আসাদের শান্তি পরিকল্পনা পশ্চিমাদের প্রত্যাখ্যান

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ভাষণের নিন্দা জানিয়েছে। আসাদের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনাকে তারা 'বাস্তবতার সঙ্গে সম্পর্কহীন' বলে অভিহিত করেছে। বলেছে, এটা আসাদের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার আরেকটি প্রচেষ্টা।
তারা আসাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। তবে সিরিয়ার মিত্র হিসেবে পরিচিত ইরান আসাদের ভাষণকে স্বাগত জানিয়েছে।
আসাদ গত রবিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। বিদ্রোহীদের 'পশ্চিমাদের দাস' বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, দেশে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে কোনো সংঘাত চলছে না। চলছে দেশ ও তার শত্রুদের মধ্যে। তিনি বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ না করার জন্য বিদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান। আসাদ সংকট নিরসনের লক্ষ্যে জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে একটি সম্মেলন আহ্বান করেন। পাশাপাশি জাতীয় সনদের ব্যাপারে গণভোট করারও পরিকল্পনার কথা জানান। সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক তৎপরতার ওপরও জোর দেন তিনি। তবে বিদ্রোহীদের পশ্চিমাদের 'দাস' অভিহিত করে তিনি বলেন, 'সিরিয়া ভৃত্যদের সঙ্গে নয়, তাদের প্রভুদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়।'
গত রবিবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড এক বিবৃতিতে আসাদের বক্তব্যের আনুষ্ঠানিক নিন্দা জানান। তিনি বলেন, 'আসাদের বক্তব্য ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার আরেকটি প্রচেষ্টা। রাজনৈতিক পালাবদলের মাধ্যমে সিরিয়ার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে তিনি কিছুই করছেন না। আসাদের এ উদ্যোগ বাস্তবতাবর্জিত।' নুল্যান্ড আসাদকে অবিলম্বে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানান। ইইউয়ের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাশটন এক বিবৃতিতে বলেন, 'আসাদকে অবশ্যই সরে যেতে হবে এবং রাজনৈতিক পালাবদলের পটভূমি তৈরি করতে হবে। যুক্তরাজ্য বলেছে, আসাদের ওই বক্তব্য একেবারেই অন্তসারশূন্য।'
তবে আসাদের পরিকল্পনায় পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে ইরান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি আকবর সালেহি রবিবার এক বিবৃতিতে বলেন, 'এই (আসাদের) শান্তি পরিকল্পনা সহিংসতা, সন্ত্রাসবাদ ও যেকোনো ধরনের বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করে।'
আসাদের 'যুদ্ধাপরাধের' বিচারের পক্ষে মুরসি : বিরোধীদের পক্ষ থেকে আসাদের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে, তাতে সায় আছে মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির। গত রবিবার সিএনএনকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় হেগের আদালতে আসাদের বিচার হওয়া উচিত কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মুরসি বলেন, মুরসি বলেন, রক্তপাতের অবসানের পর সিরিয়ার লোকজন একটি স্বাধীন পার্লামেন্ট ও নিজেদের পছন্দের সরকার পাবে। এই পর্যায়টা আসলে গণমানুষের পর্যায়। মিসরে যেমনটা হয়েছে, সেখানেও তেমনটাই হবে। সূত্র : বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.