১৯৭১ ॥ চট্টগ্রাম শহরে প্রতিরোধ যুদ্ধ by সামসুদ্দিন আহম্মদ

তারা ২৭ মার্চ বিকেল থেকে সুবেদার সাবেদ আলীর নেতৃত্বে ডিউটিরত ছিল। এর আগে ইপিআররা এই দায়িত্বে ছিল। আন্দারকিল্লা থেকে বহদ্দার হাট পর্যন্ত আমাদের ২০টি লঙ্গরখানা ছিল।
আমরা সময়মতো বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধরত ইপিআর, পুলিশ ও অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের খাবার সরবরাহ করতাম।
২৭ তারিখ বিকেল ৫টার দিকে আন্দরকিল্লা থেকে প্রবর্তক হিলে আমাদের তিন বন্ধু খাবার নিয়ে যাচ্ছিল। খাস্তাগির স্কুলের সামনে ৩ জনকে গুলি করে মেরে ফেলে পাকিস্তানী নৌসেনারা। তার আগের রাতে তারা অবস্থান নিয়েছিল আসকার দীঘির পূর্ব পাশে অবস্থিত ইস্পাহানি বাংলোতে। অতর্কিতভাবে এই তিন ছাত্রনেতাকে হত্যা করে তারা। নিহতেরা হচ্ছেন এম.পি. আখতারুজ্জামন বাবুর ছোট ভাই বশিরুজ্জামান, তার সাথে ছিল জাফর ও দিপক। তাদের পেছনে গাড়িতে আমরা বেতারে অবস্থানরত সৈন্যদের জন্য রসদ নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমরা ছিলাম তাদের কাছ থেকে মাত্র ৫০ গজ পিছনে, অল্পের জন্য রক্ষা পেলাম। এভাবেই তারা শহরে আতঙ্ক সৃষ্টি করছিল। আগেই বলেছি চট্টগ্রামবাসীদের রক্ষার জন্য ইপিআর ও পুলিশ নিয়োজিত আছে। ২৭ তারিখে রেডিওতে ছিল কিছু বাঙালী সৈনিক আর বাকিরা ছিল সব কালুরঘাট ব্রিজের পূর্বপাড়ে। এভাবে তারা রাতের আঁধারে কোর্টহিল ছাড়া সব ভবন দখল করে নেয়। সার্কিট হাউসকে তারা সদর দফতর হিসেবে ব্যবহার করতে থাকে। ৩০ তারিখ থেকে শহরে কার্ফু জারি হয়। মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল চট্টগ্রাম বেতার। ৩০ মার্চ বিকেলে বিমান হামলা হলে বেতার বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ বেতার বন্ধ হয়ে যাওয়াতে চট্টগ্রামবাসী উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়ে। ওই সময় আমরা দুই বন্ধু রেডিওতে বাঙালী সৈন্যদের সাথে ছিলাম। সুবেদার সাবেদ আলী আমাদের গলা ধরে মাটিতে শুইয়ে দিল। সর্বশেষ কোর্টহিলে ক্যাপ্টেন হারুন অল্পসংখ্যক ইপিআর সৈনিকদের নিয়ে পাকিস্তানী সেনাদের বিরুদ্ধে সাফল্যের সাথে যুদ্ধ করেন। অতঃপর উপর্যুপরি আক্রমণের মুখে কোর্টহিল ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হন। কারণ, পাকসেনারা আইস ফ্যাক্টরি রোড দিয়ে এসে নিউমার্কেট দখল করে নেয়। তারপর কোর্টহিলের দিকে তীব্র আক্রমণ শুরু করে। ফলে শহর আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেল।
এদিকে আবহাওয়া খুব খারাপ হয়ে পড়ল। প্রচণ্ড বাতাস বইছিল, পরে তা তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। বিদ্যুত নেই, পানি নেই, সব দোকানপাট বন্ধ। শহরে আটকেপড়া লোকজন খাদ্যাভাবের সস্মুখীন হলো। লোকজন যারা ওপারে যাওয়ার অপোয় ছিল তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চলে গেল, বাকিরা গেল গ্রামগঞ্জের দিকে। শহর প্রায় খালি হয়ে গেল। বাকিরা ছিল অসহায় অবস্থায়। চট্টগ্রামবাসীর এই দুর্ভোগ হতো না, যদি ১ হাজারের বেশি সৈন্যকে কালুরঘাটে আটকে না রেখে শহরের যুদ্ধে লাগানো হতো। সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম শহরও আমাদের হাতছাড়া হতো না। এপ্রিলের ৪ তারিখে চট্টগ্রাম শহরের পতন ঘটল। পাকিস্তানীরা চকবাজার