে এই ব্যাধির হার কমানো যায়, সে উপায় খুঁজতে হবে। ভারতের এই ঘটনায় চালক ও সহযোগীরা মাতাল ও নেশাগ্রস্ত ছিল বলে ভারতে যত্রতত্র মদ-নেশার দোকান নিয়ন্ত্রণের দাবি উঠেছে। সম্ভবত আমাদের দেশের বাস-ট্রাক চালকরাও নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালায়, তবে এরা বেপরোয়া গাড়ি চালানোর ফলে দেশের রাজপথে ও হাইওয়েতে দুর্ঘটনার হার এত বেশি, কিন্তু এদের মধ্যে নারী যাত্রী ধর্ষণ নিয়ে তেমন খবর শোনা যায় না, যতটা ধর্ষণে (গৃহকর্মীদের) গৃহকর্তা ও যুবকপুত্রদের ভূমিকা উঠে এসেছে। সম্ভবত সৌদি পুরুষদের মতো অথবা প্রাচীন সামন্ত জমিদারদের যেমন গৃহকর্মীদের যৌনদাসী গণ্য করে ব্যবহার করার নিয়ম ছিল, সে মানসিকতা এখনও আমাদের মধ্যবিত্ত কৃষিজীবী বা চাকরিজীবী পুুরুষদের মধ্যে রয়ে গেছে। এমনই একজন সহকর্মী বলে উঠেছিল, ‘আচ্ছা, আমরা কি বাড়ির চাকর বা গাড়ির ড্রাইভারের সঙ্গে বিছানায় যাব? এমন রুচি কি হবে আমাদের?’ বলা বাহুল্য, রুচিতে মেয়েরা পুরুষের অনেক ওপরে।
আমার গভীর বিশ্বাস, অন্তত আমাদের দেশের গ্রামে-মফস্বলে যে একশ্রেণীর ফতোয়াবাজ মোল্লা মৌলবী-চেয়ারম্যান রয়েছে তারা প্রধানত দরিদ্র পুরুষের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের ঘোরতর শত্রু ও বিরোধী। এরা দরিদ্র নারী-পুরুষকে ফতোয়া দিয়ে সমাজচ্যুত করে, সামাজিক অনুষ্ঠান ক্রিয়াকর্ম থেকে বঞ্চিত করে ওদেরকে অন্যায় ফতোয়া বা ওদের ইচ্ছার কাছে নতি স্বীকারে বাধ্য করে, আর একটি হলো ‘হিল্লা’ বিয়ের মাধ্যমে অপরের স্ত্রীর সঙ্গে যৌনকর্ম করার গোপন ইচ্ছা পূরণ, এছাড়া ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষিতার বিয়ের ব্যবস্থা করে একটি মেয়েকে মানসিকভাবে ধর্ষকের কাছে হেয় করে রাখা এদের লক্ষ্য। সবশেষটি, গরিবের মেয়ে পড়াশোনা করবে কেন? পড়াশোনা করে সে রোজগার করলে গরিব ফতোয়াবাজের কথা শুনবে কেন? পড়াশোনা জানা আয় রোজগার করা মেয়েরা ফতোয়াবাজদের মান্য করবে না এতো বাস্তব সত্য!
সুতরাং ধর্ষণ ঠেকাতে প্রথমেই ধর্ষকের সমর্থক ও ধর্ষকের ক্ষতিপূরণের অর্থলোভী, দরিদ্র নারী-পুরুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা খেলে যারা সেই অশিক্ষিত, অল্প শিক্ষিত ধুরন্ধর ফতোয়াবাজদের যে কোন ফতোয়া দানকে বে-আইনী গণ্য করতে হবে। দ্বিতীয়ত, ফতোয়া দেবার সঙ্গে সঙ্গে এদের নেতা ও সহযোগীদের গ্রেফতার করে বিচার করতে হবে এবং ফতোয়ার জন্য গুরুদ- প্রদানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তৃতীয়ত, পাড়ায় পাড়ায় কিশোরী-তরুণীদের উত্ত্যক্ত করে এমন বেকার নেশাগ্রস্ত বখাটে তরুণদের স্থানীয় থানায় তালিকা রেখে তাদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করতে হবে, সাপ্তাহিক হাজিরার ব্যবস্থাও রাখতে হবে, প্রয়োজনে গ্রেফতার করে পাড়ার মেয়েদের যাতায়াত, তাদের ও তাদের বাবা-ভাইদের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পুলিশের আত্মীয় বা সরকারী মন্ত্রী-সাংসদদের আত্মীয় হলে তা মিডিয়ায় বেশি করে প্রচার করতে হবে এবং দ্রুত জামিন অযোগ্য আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারী সংস্থাকে উদ্যোগী হতে হবে। ফতোয়াবাজ ব্যক্তিদের অতীত জীবনে অবশ্যই যুদ্ধাপরাধী দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার তথ্য পাওয়া যাবে। মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী কোন ব্যক্তি দরিদ্র নারী-পুরুষের জীবন ধ্বংস করতে শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী কিশোরী তরুণীর উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখা রুদ্ধ করতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধ কখনও নারী বিরোধিতার জন্ম দেয়নি, দেবে না। ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকদের কাছেই শোনা যায় নারী নেতৃত্ব মানা যায় না। ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে ভিত্তি করেই ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে দেশের দরিদ্র নারী-পুরুষের ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়া বন্ধ করে স্বাধীন দেশকে অনুন্নত রাখতেই কাজ করছে এসব ফতোয়াবাজের দল। ডিজিটাল বাংলাদেশ আর ফতোয়া, নারী ধর্ষণ কি পাশাপাশি চলতে পারে? তরুণরা নিজেদের প্রশ্ন করুন।

No comments

Powered by Blogger.