গুলশান লেকে অভিযান- শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

গুলশান লেকের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল প্রায় সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলে এই অভিযান।
গুলশানের শাহজাদপুরে মরিয়ম টাওয়ারের কিছু দক্ষিণে টিনের ঘেরা দিয়ে লেক দখল করা হয়েছে। সেখানে ভেতরে একটি স্থাপনাও আছে। গতকাল সেটি ভাঙা হয়নি। রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোকন-উদ-দৌলা প্রথম আলোকে বলেন, জলাধার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী লেকের জায়গা ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না। এখানে কারা টিনের ঘেরা দিয়েছে, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ঘেরা সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হবে। সময়মতো সরিয়ে না নিলে উচ্ছেদ করা হবে।
অভিযানে মহিলা পুলিশসহ ৬০ জন পুলিশ সদস্য অংশ নেন। উচ্ছেদে ব্যবহার করা হয় বুলডোজার ও পে-লোডার। রাজউকের নিজস্ব শ্রমিকেরা ভাঙার কাজে সহায়তা করেন।
অভিযানের শুরুতেই গুলশান-১ থেকে বাড্ডা সংযোগ সড়কের কাছে গুদারাঘাট বাজার এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে ১০টি দোকানঘর এবং ২০টির মতো বস্তিঘর ভাঙা হয়। ভাঙার আগে দোকানের সামগ্রী ও মালামাল সরানোর সুযোগ দেওয়া হলে কিছু দোকানি স্থাপনার অংশও খুলে নেন।
অভিযানকালে সরাসরি কেউ বাধা না দিলেও কয়েকজন লোক দূর থেকে চিৎকার করতে থাকেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ভবিষ্যতে রাজউককে এখানে উন্নয়নকাজ করতে দেওয়া হবে না। ঠিকাদার কি করে কাজ করে তাঁরা দেখে নেবেন। একপর্যায়ে অভিযানকারী দল আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে তাঁরা সরে যান।
লেকের অপর পাড়ে বাড্ডা সংযোগ সড়ক ও মরিয়ম টাওয়ারের মাঝামাঝি স্থানে লেকের মধ্যেই গড়ে উঠেছে অনেক অবৈধ স্থাপনা। সেখানে বুলডোজার বা পে-লোডার নেওয়ার উপায় ছিল না। স্থাপনাগুলো ভাঙতে কয়েকটি নৌকা ভাড়া করা হয়। পুলিশ ও অভিযানকারী দলের সদস্যরা নৌকায় ঘুরেই অবৈধ স্থাপনা ভাঙার কাজে তদারকি করেন।
দেখা যায়, লেকের পানির মধ্যেই আরসিসি খুঁটি দিয়ে তৈরি হয়েছে অন্তত ২০টি স্থাপনা। শাবল ও বড় হাতুড়ি দিয়ে পাকা-আধাপাকা স্থাপনার শক্ত খুঁটি ভাঙতে গিয়ে শ্রমিকদের বেশ বেগ পেতে হয়। তাঁদের কেউ নৌকা ব্যবহার করে, কেউ লেকপাড়ে দাঁড়িয়ে এগুলো ভাঙার চেষ্টা করে। অবৈধ স্থাপনার মালিকদের কেউ ধারেকাছে ছিলেন না।
দুটি আধাপাকা স্থাপনার মালিক আফজাল হোসেন ও রবিউল হোসেন দাবি করেন, তাঁরা তাঁদের কেনা জায়গাতেই স্থাপনা তৈরি করেছেন। তবে স্থাপনা নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
এ ছাড়া ওই এলাকায় ভাঙা হয় প্রায় ৬০টির মতো বস্তিঘর। কয়েকজন বস্তিবাসী জানান, এসব ঘর অবৈধ বলে জানতেন না তাঁরা। নিয়মিত ভাড়া দিয়ে তাঁরা বসবাস করছেন।
রাজউকের নির্বাহী প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হাতিরঝিল প্রকল্পের সঙ্গে গুলশান লেক যুক্ত হবে। তার অংশ হিসেবে উচ্ছেদ অভিযান চলছে। এখানে লেকের ধার ঘেঁষে ৪০ ফুট রাস্তা তৈরি হবে।

No comments

Powered by Blogger.