স্বাধীনতার ঘোষক তত্ত্ব by মেজবাহউদ্দিন জওহের

নিয়াজির প্রেস সেক্রেটারি সিদ্দিক সালিক তার উইটনেস টু সারেন্ডার গ্রন্থে লিখেছেন_ ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় যখন পাকিস্তানী বাহিনীর 'প্রথম গুলিটি বর্ষিত হলো,
ঠিক সে মুহূর্তে পাকিস্তান রেডিওর সরকারী তরঙ্গের (ওয়েভলেংথ) কাছাকাছি একটি তরঙ্গ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষীণ কণ্ঠস্বর ভেসে এলো। ওই কণ্ঠের বাণী মনে হলো আগেই রেকর্ডকৃত। তাতে শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা করলেন"।
শমশের মবিন চৌধুরী (জোট সরকারের প্রতাবশালী সচিব ও বর্তমানে খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা) এক সাক্ষাতকারে বলেন (তারিখ ২০/১০/৭৩, দ্রষ্টব্য-মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র, পৃষ্ঠা-৫৯)- "২৬ মার্চ ভোরে আমরা কালুরঘাটের আর একটু দূরে গিয়ে পৌঁছলাম। সেখানে আমরা বিশ্রাম নিলাম এবং রিঅর্গানাইজেশন করলাম। ২৬ মার্চ এভাবে কেটে গেল। ২৭ মার্চ সন্ধ্যার সময় মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রে গেলেন এবং ভাষণ দিলেন। ২৮ মার্চ সারাদিন আমি ঐ ভাষণ বেতার কেন্দ্র থেকে পড়ি"।
তৎকালীন শিল্প সচিব একেএম মোশাররফ হোসেন (জোট সরকারের শিল্পমন্ত্রী ছিলেন) তার আত্মীয় চট্টগ্রামের এমআর সিদ্দিকীর কাছে ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর একটি মেসেজ পাঠান_ "লিবারেট চিটাগাং, টেক অভার এ্যাডমিনিস্ট্রেশন, প্রসিড ফর কুমিল্লা"। জনাব মোশাররফ হোসেন যে বঙ্গবন্ধুর এ অর্ডারটি পাঠিয়েছিলেন_১৯৯০ সালে সচিব থাকাকালীন তা তিনি একটি দাফতরিক পত্রে স্বীকার করেন (পত্র নং সচিব/শিল্প-৬৩/৯০ তাং-৭/৩/১৯৯০)।
সাংবাদিক আতাউস সামাদ ২৫ মার্চ রাতে গ্রেফতারের পূর্বক্ষণে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন। আতাউস সামাদ বঙ্গবন্ধুকে সম্ভাব্য আক্রমণের কথা বলাতে তিনি বলেন_ আমরাও প্রস্তুত। 'আই হ্যাভ গিভেন ইউ ইন্ডেপেন্ডেন্স, নাউ প্রিজার্ভ ইট" (আজকের কাগজ-২২/১/৯৩)।
এবার দেখা যাক জিয়াউর রহমান এ প্রসঙ্গে কী বলে ছিলেন। মুজিব হত্যার পর জিয়া সুদীর্ঘ ৬ বছর ক্ষমতাসীন ছিলেন এবং একজন সামরিক একনায়ক হিসেবে রাষ্ট্রযন্ত্রের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা তাঁর হাতে ছিল। এ ক্ষমতা ব্যবহার করে তিনি যে কেবল হত্যাকাণ্ডের মতো অপরাধকেই সাংবিধানিকভাবে বৈধতা দিয়েছেন তাই নয়, তিনি কলমের এক খোঁচায় সংবিধানের মৌলিক চরিত্রই পাল্টিয়ে দিয়েছিলেন। এহেন ক্ষমতাশালী একজন একনায়ক তাঁর জীবৎকালে স্বাধীনতা ঘোষণা তত্ত্বের বিষয়ে কী বলে গেছেন?
