মোরালেসকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে যুক্তরাষ্ট্র-ষড়যন্ত্রের 'অকাট্য প্রমাণ' ওবামার কাছে পাঠাবে বলিভিয়া

বলিভিয়াকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে অকাট্য প্রমাণ বলিভিয়ার হাতে রয়েছে। বলিভিয়ার এক জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী এ দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এসব প্রমাণ শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছে পাঠানো হবে।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বলিভিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ করারও আহ্বান জানান। গতকাল সোমবার বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
এভো মোরালেস বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ২০০৬ সালে। দায়িত্ব নেওয়ার পরই বামপন্থী মোরালেস সরকার দেশে মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার ও কয়েকটি বিদেশি কম্পানিকে রাষ্ট্রায়ত্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। মোরালেসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধ শুরু হয় মূলত সেই সময় থেকেই। বলিভিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মোরালেস ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ফিলিপ গোল্ডবার্গকে বহিষ্কার করেন। ওই সময় বলিভিয়ায় সরকারবিরোধী আন্দোলন মাথাচাড়া দেয়। ওই আন্দোলনে যুক্তরাষ্ট্র ইন্ধন জোগাচ্ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সেই থেকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক বিরোধ লেগেই আছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই ওই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। ২০১১ সালে দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের ব্যাপারে একটি সমঝোতায় পেঁৗছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয়বিষয়ক মন্ত্রী হুয়ান র‌্যামন কুইন্তানা সাংবাদিকদের জানান, রাজধানী লা পাজে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের মোরালেসবিরোধী অনুচিত কাজের প্রমাণপত্র তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছে পাঠাবেন। ২০০৬ সাল থেকেই প্রেসিডেন্টের গৃহীত বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র স্থায়ী রূপ নিয়েছে। কুইন্তানা বলেন, 'প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সব প্রমাণ আমরা জড়ো করছি। আমরা তাঁকে (ওবামা) বলতে চাই, বলিভিয়ার বিরুদ্ধে সব ধরনের ষড়যন্ত্র বাদ দিন। আমাদের সরকারকে রাজনৈতিক আক্রমণ বন্ধ করুন।'
মোরালেস সরকারের অধীনে বলিভিয়া সামাজিক ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং মাদকবিরোধী অভিযান ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাফল্য অর্জন করলেও যুক্তরাষ্ট্র সেসবের স্বীকৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন কুইন্তানা।
গত শুক্রবার মোরালেস নিজেই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, মার্কিন এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের বিষয়টিকে পুঁজি করে বলিভিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। জ্যাকব অস্ট্রেইচার নামের ওই ব্যবসায়ীকে অর্থপাচার ও মাদক চোরাচালানের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে বলিভিয়া। দেড় বছর আটক থাকার পর বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি রয়েছেন।
মোরালেস বলিভিয়ার প্রথম আদিবাসী প্রেসিডেন্ট। নির্বাচিত হয়ে তিনি আদিবাসীদের জীবনমান উন্নয়ন ও সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণের অঙ্গীকার করেন। সেই লক্ষ্যেই সরকারের নীতিমালা প্রণয়ন করেন তিনি। লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের কট্টর সমালোচক বলে পরিচিত ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজ ও ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোররেয়ার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সূত্র : বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.