হয়ে বহদ্দারহাটের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ক্যাপ্টেন হারুন কোর্টহিল থেকে তার সৈনিকদের নিয়ে বহদ্দারহাটে ঘাঁটি স্থাপন করেন। লেফটেন্যান্ট শমসের মুবিন ওলিখাঁ মসজিদের পূর্বদিকে 'সবুজ' হোটেলের উপরে অবস্থান করছিলেন, তার সাথে ছিল আমাদের দুই ছাত্র বন্ধু ফারুক ও শওকত। পরে যুদ্ধের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অফিসার হিসেবে যোগদান করে তারা। চকবাজারে শমসের মুবিনের অবস্থান ছিল বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইপিআর নিয়ে। এবং মাঝে মাঝে বেতারে যেতেন। বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইপিআর একত্রে যুদ্ধরত ছিল। শমসের মুবিনের মূল অবস্থান ছিল বেতারে। ওই দিকে লেফটেন্যান্ট মাহফুজের অবস্থান ছিল লিভার ব্রাদার্স হয়ে কর্ণফুলী নদীর উপকূলীয় এলাকায়। এখানে পাকিস্তানী নেভিরা গানবোট নিয়ে টহল দিতে শুরু করে। পাকসেনারা যুদ্ধজাহাজ 'বাবর' ও নেভির কামান থেকে সবসময় শহরের দিকে গোলাবর্ষণ করতে থাকে। কোর্টহিলের পতনের পর চকবাজার ছাড়া পুরো শহর কব্জা করে নেয় পাকিস্তানী সেনারা। শহর প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ল। এদিকে বিহারীরা পাকসেনাদের সহায়তায় শহরে লুটপাট শুরু করে দিল। জনসাধারণ সীমান্ত ও গ্রামমুখী হয়ে পড়ল।
এপ্রিলের ৬ তারিখে ওসমানিয়া গ্যাস ফ্যাক্টরি থেকে লিভার ব্রাদার্সে যাওয়ার পথে লেফটেন্যান্ট মাহফুজ জনসাধারণের মাধ্যমে জানতে পারেন, এখানকার কৃষি ব্যাংকের দোতলায় পাকিস্তানী নেভাল কমান্ডোরা আগের দিন রাতে কর্ণফুলী নদী পার হয়ে লিভার ব্রাদার্স দিয়ে এখানে অবস্থান নিয়েছে। লেফটেন্যান্ট মাহফুজ তার ট্রুপস নিয়ে সকাল ৭টা থেকে তুমুল লড়াইয়ের মাধ্যমে এক ঘণ্টার মধ্যে ১২ জন পাকিস্তানী কমান্ডোকে খতম করেন। মূলত বেঙ্গল রেজিমেন্ট বেতারের পূর্বপাশ থেকে কালুরঘাট ব্রিজ পর্যন্ত যুদ্ধরত ছিল। আগে থেকে শহর রক্ষা করার কোন পরিকল্পনা তাদের ছিল না। শহর রক্ষা করছিলেন বাঙালী অফিসার ক্যাপ্টেন রফিক। পরে তিনি হাটহাজারী হয়ে উদালিয়া চা-বাগানে পাকসেনাদের প্রতিহত করার জন্য ঘাঁটি স্থাপন করেন। মেজর জিয়া মার্চের ৩০ তারিখে মির্জা মনসুরকে সাথে নিয়ে রামগড়ের উদ্দেশে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেননি। কালুরঘাট অঞ্চলে যুদ্ধরত অবস্থায় যেসব বাঙালি অফিসার ছিলেন তারা হচ্ছেন- মেজর শওকত, ক্যাপ্টেন হারুন, ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান, ক্যাপ্টেন ওয়ালী, লেফটেন্যান্ট মাহফুজ ও লেফটেন্যান্ট শমসের মুবিন। বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইপিআরদের সমন্বয়ে তারা যুদ্ধরত ছিলেন।
শহরের যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল ক্যাপ্টেন রফিক। চট্টগ্রাম শহর রার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন তিনি। বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিকদের সহায়তা না পাওয়ায় শহর হাতছাড়া হয়ে যায়। তাদের সাথে অবস্থান নিয়েছিল আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা এবং সাধারণ মানুষ। কালুরঘাট ব্রিজের পূর্বপাশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ঘাঁটি স্থাপন করা হয় যুদ্ধরত সৈনিকদের সহায়তা