* ১৯৭৭ সালের বিজয় দিবসের প্রাক্কালে (১৫ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত বেতার ও টেলিভিশন ভাষণে রাষ্ট্রপতি জিয়া বলেন_"এ পবিত্র মুহূর্তে আমার মনে পড়ছে ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চের কথা, যেদিন চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে আমার বলবার সুযোগ হয়েছিল। সেই একই জাতীয়তাবাদী চেতনা, সাহস ও প্রত্যয় নিয়ে আজ আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি"।
* ১৯৭৪ সালের ২৬ মার্চ অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকায় তার একটি নিবন্ধ ছাপা হয়_ "একটি জাতির জন্ম"। উক্ত নিবন্ধে তিনি বঙ্গবন্ধুকে শুধু জাতির জনক বলেই ক্ষান্ত হননি, ২৫ মার্চ রাতে তিনি কোথায় ছিলেন কী করেছিলেন তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনাও দিয়েছেন। নবীন পাঠকদের অবগতির জন্য উক্ত প্রবন্ধের অংশ বিশেষ তুলে ধরছি"তারপর এলো সেই কালরাত। ২৫ ও ২৬ মার্চের মধ্যে কালরাত। রাত এগারোটায় আমার কমান্ডিং অফিসার আমাকে নির্দেশ দিল নৌবাহিনীর ট্রাকে করে চট্টগ্রাম বন্দরে গিয়ে কর্নেল আনসারির কাছে রিপোর্ট করতে।...আমি বন্দরে যাচ্ছি কিনা তা দেখার জন্য একজন লোক ছিল। ...আমরা বন্দরের পথে বেরুলাম। আগ্রাবাদে আমাদের থামতে হলো। পথে ছিল ব্যারিকেড। এমন সময় সেখানে হাজির হলো মেজর খালেকুজ্জমান চৌধুরী। ক্যাপ্টেন অলি আহম্মদের কাছ থেকে এক বার্তা এসেছে। আমি রাস্তায় হাঁটছিলাম। খালেক আমাকে একটু দূরে নিয়ে গেল। কানে কানে বলল, তারা ক্যান্টনমেন্ট ও শহরে সামরিক তৎপরতা শুরু করেছে। বহু বাঙালীকে ওরা হত্যা করেছে।
এটা ছিল সিদ্ধান্ত গ্রহণের চূড়ান্ত সময়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আমি বললাম_'উই রিভোল্ট'_আমরা বিদ্রোহ করলাম। তুমি ষোলশহরে যাও। পাকিস্তানী অফিসারদের গ্রেফতার কর। ...আমি আসছি।... ব্যাটালিয়নে ফিরে দেখলাম, সমস্ত পাকিস্তানী অফিসারকে বন্দী করে একটা ঘরে রাখা হয়েছে। আমি অফিসে গেলাম। চেষ্টা করলাম লে. কর্নেল এম আর চৌধুরীর সঙ্গে আর মেজর রফিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। কিন্তু পারলাম না। ...তারপর রিং করলাম বেসামরিক বিভাগের টেলিফোন অপারেটরকে। তাকে অনুরোধ জানালাম_ ডেপুটি কমিশনার, পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্ট, কমিশনার, ডিআইজি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের জানাতে যে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অষ্টম ব্যাটালিয়ন বিদ্রোহ করেছে।...সময় ছিল অতি মূল্যবান। আমি ব্যাটালিয়নের অফিসার, জেসিও আর জোয়ানদের ডাকলাম। তাদের উদ্দেশে ভাষণ দিলাম। ...আমি সংক্ষেপে সব বললাম এবং তাদের নির্দেশ দিলাম সশস্ত্র সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে।...তখন রাত ২টা বেজে ১৫ মিনিট। ২৬ মার্চ ১৯৭১ সাল। রক্ত আখরে বাঙালীর হৃদয়ে লেখা একটি দিন। বাংলাদেশের জনগণ চিরদিন স্মরণ রাখবে এ দিনটিকে। স্মরণ রাখতে ভালবাসবে। এ দিনটিকে তারা কোনদিন ভুলবে না।"
পাঠক, ভেবে দেখুন_ জিয়াউর রহমান তাঁর জবানবন্দীতে ২৫ মার্চ রাত এগারোটা থেকে রাত ২টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত কোথায় ছিলেন, কি করেছেন, কার কার সঙ্গে কথা বলেছেন সবকিছুর নিখুঁত বর্ণনা দিয়েছেন। তাঁর কথ্য বা লেখ্য বক্তব্যে কোথাও বলেননি বা সামান্যতম ইঙ্গিতও দেননি যে তিনি ঐ রাতে কালুরঘাট গিয়েছিলেন এবং রেডিও মারফত ঘোষণাটি দিয়েছিলেন। বরং তাঁর এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচরদের কথায় একথা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে কালুরঘাট থেকে ঘোষণাটি তিনি পাঠ করেছিলেন ২৭ মার্চ বিকেলে, ২৫ মার্চ রাত্রে নয়, ২৬ মার্চও নয়। তাহলে নব্য জাতীয়তাবাদীরা এতদিন পর কীভাবে এ আজগুবি থিওরি নিয়ে হাজির ছিল এবং দাবি করছে যে জিয়া ২৫ মার্চ রাতেই ঘোষণাটি করেছিলেন!
