সড়কে বাজার-স্থাপনা প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা

সিরাজগঞ্জ থেকে কাজীপুর হয়ে সোনামুখী পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ আঞ্চলিক সড়কটি হাটবাজার, মাংসের দোকানসহ নানা ধরনের অবৈধ স্থাপনার মাধ্যমে দখল হয়ে যাচ্ছে। সড়কের দুই পাশে দোকানপাট ও বাড়িঘর নির্মাণ করায় সড়কটি সংকুচিত হয়ে পড়েছে। যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে করে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।


পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, গত এক বছরে এ সড়কে ৮৮টি দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত ও শতাধিক লোক আহত হয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলা সদর থেকে কাজীপুর পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়কটি বগুড়া জেলার ধুনট ও শেরপুর উপজেলা সদর হয়ে বগুড়া জেলা সদরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে। এটি এখন সিরাজগঞ্জের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের বিকল্প সড়ক হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে।
কয়েক বছর ধরে এ আঞ্চলিক সড়কের ছোনগাছা, পিপুলবাড়িয়া, ভেওয়ামারা, সীমান্তবাজার, আলমপুর, মেঘাই, শিমুলদাইড়, সোনামুখী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঁচটি হাট, সাতটি বাজার, ২২টি করাতকল গড়ে উঠেছে। এসব করাতকলের কাঠের গুঁড়ি সড়কের ওপর ফেলে রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে সড়কের দুই পাশে অবৈধভাবে স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করায় সড়কটি সংকুচিত হয়ে পড়েছে। পিপুলবাড়িয়ার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়কের ওপর প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত মাংস বিক্রেতারা দোকান বসানোর কারণে সরাসরি কোনো যানবাহন চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পিপুলবাড়িয়ায় মাংস বিক্রেতারা সড়কের বেশির ভাগ দখল করে নিয়েছে। রাস্তার ওপরে নছিমন-করিমন এলোপাতাড়িভাবে রাখা হয়েছে। পঞ্চগড় থেকে আসা পাথরবোঝাই ট্রাকের চালক হামিদুল ইসলাম জানান, সড়কের ওপর যেভাবে দোকানপাট বসানো তাতে মনে হয়, এখানে কোনো দিন সড়ক ছিল না। সোনামুখী থেকে পিপুলবাড়িয়া পর্যন্ত চলাচলে যেখানে আগে ৩০ মিনিট প্রয়োজন হতো, এখন সেখানে দুই থেকে তিন ঘণ্টা লাগছে। বাসচালক আনিসুর রহমান জানান, মেঘাই, গজারিয়া, ভেওয়ামারা, হরিপুর, পাইকরতলী, খোকসাবাড়ী—এ এলাকার সড়কের বাঁকগুলো মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এসব স্থান দিয়ে খুব ধীরগতিতে চলাচল করতে হয়। তা ছাড়া অবৈধ নছিমন-করিমন চলাচল করায় সড়ক দিয়ে বাস-ট্রাক চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। পিপুলবাড়িয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আবদুল ওহাব জানান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য বাজার কমিটি এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বর্তমানে এ সড়কে দুর্ঘটনার হার বেড়ে গেছে। সিরাজগঞ্জ সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নূর এ আলম জানান, সড়কটি অবৈধ দখলমুক্ত করতে তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের একাধিকবার নোটিশ দিয়েছেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.