আজকের নারী চিরন্তনী

আজকের নারী পুরুষের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলে জীবনের পথে। সে যেমন বাইরের কাজে দক্ষ, সংসার পালনেও তার ক্ষমতা অপরিসীম। সন্তানের প্রতি তার যেমন দৃষ্টি আছে, স্বামীর প্রতিও তার সমান আগ্রহ।
তাই নিজেকে দেখার দায়িত্ব এবং কর্তব্য আজকের নারীর সবার আগে। আর ত্বক ও চুল একজন নারীর অতি মূল্যবান সম্পদ। একজন নারী যতই সুবেশা হোন না কেন ত্বক বিশেষ করে চুল ভাল না হলে মেয়েদের সব সৌন্দর্যই মাটি হয়ে যায়। ইংরেজিতে তাই চুলের আরেক নাম ‘ক্রাউনিং গ্লোরি’। আপনার ক্রাউনিং গ্লোরির আরও ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে দরকার ভাল খাওয়া-দাওয়া, সঠিক ব্যায়াম ও মনের প্রশান্তি। কাঁচা ফলমূল, শাকসবজি, কম তেল মসলা যেমন স্বাস্থ্য ভাল রাখে তেমনি চুলের জৌলুস বৃদ্ধি করে।
এছাড়া চুল নিয়মিত পরিষ্কার করাও একান্ত প্রয়োজন। আর চুলের পরিচর্যা মৌসুম অনুযায়ী হওয়া প্রয়োজন। কারণ চুল মৌসুম বদলের সঙ্গে বদলে যায়। গরমের সময় তেলতেলে হয়ে যায়। বর্ষাকালে এরা বাতাস থেকে আর্দ্রতা গ্রহণ করে এবং আঠালো হয়ে যায়। যখন শীত পড়ে তখন চুল রুক্ষ হয়ে ওঠে এবং খুশকির প্রবণতা দেখা দেয়। খুশকির জন্য প্রাকৃতিক উপকরণ যেমন লেবু যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন যা খুশকির সঙ্গে লড়াই করবে অথচ আপনার চুলের কোন ক্ষতি হবে না। সুতরাং প্রাকৃতিক কন্ডিশনার যুক্ত কোন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন যাতে কোন কড়া কেমিক্যাল নেই। এটা রুক্ষ চুলকে নরম করবে এবং প্রয়োজনীয় তেলও যোগাবে যা চুলকে গোড়া থেকে পুষ্টি দেবে।
শ্যাম্পু করার সময় আঙুল দিয়ে খুব জোরে শাখা ঘষবেন না। এতে গোড়া নড়ে যায়, চুল ফেটে যায় এবং শেষমেশ পড়ে যেতে শুরু করে। রাতে মাথায় নারিকেল তেল, হেনা আমলকী আর পাতিলেবু মিশিয়ে লাগাবার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন সেই রকম শ্যাম্পু ব্যবহার করুন যা প্রাকৃতিক এবং যাতে কোন ক্ষতিকর কেমিক্যাল নেই। তেল দিয়ে ম্যাসাজ করার পর গরম ভিজে তোয়ালে মাথায় পেঁচিয়ে রাখলে চুল রুক্ষতা থেকে মুক্তি পাবে। ১৫ দিনে একবার করলেই হবে।
নিয়মিত তেল মাখা একান্তই প্রয়োজন। কেউ যদি তেল মেখে বাইরে না বেরোতে চান তবে আগের রাতে তেল মেখে পরের দিন শ্যাম্পু করে নিতে পারেন। আপনি যে তেল ব্যবহার করেন তার সঙ্গে ভিটামিন ই যদি মিশিয়ে নেন তাহলে আপনার চুলের পুষ্টির পক্ষে হবে অত্যন্ত উপকারী। ত্বকের মতোই চুলের জন্যও ভিটামিন ই একটি অপরিহার্য উপকরণ। ভিটামিন ই মিশ্রিত তেল ইদানীং বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, সেটিও ব্যবহার করতে পারেন। চুলের স্টাইলের জন্য নাকি তেল মাখা নিষেধ। কিন্তু চটচটে হয় না হালকা ও ফুরফুরে থাকে, আর স্টাইলও করা যায সুন্দরভাবে। তা চুল ছোট হোক আর বড়ই হোক।
আজকের নারী যেমন চুলের যতœ করে নিজেদের সুন্দর রাখতে চেষ্টা করেন, তেমনি তারা স্টাইলিশ এবং ফ্যাশনেবল। সালোয়ার কুর্তাতে সজ্জিতা বাইরে বেরোনোর জন্য তারা সপ্রতিভ পাশাপাশি শাড়িতে তারা সচ্ছল, তেমনই পাশ্চাত্য পোশাকেও তাদের অনায়াস বিচরণ। তাই আজকের নারী উৎসবে কিংবা বিয়েতে যেমন পুরনো ধাঁচের খোঁপা বা জুড়া কাঁধে, তেমন কর্মক্ষেত্রে পার্টিতে তার আধুনিক স্টাইলের চুল লোকের নজর কাড়ে। সুতরাং আজকের নারী, চিরন্তনী।
মেরীনা চৌধুরী

No comments

Powered by Blogger.