দেয়ার জন্য তাদে সাথে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ ছিল। নেতাদের মধ্যে নূরুল ইসলাম চৌধুরী, ডা. মান্নান, ডা. জাফর, আবু সালেক, খালেক চাচা, মোখতার আহমদ, আবুল কালাম আজাদ ও আর অনেকে ছিলেন। ছাত্রদের মধ্যে যারা ছিলেন তারা হচ্ছেন আবু মোঃ হাসেম, সাবের আহমদ, নিজামুল হক, ফারুক, শওকত, সামসুদ্দীন, খোকা ও আরও অনেকে। এদিকে ক্যাপ্টেন হারুন কামাল বাজারে শত্রুর মোকাবেলা করার জন্য তার অবস্থান সুদৃঢ় করে তোলেন। ১০ এপ্রিল শত্রুসেনারা তীব্রগতিতে রেললাইন ধরে জান আলী স্টেশনের দিকে আসতে থাকে। ক্যাপ্টেন হারুন তাদের প্রতিহত করার জন্য স্টেশনের পাশে কামালবাজারে অবস্থান নিয়েছিলেন। ওইদিন রাতে পাকিস্তানী সৈন্যরা ওসমানীয়া গ্যাস ফ্যাক্টরি পার হয়ে বাস সিগনাল ট্যানারি মোড়ে অবস্থান নিয়েছিলো। ১১ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শত্রুপক্ষের ত্রিমুখী আক্রমণ শুরু হলো। এদিকে কর্ণফুলী নদী দিয়ে নৌবাহিনীর কামান থেকে গোলাবর্ষণ শুরু হলো। আরেকটি গ্রুপ আরাকান রোড দিয়ে ব্রিজ অভিমুখী হলো। অন্য আরেকটি গ্রুপ রেললাইন দিয়ে আসতে শুরু করল। অল্পক্ষণের মধ্যে পাকসেনাদের গোলাবর্ষণ তীব্র হয়ে উঠল। পাকসেনারা নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার-পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে তিন দিক থেকে আসতে থাকে। দেখতে দেখতে কালুরঘাটের পশ্চিম পাড়ের পতন হলো। পাকিস্তানীদের সাথে সম্মুখযুদ্ধে আমাদের দু'জন বীর অফিসার গুলিবিদ্ধ হলো। এদের একজন ক্যাপ্টেন হারুন ও লেফটেন্যান্ট শমসের মুবিন। হারুনকে আমাদের দুই বন্ধু ফারুক ও শওকত কাঁধে করে ব্রিজের পূর্ব পাশে নিয়ে এলো। শমসের মুবিনকে আনতে পারল না। তিনি পাকসেনাদের হাতে বন্দী হলেন।
চিকিৎসার জন্য ক্যাপ্টেন হারুনকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় শওকত ও ফারুক পটিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। শমসের মুবিন আমাদের হাতছাড়া হলেন। বারো আউলিয়ার পুণ্যভূমি চট্টগ্রাম শহর আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেল। মেজর জিয়া ৩০ তারিখে রামগড় চলে যাবার পর আর ফিরে আসেনি। বহদ্দারহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত সম্মিলিত যুদ্ধটি পরিচালনা করেছিল মেজর শওকত। এই ঐতিহাসিক কালুরঘাট যুদ্ধে বেঙ্গল ও ইপিআরের সমন্বয়ে, মেজর শওকতের নেতৃত্বে যারা যুদ্ধ করেছে ক্যাপ্টেন হারুন, ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান, ক্যাপ্টেন ওয়ালী, লেফট্যানেন্ট মাহফুজ, লেফট্যানেন্ট শমসের মুবিন। যুদ্ধের শুরু থেকে ক্যাপ্টেন রফিক রাজনৈতিক ও ছাত্র নেতৃত্বের সাথে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিলেন। ৩০ তারিখের পর থেকে মেজর মীর শওকত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে যুদ্ধ পরিচালনায় সহায়তা নেন। কালুরঘাট থেকে সৈন্য ও জনসাধারণের একটি দল মদুনাঘাট হয়ে পাহাড়তলী, আরেকটি গ্রুপ বান্দরবান হয়ে রাঙ্গামাটি চলে গেল। জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবীদের বলতে চাই, ১ হাজার সৈন্য আটকে না রেখে চট্টগ্রাম শহর রাক্ষায় নিয়োজিত করলে সামরিক দিক দিয়ে শহর রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হতো। মেজর