নিজামী মুজাহিদ সাঈদী ২৬ মার্চের আগেই গ্রেফতার হতে পারেন- সরকারের সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় শৃঙ্খলা বাহিনী by শংকর কুমার দে

 মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ও রেজাউল করিম ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আগেই গ্রেফতার হতে পারেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যাকাণ্ডে ও ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসী তাণ্ডবলীলার ঘটনায় তাদের গ্রেফতার করে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ঘটনায় শোন এ্যারেস্ট দেখানো হতে পারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন শুধু সরকারের সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর শেষে রবিবার দেশে ফিরে আসার পর এই ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তারা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সেই জন্য বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, সীমান্ত পথে নামের তালিকা পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধীরা গ্রেফতার হওয়ার আগে বড় ধরনের কোন নাশকতা চালাতে না পারে এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারম্নক হত্যাসহ ছাত্রশিবিরের রগকাটা সন্ত্রাসী তা-বলীলার ঘটনায় দায়ের করা ১০ মামলায় এখন হুকুমের আসামি জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহ্সান মুহাম্মদ মুজাহিদ, ইসলামী ছাত্রশিবির সভাপতি রেজাউল করিম। ছাত্রশিবির রাজশাহীর হল শাখার নেতা ইকরাম হোসাইন ও রাজশাহীর জামায়াত নেতা গিয়াসউদ্দিন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদী, রেজাউল করিমসহ ১১ নেতার নাম বলেছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের হুকুমেই ছাত্রলীগ কর্মী ফারম্নক হত্যাকাণ্ড, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রগকাটা সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালানো হয়েছে। এসব জামায়াত নেতার বিরম্নদ্ধে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়ার পর গ্রেফতার করার ব্যাপারে আইনগত সকল বাধা দূর হয়ে গেছে।
সরকারের উচ্চপর্যায় সূত্রে জানা গেছে, নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদীসহ অন্যদের রাজশাহীর ঘটনায় গ্রেফতার করা হবে। তারপর যুদ্ধাপরাধীর ঘটনায় তাদেরকে শোন এ্যারেস্ট দেখানো হতে পারে। আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আগেই গ্রেফতার ও শোন এ্যারেস্ট দেখানোর ঘটনাটি ঘটতে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবসের আগেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরুর আগেই তাদের গ্রেফতার করার ব্যাপারে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতার করার আগে ও পরে তাদের পক্ষ থেকে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, দেশের সীমান্তপথে বিভিন্ন স্থল বন্দর ও বিমান বন্দরে নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদী, রেজাউল করিমসহ অন্যদেও নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে। তারা যাতে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা যাতে দেশের ভেতরে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাতে না পারে সে জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। তাদের ওপর কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। সরকারের নীতিনির্ধারক মহল থেকে সবুজ সঙ্কেত পাওয়া গেলেই তাদের বিরুদ্ধে সকল আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে যারা অংশ নেবে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধী হিসেবে পরিচিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার আসামি জামায়াত_শিবিরের নেতারা এখন মারাত্মক বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করেছে। মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী শুক্রবার বলেছেন, কখন কি ঘটে যায় তা বলা যায় না। এজন্য জামায়াত_শিবিরের নেতাকর্মীদের চোখ কান খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি রেজাউল করিম সরকারকে পর্যন্ত হুমকি দিয়েছে। জামায়াত_শিবির এতই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে তারা মহানবীর (সা:) সঙ্গে মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে তুলনা করেছে। এর প্রতিবাদে খোদাভক্ত আলেম সমাজ নিজামীর কুশপুতুল দাহ করেছে। ওলামা মাশায়েক সংহতি পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পৰ থেকে তাদের গ্রেফতারের দাবি জোরালো হচ্ছে। জামায়াত_শিবিরের বেপরোয়া আচরণে ইঙ্গিত দিচ্ছে তারা যে কোন মূল্যে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য নাশকতা চালাতে পারে। এই আশঙ্কা গোয়েন্দা সংস্থার।
গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা শনিবার দৈনিক জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, সরকারের সবুজ সঙ্কেত পাওয়া গেলেই নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদী, রেজাউল করিমসহ অন্যদের গ্রেফতার অভিযান পরিচালিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর শেষে আগামী রবিবার দেশে ফেরার পর এই ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে। সরকারের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার অপেৰায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত। বিডিআর, পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.