মূল রচনা-পাশে আছেন যেজন

বুকের ওপর পত্রিকা ধরে, চশমাটা পরেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তাহেরা চৌধুরী। তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল। গেল সোমবার। আমাদের পায়ের শব্দে উঠে বসলেন বিছানায়। ঘরে ছোট ছোট ক্যানভাসে তাহেরা চৌধুরীর সদ্য আঁকা উজ্জ্বল সবুজ আর হলুদ প্রকৃতি।


কাজ করছেন নিয়মিত?
‘হ্যাঁ। এখন তো করছি।’
১৯৫৪ সালে ঢাকার আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়া ছাত্রী ছিলেন তাহেরা চৌধুরী। সহপাঠী ছিলেন নিতুন কুন্ডু। সেই ব্যাচে পাঁচজন ছাত্রী ছিলেন। স্যার এফ রহমানের নাতনিও পড়তেন তাঁদের সঙ্গে। বাফার প্রথম ব্যাচেরও ছাত্রী ছিলেন তাহেরা চৌধুরী। বাজাতেন সেতার।
আর্ট কলেজের শেষ বর্ষে পড়ার সময় একজন নতুন শিক্ষক একদিন ক্লাসে এলেন। লম্বা, হালকা-পাতলা গড়ন। মেয়েদের দিকে তাঁকিয়ে নার্ভাস হয়ে গেলেন। সেই শিক্ষকের সঙ্গেই পরে বিয়ে হলো তাঁর। ১৯৬০ সালে কাইয়ুম চৌধুরী ও তাহেরা চৌধুরীর বিয়ে হয়।
এটা কি পছন্দের বিয়ে?
কাইয়ুম চৌধুরী বললেন, ‘না, না। শিল্পী আমিনুল ইসলামের আগের স্ত্রী আমাদের বিয়ের ঘটকালি করেন। বিয়ে ঠিক হওয়ার পর ভাবলাম, একটু ঘুরব দুজনে, তখনই বসন্ত এল আমার জীবনে।’
মানে?
‘মানে চিকেন পক্স হয়ে গেল (হা হা হা)।’
কাইয়ুম চৌধুরী আরও বললেন, ‘তবে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর জন্য তাহেরা চৌধুরী অনেক আত্মত্যাগ করেছেন। আমাদের জীবনের শুরুটা ছিল সংগ্রামের। ওই সময় তাহেরা আমাকে যে সমর্থন দিয়েছে, সেই সমর্থনেই আজকের আমি। এ কারণেই ওর ছবি আঁকায় এই দীর্ঘ ছেদ।’
২০০৩ সালে গ্যালারি চিত্রকে তাহেরা চৌধুরীর একক প্রদর্শনী হয়। ইদানীং যৌথ প্রদর্শনী এবং আর্ট ক্যাম্পেও অংশ নিচ্ছেন। তাঁর ছবিই বলে দেয়, এখনো তাঁর চেতনায় গজায় কচি সবুজ পাতা।

No comments

Powered by Blogger.