জিয়া সীমান্ত থেকে আগত ইপিআদেরকে কালুরঘাটে কি উদ্দেশ্যে আটকে রেখেছিলেন? ২৫ তারিখ রাত ২টার সময় ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সেন্টারে মেজর জিয়া নতুন কমান্ডিং অফিসার হিসাবে রেজিমেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তারপরে নিয়মানুযায়ী দরবার বসে। সৈন্যদের উপদেশ ও নির্দেশ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি আপনাদেরকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করছি। এখন থেকে আমাদের দেশ স্বাধীন। এই সময় সিপাহীরা সবাই জয়বাংলা বলে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন জানায়। ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সেন্টার থেকে ১০০ গজ দূরে জিয়ার পরিবার বসবাস করত। সেই রাতে জিয়া তাদের সাথে সাক্ষাত না করে রাতের অন্ধকারে পটিয়ার দিকে চলে যান। বাঙালীদের চাপের মুখে অস্ত্র খালাস করা থেকে বিরত থাকেন। মূলত পরিস্থিতির চাপেই তিনি বিদ্রোহ করতে বাধ্য হন। বিদ্রোহী বেশে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের সামনে দিয়ে তিনি পটিয়া যান। ওই সময় সৎ উদ্দেশ্য থাকলে তিনি বেতার কেন্দ্র দখল করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে পারতেন। ২৭ তারিখে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাকে বহু অনুরোধ করার পর সন্ধ্যা ৭টার সময় তিনি ঘোষণা দিতে বাধ্য হন। চট্টগ্রাম শহর রক্ষা না করে সৈন্যদের নিয়ে কালুরঘাটে কেন অপক্ষা করছিলেন? সীমান্ত থেকে আগত ইপিআরদের তিনি কেন আটকে রেখেছিলেন? ৩০ মার্চ অস্ত্রের বাহানা দিয়ে রামগড় গিয়ে আর ফিরে এলেন না কেন? বাঙালী অফিসার বন্ধু ও সাথী যোদ্ধাদের কাছ থেকে শুনেছি, ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের এই ইউনিট চট্টগ্রামে ছিল। শুধু অস্ত্র খালাসের জন্য বাকি ইউনিট আগে পাকিস্তানে চলে গেছেন। প্রকৃতপক্ষে মেজর জিয়া পাকিস্তানীদের একজন বিশ্বস্ত অফিসার ছিলেন। তাকে পরিকল্পিতভাবে চট্টগ্রামে রাখা হয়েছিল 'সোয়াত' জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসের জন্য। সমস্ত ঘটনা পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে, জিয়া নিজের ইচ্ছা অনুসারে যুদ্ধে যোগদান করেনি। অনেকটা বাধ্য হয়ে, বিশেষ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে বিদ্রোহ করতে বাধ্য হন। অন্য দিকে চট্টগ্রাম শহরে আত্মরক্ষার মাধ্যমে যুদ্ধ পরিচালনা না করে প্রথম সুযোগেই পশ্চাদপসারণ করে তিনি পটিয়ার দিকে চলে যান।
চট্টগ্রামের আমজনতা, ছাত্র-শ্রমিক শিক্ষক, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ শহরে প্রতিরোধযুদ্ধ গড়ে তোলে। ইপিআরের ক্যাপটেন রফিকের নেতৃত্বে শহরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও বেগবান হয়। ইপিআর বাঙালী সেনা অফিসার হিসেবে অন্যান্য বাঙালী সেনা, ইপিআর এবং আমজনতার নেতৃত্বে যদি জিয়া এগিয়ে আসতেন। তাহলে চট্টগ্রামে আমাদের হতাহতের সংখ্যা আরও কম হতো এবং চট্টগ্রামে আরও অধিককাল শহর শত্রুমুক্ত থাকত। এতসব ভুলত্রুটি সত্ত্বেও চট্টগ্রামের সামগ্রিক প্রতিরোধযুদ্ধ, বিশেষ করে কুমিরার যুদ্ধ এবং কালুরঘাটের যুদ্ধ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

No comments

Powered by Blogger.