যুদ্ধাপরাধীমুক্ত বাজার

 ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর গণহত্যা আর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ স্মৃতি ধারণ করে আছে মুক্তিযোদ্ধা বাজার। মুক্তিযোদ্ধা বাজারে কোন যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকার, আলবদর ব্যবসা করতে পারে না।
গফরগাঁও উপজেলা সদর থেকে ৩০ কিঃমিঃ দূরে শীলা, সুতিয়া ও বানার নদীর সঙ্গলস্থলের কাছাকাছি নিগুয়ারী ইউনিয়নের সুতারচাপর গ্রামে গফরগাঁও-বরমী সড়কের উপর মুক্তিযোদ্ধা বাজারের অবস্থান। এ বাজারের প্রাণপুরম্নষ বা নেপথ্য নায়ক যাই বলা হোক না কেন, তিনি সুতারচাপর গ্রামের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা নাজিমউদ্দিন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধা বাজার এলাকায় একবার সম্মুখযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে এবং আরেকবার পাকসেনাদের হাতে ধরা পড়ে গুলি খেয়েও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা নাজিমউদ্দিন ১৯৯০ সালে ৫০ শতাংশ জমির ওপর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ধরে রাখতে 'রাজাকার মুক্ত' এই বাজারটি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে বাজারে অর্ধশতাধিক দোকানঘর রয়েছে। সপ্তাহে রবি, বুধ ও বৃহস্পতি এই ৩ দিন মুক্তিযোদ্ধা বাজারের হাটবার।
মুক্তিযোদ্ধা নাজিমউদ্দিনের বয়স এখন ৭০। ৩৮ বছর আগের সেই স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন। মুক্তিযুদ্ধের কথা উঠতেই তিনি গর্বে তেজিয়ান হয়ে ওঠেন। '৭১-এর সেই শক্তি না পেলেও খুলে দেন স্মৃতির দুয়ার।
মুক্তিযোদ্ধা বাজার ঘিরে নাজিমউদ্দিনের অনেক স্বপ্ন। তিনি স্বপ্ন দেখেন এখানে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। বর্তমান প্রজন্ম শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে যাতে জানতে পারে সেজন্য তিনি বাজারের একটি ঘরে নিগুয়ারী ইউনিয়নের ৬০ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকা টানিয়ে দিয়েছেন। তিনি জানান, সুতারচাপর গ্রামসহ নিগুয়ারী ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের পরে সমর্থক বেশি থাকায় মুক্তিযোদ্ধা বাজার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে। এ বাজারে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের ব্যবসা করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে।
_শেখ আব্দুল আওয়াল, গফরগাঁও

No comments

Powered by Blogger.