The Government of the Sovereign state of Bangladesh on behalf of our Great Leader, the Supreme Commander of Bangladesh Sheikh Mujibur Rahman. We do hereby proclaim the independence of Bangladesh & that the government headed by Sheikh Mujibur rahman has already been formed. It is further proclaimed that Sheikh Mujibur Rahman is the sole leader of the elected representatives of seventy five million people of Bangladesh and the government headed by him is the only legitimate government of the people of the independent sovereign state of Bangladesh which is legally & constitutionally formed and is worthy of being recognized by all the governments of the world. I, Therefore, appeal on behalf of our great leader Sheikh Mujibur Rahman to the governments of all democratic countries of the world, specially the big powers & the neighbouring countires to recognize the legal government of Banladesh and take effective steps to stop immediately the awful genocide that has been careied on by the army of occupation from Pakistan. To dub out the legally elected representative of the majority of the peoples as secessionist is a crude joke and contradiction to truth which should be fool none. The guiding principle of the new state will be first neutrality, second peace & third firendship to all & enemity to none. May Allah help us. Joy Bangla.| (রেফারেন্স-রেডিও বাংলাদেশের ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিস কর্তৃক সংরক্ষিত মেজর জিয়ার স্বকণ্ঠ ভাষণের অডিও টেপ)।
জিয়াউর রহমানের আমলে স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল্যবান দলিলপত্র সংরক্ষণের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রখ্যাত কবি হাসান হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়; স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল্যবান দলিলপত্র ও তথ্যাদি সংগ্রহ এবং সেগুলো গ্রন্থাকারে প্রকাশ করার দায়িত্ব এই কমিটির ওপর ন্যস্ত করা হয়। ১৫ খণ্ডের এই দলিলপত্রের প্রথম ৬টি খণ্ড জিয়াউর রহমানের জীবৎকালেই সম্পাদিত ও পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়। বাদবাকি ৯টি খণ্ড প্রকাশিত হয় জিয়ার মৃত্যুর পর ১৯৮৬ সালে। তৃতীয় খণ্ডে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণা ও মেজর জিয়া কর্তৃক কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র হতে তা পাঠ করার বিষয়টি সন্নিবেশিত হয়েছে। উক্ত খণ্ডটি জিয়ার আমলেই সম্পাদিত হয়েছে, তিনি কখনও এতে তথ্যগত কোন ভুল আছে বলে শনাক্ত করেননি! (সূত্র : হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র, তৃতীয় খণ্ড, ১৯৮২, পৃষ্ঠা ১-২)।
এত তথ্যপ্রমাণ একথা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে যে ঢাকা থেকে প্রেরিত বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার প্রেক্ষিতেই কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র হতে ছাব্বিশে মার্চ প্রয়াত আবদুল হান্নান এবং ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান ঘোষণাগুলো পাঠ করেন। বঙ্গবন্ধুর চূড়ান্ত নির্দেশ না পেয়ে কোন সেনানায়ক স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারেন না। কারণ সেক্ষেত্রে যদি কোন রাজনৈতিক মীমাংসা হয়ে যায় তবে সেনানায়কের কোর্ট মার্শাল অবধারিত।
