ছাত্র সংগঠনের সম্পৃক্ততার ব্যাখ্যা চেয়ে তিন দলকে ইসির চিঠি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তাদের ছাত্র সংগঠনের সম্পৃক্ততা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দাবি করে প্রধান তিন রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন, ইসি। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধিত) আইন ২০০৯-এর '৯০-এর 'খ' ধারা মোতাবেক রাজনৈতিক দলের কোন অঙ্গ সংগঠন না থাকার বিধানটির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েই শাসক দল আওয়ামী লীগ,
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক বরাবর এই চিঠি ইস্যু করা হয় বলে শুক্রবার বাসস সূত্রে জানা গেছে। সাম্প্রতিককালে, আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জামায়াতের ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার বিষয়গুলো পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হওয়াতেই এই ব্যাখ্যা দাবি করা হয়েছে বলে ইসি সূত্রে জানানো হয়েছে। ইসির সহকারী সচিব স্বাৰরিত এসব চিঠিতে, তিন দলের সাধারণ সম্পাদককে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাবলীর চিত্র উপস্থাপন করে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়_নির্বাচন কমিশনে দল নিবন্ধন আইন ২৫-এর ১ ধারা মোতাবেক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, মহিলা লীগ, কৃষকলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, তাঁতি লীগ এবং যুব মহিলা লীগ অবশ্যই মূল দলের সহযোগী সংগঠন যা তাদের নিজস্ব গঠনতন্ত্র দ্বারা পরিচালিত হবে। কিন্তু সম্প্রতি পত্রিকানত্মরে প্রকাশিত কিছু সংবাদে উল্লেখ রয়েছে যে, মূল দলের তিন শীর্ষ নেতা ছাত্রলীগের সকল কর্মকা- তদারক করছেন। যা নির্বাচন কমিশনে দল নিবন্ধন বিধিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন বরাবর প্রেরিত চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলও নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন আইন এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধিত) আইন ২০০৯ মোতাবেক অঙ্গ সংগঠন নয় কেবল সহযোগী সংগঠন এবং নিজস্ব আইনে পরিচালিত। অথচ এ দু'টি দলের বেলাতেও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হসত্মৰেপ পাওয়া যাচ্ছে, যা উদ্বেগজনক। ইসির প্রেরিত পত্রে আর বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনের অনুষ্ঠানে ছাত্রদলকে বিএনপির অঙ্গ বলেই মনত্মব্য করেন। চিঠিতে এই বক্তব্যের ও কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে প্রেরিত চিঠিতে বলা হয়েছে_সম্প্রতি, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন খবরে ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের পরিচালনায় সরাসরি বিভিন্ন জামায়াত নেতৃবৃন্দের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। জামায়াতের মাধ্যমেই সকল বিধিনিষেধ উপেৰা করে অঙ্গ সংগঠন হিসেবেই এই ছাত্র সংগঠনটি পরিচালিত হচ্ছে। এমনকি, শিবিরের সর্বশেষ কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে জামায়াতে আমির মতিউর রহমান নিজামীর উপস্থিতি এবং জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতেই সংগঠনটির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়াও সম্প্রতি মিডিয়াতে ছাত্র শিবির নেতৃবৃন্দের বিভিন্ন বক্তব্যে জামায়াতের সেক্রেটারির দিকনির্দেশনাতেই শিবিরের কর্মর্কা- পরিচালিত হবার সংবাদে, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন আইনের গুরুতর লঙ্ঘন উল্লেখ করে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.