চলচ্চিত্রে আমাদেও ইতিহাস তুলে ধরম্নন, মান বাড়ান- ঢাকা আনত্মর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধনীতে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্রে আমাদের ইতিহাস ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে এই অঙ্গনে মেধাবী, পরিশ্রমী ও সৃষ্টিশীল মানুষদের কাজ করার সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বৃহস্পতিবার একাদশ ঢাকা আনত্মর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০১০ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ আহ্বান জানান। খবর বাসসর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম প্রধান মাধ্যম চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র জীবনের কথা তুলে ধরে মানুষের স্বপ্ন এবং সংগ্রামের কথা বলে। বিনোদনের পাশাপাশি চলচ্চিত্র মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে শিৰার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
তিনি বলেন, 'চলচ্চিত্রের ভাষা সর্বজনীন। তাই দেশ-কাল ও ভাষার সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে একটি ভাল চলচ্চিত্র হয়ে যায় চিরায়ত সৃষ্টি। বাংলা চলচ্চিত্রের নান্দনিক মান আজ আগের চাইতে নিম্নমুখী উলেস্নখ করে বলেন, 'আমাদের চলচ্চিত্রের মান বাড়াতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন নির্মাতাদের আনত্মরিকতা, দায়িত্ববোধ এবং ভাল ছবি নির্মাণের আকাঙ্ৰা।' এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আধুনিক অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ওপর গুরম্নত্ব আরোপ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, বিশ্বায়নের বর্তমান পরিস্থিতিতে চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত কমর্ীবৃন্দ এই দায়িত্ববোধ থেকেই উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নান্দনিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করে যেমন দেশকে সমৃদ্ধ করবেন, ঠিক তেমনি সারাবিশ্বে বাংলা সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে মান ও মর্যাদাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি শিল্পকে নান্দনিক ও প্রযুক্তিগতভাবে বিকশিত করতে হলে এ বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের কোন বিকল্প নেই।
সরকার দেশে একটি পূর্ণাঙ্গ ফিল্ম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করে তরম্নণ প্রজন্মকে বিশ্বমানের চলচ্চিত্র কমর্ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'আমাদের শিৰিত এবং দূরদশর্ীসম্পন্ন তরম্নণ চলচ্চিত্র কমর্ীদের প্রয়োজনীয় সকল পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হবে।
বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে করা 'চলচ্চিত্র সংসদ নিয়ন্ত্রণ আইন' শীর্ষক কালাকানুনটি বাতিলের উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে সুস্থ চলচ্চিত্র সংস্কৃতির বিকাশ এবং নান্দনিক নির্মাণের যে ধারা, তা অনেকাংশই এদেশের চলচ্চিত্র সংসদগুলোর নিভর্ীক এবং নিবেদিতপ্রাণ কমর্ীদের সম্মিলিত সৎ প্রচেষ্টার ফসল।
বিগত সরকারগুলো এই মহান আন্দোলনের বেগবান ধারাকে যথার্থ পৃষ্ঠপোষকতা করেনি এবং ৰেত্রবিশেষে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা চাই, চলচ্চিত্র সংসদগুলো আরও বিকশিত হোক, চলচ্চিত্র আন্দোলনকে আরও বেগবান করম্নক।
আজকের এই চলচ্চিত্র উৎসবে বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে এবং বিশ্ব চলচ্চিত্রের বর্তমান ধারার সঙ্গে এদেশের নির্মাতা, অভিনেতা ও কলা-কুশলীরা বেশি করে পরিচিত হবেন, পাশাপাশি আমাদের চলচ্চিত্র সম্পর্কে বাইরের অতিথিরা আরও বেশি করে জানবেন। এতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আরও সমৃদ্ধ হবে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এ ধরনের উৎসব আমাদের নির্মাতাদের সামনে বিশ্ব চলচ্চিত্রকে তুলে ধরবে। আমাদের চলচ্চিত্র বিশ্ব দরবারে গৌরবের আসনে প্রতিষ্ঠিত হোক এবং বাঙালীর আবহমান সংস্কৃতির চিত্র তুলে ধরম্নক_এই কামনা করে তিনি একাদশ ঢাকা আনত্মর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০১০-এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

No comments

Powered by Blogger.