চলচ্চিত্র উৎসব শুরম্ন, সেলিম আল দীন স্মরণ জাবিতে- সংস্কৃতি সংবাদ

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য বহু দেশের ছবি দেখার অপূর্ব সুযোগ করে দিতে বৃহস্পতিবার থেকে শুরম্ন হলো একাদশ ঢাকা আনত্মর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি আয়োজিত উৎসবে প্রথমদিনই যোগ দিয়েছেন দেশী-বিদেশী বেশ কয়েকজন নির্মাতা ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব। তাঁদের উপস্থিতিতে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে বিকেল ৪টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উৎসবে ৫০টি দেশের অর্ধ শতাধিক চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।প্রথমদিন সর্বনিম্ন ৬মিনিট থেকে সবের্াচ্চ ১শ' মিনিট দৈর্ঘ্যের মোট ২২টি ছবি দেখানো হয়। ছবিগুলোর মধ্যে কম্বোডিয়া কান্ট্রি অব স্ক্যারস, আ স্প্যান অব হ্যাভেন, হাতি কা আন্ডা, পল অব টরসাস, লাঝার, হার মেটস বয় ফ্রেন্ড, হোম, সূর্যসনত্মান, ঝড় জাইল্যা অন্যতম। এদিন দর্শক সমাগম কম হলেও পূর্ব ঘোষিত সিডিউল অনুযায়ীই চলে প্রদর্শনী।
আজ শুক্রবার থেকে জাতীয় জাদুঘর ও পাবলিক লাইব্রেরির ৩টি মিলনায়তনে দেখানো হবে চলচ্চিত্র। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যনত্ম চলবে প্রদর্শনী।
এবার উৎসবে প্রতিযোগিতা (অস্ট্রেলেশিয়া), রেট্রোস্পেক্টিভ, ট্রিবিউটস, সিনেমা অব দি ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন্স ফিল্মস, ফোকাস, ফিল্মস ফ্রম আফ্রিকা, বাংলাদেশ প্যানারোমা, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্মস ও উইমেন্স ফিল্ম মেকার্স সেশন নামে ১১ টি বিভাগ থাকছে। এছাড়াও চলচ্চিত্র বিষয়ক একাধিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে উৎসবের বিভিন্ন দিনে। উৎসবে প্রতি ছবির টিকিট মূল্য ধরা হয়েছে ৩০টাকা। এছাড়া একটি বিভাগে বিনা টিকিটে ছবি দেখতে পারবে শিশু ও তাদের অভিভাবকরা। উৎসব চলবে আগামী ২২ জানুয়ারি পর্যনত্ম।
সা'দত আলী আখন্দ পুরস্কার পেলেন সানাউল হক বাংলা একাডেমী পরিচালিত সা'দত আলী আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার ২০০৯ পেলেন কবি সানাউল হক। বৃহস্পতিবার একাডেমীর সেমিনার কৰে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। বাংলা একাডেমীর সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী তাঁর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
অফিসার্স কাবে শুরম্ন হলো আনন্দমেলা প্রতি বছরের ন্যায় এবারও অফিসার্স কাবে শুরম্ন হয়েছে বার্ষিক আনন্দমেলা। বৃহস্পতিবার এর উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। এ সময় কাবের চেয়াম্যান এম আব্দুল আজিজসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। কাবের মহিলা কমিটি ১৯৭৮ সাল থেকে এ মেলার আয়োজন করে আসছে।
এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে দেড় শতাধিক স্টল। দু'একটি প্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন হাউস থাকলেও বৃহৎ অংশজুড়ে রয়েছেন নারী উদ্যোক্তারা। মেয়েদের থ্রিপিস, শাড়ি, শাল, ওড়না, প্রসাধনী, জুতোসহ নানা বাহারি পন্যে স্টল সাজিয়েছেন তাঁরা। সকাল থেকে এসব স্টলে ছিল দর্শনাথর্ী। ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন পুরো মেলা চত্বর। তবে পছন্দের পণ্যটি চোখে পড়া মাত্রই সেটি কিনে নিতে ভুল করছিলেন না অনেকেই। ফলে প্রথমদিনই কোন কোন স্টলে ভাল বিক্রি হয়েছে। এমনি একটি স্টলের নাম 'ওয়ারিশা'। স্টলটিতে ডলার, স্ক্রিনপ্রিন্ট, মেশিন এম্ব্রয়ডারি, কারচুপি ইত্যাদি কাজ করা পোশাকই বেশি চোখে পড়ল। সূক্ষ্ম এসব কাজের পাশাপাশি কাপড়ের মানটিও ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব কারণেই স্টলের বিক্রি ভাল বলে জানালেন এর উদ্যোক্তা বৃষ্টি। নিজের স্টল নাম্বারটি 'লাকি সেভেন' জানিয়ে বললেন, বিক্রিটাও সেরকম হবে আশা করছি। ধানম-িতে এ নারী উদ্যোক্তার 'ওয়ারিশা' নামেই রয়েছে স্বতন্ত্র ফ্যাশন হাউস। সেখান থেকেও আগ্রহীরা তাঁর পছন্দের পণ্যটি সংগ্রহ করতে পারবেন বলে জানালেন তিনি। অবশ্য শুধু পোশাক নয়, বৃষ্টি স্টলে রেখেছেন পেইন্টিংস, বেবি ড্রেস, প্রসাধনীসহ নানা কিছু। এমনকি বাদ যায়নি রং ফর্সাকারী ক্রিম। নিজের উদ্ভাবিত এ ক্রিম রীতিমতো চ্যালেঞ্জ দিয়ে বিক্রি করার সময় বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হলো তাঁকে। বিক্রি শুরম্ন না হলেও আশিয়ানা নামের একটি স্টলের উদ্যোক্তা মৌসুমী সামাদকে বেশ ফুরফুরে মনে হলো। তিনি জানালেন, উত্তরায় বুটিক হাউস আছে তাঁর। সেটি নিয়ে নিজের মতো করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। এমন আরও অনেক নারী উদ্যোক্তা ও শৌখিন ফ্যাশন ডিজাইনারদের অংশগ্রহণে মেলাটি প্রাণবনত্ম হয়ে উঠেছে। তিন দিনব্যাপী মেলা কাল শনিবার শেষ হবে।
সেলিম আল দীনের নামে পাঠাগার উদ্বোধন রবীন্দ্র পরবর্তীকালের অন্যতম সেরা নাট্যকার সেলিম আল দীন। তিনি বাংলা নাটকের শাশ্বতসুর পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দিতে কাজ করে গেছেন । আধুনিক বাংলা নাটকে নতুন শিল্পরম্নচি তৈরি করেছেন তিনি। বাংলা নাটকের শাশ্বত সুর পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এবং আধুনিক বাংলা নাটকে নতুন মাত্রা যোগ করতে তিনি ছিলেন সদা সচেষ্ট। বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকার অধ্যাপক সেলিম আল দীনের দ্বিতীয় মৃতু্যবার্ষিকী উপলৰে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তরা এ সব কথা বলেন।
বেলা সাড়ে ১১টায় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের থিয়েটার ল্যাব-৪-এ বিভাগের অধ্যাপক মো. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে ড. লুৎফর রহমান 'হাবিব তানবীর ও সেলিম আল দীন' এবং ড. সাজেদুর রহমান 'নির্দেশক সেলিম আল দীন' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। উপস্থাপিত প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন নাট্যব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইফসুফ ও অধ্যাপক আফসার আহমেদ।
নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, সেলিম আল দীন তাঁর নাটকে শুধু চিরায়ত গ্রামবাংলার রূপ নয়, বরং উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর নানা কর্মকা- ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছেন। বাংলা নাটকের হাজার বছরের পুরনো কাঠামোকে ভেঙ্গে তাকে দিয়েছেন নতুনত্ব।
এর আগে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পুরনো কলাভবনে 'আচার্য সেলিম আল দীন সেমিনার লাইব্রেরি' উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির। এর পর পুরনো কলা ভবনের সামনে থেকে শোকযাত্রা বের হয়। শোকযাত্রার উদ্বোধন করেন সেলিম আল দীনের সহধর্মিণী বেগমজাদী মেহেরম্নন্নেসা সেলিম। শোকযাত্রায় নাট্যব্যক্তিত্ব ঝুনা চৌধুরী, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ম. হামিদ, পশ্চিমবঙ্গের নাট্য গবেষক নৃপেন্দ্র সাহা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। শোকযাত্রাটি