গ্যাস সংকটের শেষ কোথায়?

গ্যাস সংকট কি আরো তীব্র হবে? বিতরণের অসুবিধার কারণেই কি এ সংকট বাড়ছে? নাকি উৎপাদন বৃদ্ধি না পাওয়াটাই প্রধান কারণ? ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটিকেও বাদ দেওয়া যায় না এ প্রশ্নের ধারা থেকে।
প্রশ্নগুলো গৃহিণীরা করতে পারেন চুলায় ভাত চড়াতে না পারা কিংবা রান্নাবাড়া করতে গিয়ে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করার কারণেও। কিন্তু বাস্তবতা হলো, প্রতি শীতেই রাজধানীর গৃহিণীদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এবং প্রতিবছরই তাঁরা সরকারের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে আসছেন-শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে। কিভাবে সমাধান হবে তা-ও জানানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, গ্যাস রেশনিংয়ের বিষয়েও। এর আগে সিএনজি পাম্পগুলোতে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত গ্যাস রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করে গ্যাস সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বুক ঢাকলে তো পিঠ উদোম হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা এখানেও দেখা যাচ্ছে। গ্যাস রেশনিংয়ের উদ্যোগ নিয়ে সিএনজি বিক্রেতাদের আন্দোলনের মুখে পড়ে সরকার। শেষ পর্যন্ত রেশনিংয়ের সময় দুই ঘণ্টা কমিয়ে ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত করা হয়েছে। ফলে দুপুরে যাঁরা রান্না করতে যান তাঁদের চুলায় গ্যাস থাকে না।
বলা হচ্ছে, এ দুরবস্থা থেকে রক্ষার জন্য গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থাও দায়ী। উৎপাদন বাড়িয়েও লাভ নেই বলে কেউ কেউ মত রাখছেন। তাঁরাও সেই সরবরাহ ব্যবস্থাকেই দায়ী করতে চান। কিন্তু সরবরাহ লাইনের অপ্রতুলতার কারণেই যে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হবে-এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়। কারণ বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সিলিন্ডার পদ্ধতিতে গ্যাস সরবরাহ করা যায়। এ পদ্ধতি কার্যকর হলে অপচয় যেমন কমবে তেমনি গ্যাস সরবরাহের বিষয়টিও জটিল হবে না। কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে সিলিন্ডার সিস্টেমের প্রতি প্রতিটি সরকারেরই আগ্রহের অভাব দেখা যাচ্ছে। যদিও রাজধানীতে চার কোটি ঘনফুট দৈনিক ঘাটতি এ ব্যবস্থায় সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না, তার পরও কিছুটা হলেও সাশ্রয় হবে তা মনে করা যায়। তবে সিলিন্ডারের মাধ্যমে সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করলে মজুদ বাড়িয়ে শীতকালীন চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। তবে গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ দ্রুততর করতে হবে। তা না হলে জমে থাকা অর্ধলক্ষ আবেদনকারীর বাসায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে না এবং ভবিষ্যতে এ সংকট আরো বেড়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাই যেকোনোভাবেই হোক, সরকারকে গ্যাস সংকট মোকাবিলা করতেই হবে।

No comments

Powered by Blogger.