এর পক্ষকাল পরে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয় যারা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা করে। মুক্তিযুদ্ধকালীন নয় মাসে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারই ছিল বাংলাদেশের আইনানুগ অথরিটি। এই সরকার গঠিত হয় বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২৫ মার্চ প্রদত্ত স্বাধীনতা ঘোষণার বলে। বিষয়টি পরবর্তীতে বাংলাদেশের সংবিধানেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বস্তুত বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটিই আমাদের সংবিধানের মূল ভিত্তি, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্মের আইনানুগ অধিকার এই ঘোষণার মধ্যেই নিহিত। এই সত্যকে অস্বীকার করা মানে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারকে অবৈধ বলা, মুক্তিযুদ্ধকে অবৈধ বলা, বাংলাদেশের সংবিধানকে অবৈধ বলা, প্রকারান্তরে বাংলাদেশকেই অবৈধ বলা।
এ স্থলে আরেকটি কথা না বললেই নয়। জিয়াউর রহমানই যদি স্বাধীনতার ঘোষক হয়ে থাকেন, একাত্তরে তাঁর ডাকে যদি সমগ্র বাঙালী জাতি একতাবদ্ধ হয়ে পরাক্রান্ত পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনে থাকে, তাহলে বিজয় অর্জনের পর মহান ঘোষক এবং মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক হিসেবে জিয়াউর রহমানেরই তো জাতীয় স্পটলাইটে থাকার কথা। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত বঙ্গবন্ধু যেদিন ঢাকার বুকে পা রেখেছিলেন (১০ জানুয়ারি, ১৯৭১), সমগ্র জাতি আবেগে উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল সেদিন। অথচ আরেকজন মহানায়ক কবে কোনদিন বাংলাদেশে পা রাখলেন, তার কোন খোঁজই পেল না জনগণ! এ কি বিষম প্রহেলিকা? একাত্তরের ষোলই ডিসেম্বর থেকে পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট পর্যন্ত বিপ্রতীপ জাতির পিতার কোন খোঁজই নেই! তাজউদ্দীন আছেন, ওসমানী আছেন, এমনকি মোশতাকও আছেন, অথচ এত বড় একজন ঘোষকের কোন পাত্তা নেই! একথা সত্য, কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়ার বেতার ঘোষণায় জাতি যথেষ্ট অনুপ্রাণিত হয়েছিল সেদিন। কারণ পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বাঙালী সৈনিকরাও যে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেছে, মেজর জিয়ার কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে তা জাতির কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় এবং তারা আশ্বস্ত হয়। মেজর জিয়ার পূর্বেই প্রায় সমস্ত বাঙালী ব্যাটালিয়ন বিদ্রোহ ঘোষণা করে, কিন্তু প্রকাশ্য ইথার ঘোষণা আসে প্রথমে জিয়ার কণ্ঠ থেকেই। এদিক দিয়ে অন্যান্য সেক্টর কমান্ডারের চেয়ে তিনি একটু বিশেষ কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন, এর বেশি কিছু নয়। এবং জীবিত থাকা অবস্থায় তিনি নিজে কখনও তা করেননি, এরূপ হাস্যকর চিন্তা হয়ত তাঁর মাথায়ও আসেনি।
এত ফ্যাক্টস ও প্রত্যক্ষ সাক্ষীকে বেমালুম আগ্রাহ্য করে তথাকথিত জাতীয়তাবাদীরা ইতিহাস বিকৃতির এক নির্লজ্জ খেলায় মেতেছে। কেন তারা একটি মীমাংসিত বিষয়কে নিয়ে অকাতরে মিথ্যা বেসাতি করে, তার কারণ পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে। হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য অকাতরে মিথ্যা বলা জাতীয়তাবাদী তথা জামায়াতী দর্শনের মূল বৈশিষ্ট্য। রাজনৈতিক ফায়াদা লোটার জন্য এমনকি জন্মদিন নিয়ে মিথ্যাচার করতেও এদের বাধে না। তবে স্বস্তির বিষয়, তাদের এ কাল্পনিক প্রপজিশন তাদেরই শাসনামলে (২০০১-২০০৬) হাইকোর্ট কর্তৃক মিথ্যা ও অবৈধ ঘোষিত হয়েছে এবং শেখ মুজিবকেই স্বাধীনতার ঘোষক বলে রায় দেয়া হয়েছে। সুপ্রীমকোর্টও হাইকোর্টের রায়কে বহাল রেখেছে। সুতরাং একথা বললে অন্যায় হবে না যে জাতীয়তাবাদীরা আদালত কর্তৃক ঘোষিত মিথ্যাবাদী_আইনের ভাষায় যাকে বলে বলা 'কনফার্মড লায়ার'।


লেখক : সৌদি আরব প্রবাসী
E-mail: mezbahjowher&yahoo. com

No comments

Powered by Blogger.