গণভবনে উঠলেন হাসিনা

 সরকার গঠনের ১৫ মাস পর যমুনা ছেড়ে গণভবনে উঠলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার সোয়া ১২টার দিকে পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, পুত্রবধূ ক্রিস্টিন জয়কে সঙ্গে নিয়ে শেরেবাংলা নগরের গণভবনে ওঠেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দ্বিতীয়বারের মতো গণভবনে উঠলেন বঙ্গবন্ধুর এই কন্যা। সংস্কার কাজের জন্য এতদিন তিনি গণভবনে উঠতে পারেননি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, জুমার নামাজের কিছু সময় আগে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে উঠেছেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবনে ওঠার আগেই সেখানের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। শুক্রবার সকাল থেকেই গণভবনের আশপাশে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা গেছে। এর আগে গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর গণভবনে ওঠার কথা ছিল। তবে ওই দিন তিনি গণভবেন ওঠেননি। তবে ব্যবহার্য জিনিসপত্র আগেই যমুনা থেকে নেয়া হয়েছিল গণভবনে।
প্রসঙ্গত ১৯৯৬ সালে প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর গণভবনেই ৫ বছর ছিলেন শেখ হাসিনা। ওই সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে হিসেবে প্রতীকী মূল্যে বাড়িটি তাঁর জন্য বরাদ্দ দেয় সরকার। বিএনপির জামায়াত জোট সরকার মতায় এসে ওই বরাদ্দ বাতিল করলে শেখ হাসিনা ধানম-িতে তাঁর স্বামী মরহুম ওয়াজেদ মিয়ার বাড়ি সুধা সদনে ওঠেন। দায়িত্ব নেয়ার পর গত বছরের ৬ ফেব্রম্নয়ারি শেখ হাসিনা ধানম-ির সুধা সদন ছেড়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উঠেছিলেন।
২০০১ সালের ১৬ আগস্ট শেখ হাসিনা গণভবন ছেড়ে যান। গণভবন প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন হলেও গত আট বছরে সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা লতিফুর রহমান এবং সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ফখরম্নদ্দীন আহমদ কেউই বসবাস করেননি। গত বিএনপি সরকার গণভবনের নাম পরিবর্তন করে প্রধানমন্ত্রী ভবন করেছিল। ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ভবনটির নাম প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন করা হয়। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা ফখরম্নদ্দীন আহমদ বসবাস করেছেন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়। গত ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ভবনটির সামনের পিতলের পেস্নট খুলে পুরনো নাম গণভবন লেখা পেস্নট লাগানো হয়েছে।
দীর্ঘ সময় গণভবন ব্যবহৃত না হওয়ায় সেখানে ধুলাবালি, আবর্জনা, দাগে ভরা দেয়াল, সঁ্যাতসেঁতে মেঝে, পুরনো পর্দা-কার্পেট, বিবর্ণ সোফা, শোচনীয় শৌচাগার প্রভৃতি কারণে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ফলে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সেখানে বসবাসের জন্য উঠতে পারেননি। গত প্রায় চৌদ্দ মাস ধরে তিনি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বসবাস করছেন। এ সময়ের মধ্যে গণপূর্ত বিভাগ রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত গণভবন সংস্কার করেছে।
উলেস্নখ্য, স্বাধীনতার পরে সরকারপ্রধানের বসবাসের জন্য এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তখনই ভবনটির নাম রাখা হয়েছিল গণভবন। তবে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রী হয়েও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ ভবনে স্থায়ীভাবে বসবাস করেননি।

No comments

Powered by Blogger.