ডিমলার শৈলা সেতু-অনিয়ম ও দুর্নীতির শাস্তি হোক

নীলফামারীর ডিমলায় বুড়িতিস্তা নদীর ওপর নবনির্মিত শৈলার ঘাট সেতুর ওপরের অংশের তিনটি স্লাবের সিলকোট ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে ডোমার-ডিমলা উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। বৃহস্পতিবার সমকালের লোকালয় পাতায় 'ডিমলায় নবনির্মিত শৈলা ব্রিজে ভাঙন' শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্টে কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাব এবং


সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের কাজকে এ জন্য দায়ী করা হয়েছে। সেতুটি নির্মিত হলে ডিমলার সঙ্গে ডোমারের দূরত্ব হ্রাস পেত এবং ওই এলাকার লোকজনের যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন সহজ হতো। প্রশ্ন হলো, সেতুটির নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের কাজ করার সময় কোথায় ছিলেন? সর্বজনবিদিত যে, সেতু হোক আর রাস্তা হোক অথবা অন্য কোনো সরকারি নির্মাণকাজ হোক, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারী পর্যন্ত এক ধরনের অশুভ আঁতাত গড়ে ওঠে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। যে কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারি নির্মাণকাজে তদারকির বালাই থাকে না। ডিমলা উপজেলা চেয়ারম্যানের বক্তব্যেই স্পষ্ট যে, শৈলা সেতুটি নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী এর মধ্যে দুর্নীতি দূরে থাক অনিয়মেরও গন্ধ খুঁজে পাননি। এই পরস্পরবিরোধী বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, সেতুটি নির্দিষ্ট মান অনুযায়ী নির্মিত হয়নি। এ ধরনের সেতু বা সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করা গেলে দেশের সামগ্রিক যাতায়াত ব্যবস্থায় যথেষ্ট উন্নতি ঘটত। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অতি মুনাফার লোভ এবং এর সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনৈতিক উপার্জনের আকাঙ্ক্ষার কারণে সামগ্রিক উন্নয়ন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হতে পারছে না। সরকারকে অবশ্যই দুর্নীতির এই ক্রনিক ব্যাধি দূর করা এবং নিদেনপক্ষে কমিয়ে আনার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিন্তা করতে হবে। ডিমলায় নবনির্মিত সেতুটির ওপর দিয়ে যাতায়াত শুরু হওয়ার আগেই এর তিনটি স্লাবের সিলকোট কেন ভেঙে পড়ল তার প্রকৃত কারণ সন্ধান করা উচিত। এ জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টিও উপেক্ষা করা যায় না। তবে কোনো কারণেই যাতে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হতে বিলম্ব না হয় সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.