কনকনে ঠা-ায় স্থবির জনজীবন, হেডলাইট জ্বেলে যান চলাচল- ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচলে বিঘ্ন, বিমানের সিডিউল বিপর্যয়
কনকনে শীত, ঠা-া বাতাস ও ঘন কুয়াশায় ক্রমেই অসহায় হয়ে পড়েছে দেশবাসী। শৈত্যপ্রবাহের উন্নতি ঘটলেও রয়ে গেছে শীতের তীব্রতা। দেশের অধিকাংশ এলাকায় সূর্যের দেখা মিলছে না। ঘন কুয়াশায় জল, স্থল ও আকাশপথে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা রয়েই গেছে।
কুয়াশায় সড়কপথে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা করে বন্ধ ছিল দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া এবং মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরম্নটে ফেরি চলাচল। শীতজনিত রোগে মৃতু্যর ঘটনা অব্যাহত থাকে বৃহস্পতিবারও। এদিন ফরিদপুরে নতুন করে একজনের মৃতু্য ঘটে। এ নিয়ে গত ২৫ দিনে শীতে মৃতু্যর সংখ্যা দাঁড়াল এক শ' তিন জনে। তবে শীত ও কুয়াশার মাত্রা কম থাকায় বৃহস্পতিবার খানিকটা স্বসত্মিতে কাটায় রাজধানীবাসী।আবহাওয়া অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বুধবারের তুলনায় ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধি পায়। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে যায় ২ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার দেশের সব ক'টি বিভাগেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বুধবারের তুলনায় ঢাকা বিভাগে শূন্য দশমিক ৪, চট্টগ্রামে ৩ দশমিক ৪, রাজশাহীতে ২ দশমিক ২, খুলনায় ৪ দশমিক ৬ এবং সিলেট বিভাগে ১ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেড়ে যায়। সূত্রটি আরও জানায়, শ্রীমঙ্গল অঞ্চলসহ রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের ওপর বিরাজমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে। যশোর, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ অঞ্চলসহ রাজশাহী বিভাগে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে মাটি উত্তাপ গ্রহণ করতে পারছে না। ফলে তাপমাত্রার উন্নতি ঘটলেও বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা জানান, তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। কমতে থাকবে শীতের তীব্রতা। তবে চলতি মাসে শীত অনুভূত হবেই। আর মাসের শেষদিকে তাপমাত্রা নিচে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাজধানীর আকাশে দীর্ঘ সময়ের জন্য দেখা যায় সূর্যের হাসি। সকাল সাড়ে আটটার মধ্যেই কেটে যায় কুয়াশা। বেরিয়ে আসে সূর্যের আলো। বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যনত্ম রোদ থাকে নগরীর আকাশে। ফিরে আসে অনেকখানি স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। নগরীর ছিন্নমূল মানুষ সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়।
নিজস্ব সংবাদদাতা ফরিদপুর থেকে জানান, শীতের তীব্রতায় অসহায় হয়ে পড়েছে মানুষ। গত কয়েকদিন ধরে জেলায় সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। প্রতিকূল আবহাওয়া উপো করে মাঠে নেমেও চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে দিনমজুরদের। শীতজনিত রোগে আক্রানত্ম হয়ে চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের মধু ফকিরের ডাঙ্গী গ্রামের দিনমজুর সদানন্দ ব্যাপারি (৪৫) মারা যান। এ নিয়ে জেলায় শীতে ৫ জনের মৃতু্য ঘটল। প্রশাসনের প থেকে শীতবস্ত্র বিতরণে কোন তৎপরতা ল্য করা যায়নি। বেসরকারীভাবেও কোন সাহায্য না আসায় শীতার্তরা এবার বেশি অসহায়।
নিজস্ব সংবাদদাতা রাঙ্গামাটি থেকে জানান, বৃহস্পতিবার চলতি মৌসুমের সবচেয়ে তীব্র শীত অনুভূত হয় রাঙ্গামাটিতে। দরিদ্র লোকজনের দুর্ভোগের মাত্রাও বেড়ে গেছে। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিার্থীর উপস্থিতি ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তী শহরের বিভিন্ন স্থানে দরিদ্র ও দুস্থ শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন। সরকারের ত্রাণ অধিদফতর থেকে ৫শ' কম্বল প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে শীতবস্ত্র ক্রয় করে দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য রাঙ্গামাটি জেলার ১০ উপজেলার প্রতিটিতে ৫০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
No comments