ব্লাসফেমি আইন সংশোধন ঠেকাতে পাকিস্তানে ধর্মঘট

পার্লামেন্টে ব্লাসফেমি (ধর্ম অবমাননা নিরোধ) আইন সংশোধন সংক্রান্ত বিল উত্থাপনের প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানজুড়ে ধর্মঘট পালিত হয়েছে। তবে ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, আইন সংশোধনের কোনো ইচ্ছা নেই তাদের।
পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনের আওতায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। মুহাম্মদ (সা.)-এর নামে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে ওই আইনের আওতায় সম্প্রতি এক খ্রিস্টান নারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় সেখানে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ব্লাসফেমি আইনের সমলোচনা করেছে। তাদের ভাষ্য মতে, এ আইন ইসলামী চরম পন্থাকে উৎসাহিত করছে। ক্ষমতাসীন পাকিস্তান পিপলস পার্টির এমপি এবং সাবেক তথ্যমন্ত্রী শেরি রেহমান মৃত্যুদণ্ড রহিত করার দাবিতে ব্লাসফেমি আইন সংশোধন সংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপন করেন। ব্লাসফেমি আইনের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সংশোধনী যাতে না আনা হয়_সেই দাবিতে শুক্রবার দেশব্যাপী ধর্মঘট আহ্বান করে পাকিস্তানের রক্ষণশীল ধর্মীয় দলগুলো। এর আগে সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে গত সপ্তাহে কয়েক হাজার মানুষ পাকিস্তানের বড় শহরগুলোতে বিক্ষোভ মিছিল করে।
এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের উপ-তথ্যমন্ত্রী সামসাম বোখারি ঘোষণা দেন, বিতর্কিত ব্লাসফেমি আইন সংশোধনের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই। তার পরও করাচি, লাহোর, পেশোয়ার, ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডির মতো বড় সব শহরে গতকাল ধর্মঘট পালিত হয়। ধর্মঘট উপলক্ষে গতকাল ব্যস্ত শহরগুলোর সব বাজার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। রাস্তাঘাটও ছিল ফাঁকা। করাচি ব্যবসায়ী সংগঠনের চেয়ারম্যান আতিক মীর বলেন, 'নবীজির সম্মান আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সবকিছু বন্ধ রেখেছি আমরা।' পাকিস্তানের প্রভাবশালী রক্ষণশীল মুসলিম দল সুনি্ন ইত্তেহাদ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সাহেবজাদা ফজল করিম বলেন, 'সরকার আইন সংশোধন করলে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করব আমরা।'
ব্লাসফেমির আওতায় এখনো পর্যন্ত কারো বিচার সম্পন্ন হয়নি। এ পর্যন্ত ধর্ম অবমাননার ঘটনায় ৩০ জনের বেশি ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হলেও বিচারের আগেই তারা উন্মত্ত জনতার হাতে মারা পড়েছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.