সেলিম আল দীনের সমাধিস্থলে গিয়ে শেষ হয়। পরে সমাধিস্থলে পুষ্পসত্মবক অর্পণ করে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ গ্রম্নপ থিয়েটার ফেডারেশন, ঢাকা থিয়েটার, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারসহ বিভিন্ন সংগঠন। সকাল এগারোটায় প্রসত্মাবিত জহির রায়হান মিলনায়তনের গ্যালারিতে বিভিন্ন সময়ে তোলা সেলিম আল দীনের আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বেলা সাড়ে তিনটায় পুরনো কলাভবন চত্বরে মৃৎমঞ্চে সেলিম আল দীন-এর নাটক ও নাটকের গান পরিবেশন করে বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন শিার্থীরা। একই স্থানে বিকেল ৫টায় মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের চানু বয়াতীর দল পরিবেশন করে গাজীর গান। এছাড়া সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে সেলিম আল দীন রচিত বিভাগের ২০০৭ সালের তৃতীয় পর্বের শিার্থীদের প্রযোজনায় নাটক প্রাচ্য মঞ্চস্থ হয়।
লোকনাট্য গোষ্ঠীর নাট্যোৎসব উদ্বোধন বৃহস্পতিবার সকালে আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে শুরম্ন হয়েছে লোকনাট্য গোষ্ঠীর তিন দিনব্যাপী নাট্যোৎসব। সন্ধ্যায় ড. নীলিমা ইব্রাহীম মিলনায়তনে ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপল েআয়োজিত এ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক কামাল লোহানী এর উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন বাংলাদেশ গ্রম্নপ থিয়েটার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকী, নাট্যব্যক্তিত্ব এস এম মহসীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. ইসরাফিল শাহীন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম কুদ্দুস প্রমুখ। বক্তারা বলেন, গত ৪০ বছরে বিভিন্ন েেত্র সাফল্য অর্জিত হলেও নাটকের সাফল্য বিশেষভাবে উলেস্নখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং জীবন সংগ্রামের শাণিত সংলাপ নিয়ে নাটকের কুশীলবদের আনত্মর্জাতিকতার অভিমুখে দুরনত্ম অভিযাত্রা অব্যাহত থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তাঁরা। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশের নিরবচ্ছিন্ন নাট্যচর্চায় এক সহযাত্রী সংগঠন লোকনাট্য গোষ্ঠী। প্রতিষ্ঠার পর ৩২ বছরে দলটি আমাদের কি দিয়েছে, আমরা কি পেলাম _এটা বড় কথা নয়। নিরনত্মর তিন দশকের বেশি সময় সময় তারা যে মঞ্চে আলো জ্বালিয়ে চলেছে, এটাই ভাবার বিষয়। পরে তাপস সরকার নির্দেশিত 'বাবুদের তালপুকুরে' নাটকটি মঞ্চস্থ হয়।
নাজিয়া আন্দালীব প্রিমার একক চিত্রকলা প্রদর্শনী শুরম্ন আজ বেঙ্গল শিল্পালয়ে আজ শুক্রবার থেকে শুরম্ন হচ্ছে শিল্পী নাজিয়া আন্দালীব প্রিমার 'অপলক নারী' শীর্ষক একক চিত্রকলা প্রদর্শনী। সন্ধ্যায় এ প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত ইনগেবিয়র্গ স্টফরিং। বিশেষ অতিথি থাকবেন প্রফেসর এমিরিটারস ড. আনিসুজ্জামান এবং বরেণ্য শিল্পী মুর্তজা বশীর। আরও উপস্থিত থাকবেন ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। প্রদর্শনীতে মোট ৪৮টি শিল্পকর্ম থাকবে বলে বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। এতে শিল্পী নাজিয়া আন্দালীব প্রিমাসহ আয়োজক গ্যালারির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ১২ দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী চলবে ২৬ জানুয়ারি পর্যনত্ম।

No comments

Powered by Blogger.