সাধারণ মানুষের ক্ষোভ অস্বীকার করে রায় গ্রহণযোগ্য হতে পারে না- জামায়াতকে সহযোগিতা করে বিএনপিও দেশে থাকার অধিকার হারিয়েছে ॥ কবীর চৌধুরীর জন্মদিনের আলোচনায় বক্তারা
সাধারণ মানুষের ক্ষোভকে অস্বীকার করে কোন
রায় গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তারা যেভাবে চায় বিচারপতিদের রায় সেভাবেই দিতে
হবে। রায়ের মাধ্যমে তাদের আর অপমান করা যাবে না।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ রায় নিশ্চিত করতে আইনের ভেতর যে বিভ্রান্তি রয়েছে
তাও দূর করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা এদেশে থাকতে পারবে না।
জামায়াতকে সহযোগিতা করায় বিএনপিও দেশে থাকার অধিকার হারিয়েছে। শাহবাগের
আন্দোলন বিএনপির জন্য অশনি সঙ্কেত। বিএনপি যদি জামায়াতকে ত্যাগ না করে
তাহলে মানুষ জামায়াতকে যেভাবে সাধারণ মানুষ আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করেছে,
বিএনপিকে সেভাবে আঁস্তাকুড়ে ফেলে দেবে। জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর ৯১তম
জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত স্মারক বক্তৃতা ও আলোচনাসভায় দেশের বিশিষ্টজনরা এসব
কথা বলেন।
শনিবার রাজধানীর বিলিয়া মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে এ আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতির বক্তৃতায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করলেও একে প্রতিফলিত করতে পারিনি। কিন্তু এটা ঘুচিয়ে দেয়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্ম কাঁধে নিয়েছে। নতুন প্রজন্মের এ আন্দোলন যাতে বিপথগামী হয়ে না পড়ে সেজন্য সঠিক নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধে সপক্ষ শক্তিকে এ আন্দোলন এগিয়ে নেয়ার দিকনির্দেশনা দিতে হবে।
অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও সাধারণ মানুষ একসঙ্গে চলতে পারে না। অধিকার আদায়ের যে সংগ্রাম শুরু হয়েছে তাকে থামানো যাবে না। যারা এ লড়াইয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে তাদের ঠাঁই হবে না। জামায়াতে ইসলামী একটি খুনীর দল। তারা এদেশে থাকতে পারবে না। তাদের সহযোগী হিসেবে বিএনপির এদেশে থাকার অধিকার নেই। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের ক্ষোভকে অস্বীকার করে কোন রায় দেয়া হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। রায়ের মাধ্যমে তাদের আর অপমান করা যাবে না।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও তদন্তকারী সংস্থাও হতাশ হয়েছে। আইনে রাষ্ট্রপক্ষেরও আপীলের সুযোগ রাখা হয়নি। তিনি বলেন রায়ে জামায়াতে ইসলামীকে একটি ক্রিমিনাল রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু আদালতের এই অভিমতের ভিত্তিতে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা যেতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের কাছে খবর রয়েছে আইনের দুর্বলতা দূর করতে সরকার সংশোধনী আনার চেষ্টা করছে। এটা করা হলে সরকার আপীল করতে পারবে।
স্মারক বক্তৃতায় লেখক গবেষক মুনতাসীর মামুন বলেন, ’৭১-এর পরে দেশে এ ধরনের গণজাগরণ আর ঘটেনি। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে জামায়াতকে যারা দায়হীনতা সৃষ্টি করেছে সেই বিএনপিও নৈতিক মানদণ্ডে অপরাধী। তিনি বলেন, মিডিয়াও যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি সময় সময় সহানুভূতি দেখিয়েছে। সাক্ষীদেরও সুরক্ষা দেয়া হয়নি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে মিডিয়াতে টকশোর নামে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের নিয়ে তামাশা করা হচ্ছে। এভাবে মিডিয়া পরোক্ষভাবে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়েছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিষয়টি একতরফা হতে হবে। সেখানে বিরোধীদের কোন স্থান হবে না। ট্রাইব্যুনালে কোন অসম্পূর্ণ রায় দেয়া যাবে না। ইতিহাসের দায় বিচারকদেরও মেটাতে হবে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও এক ধরনের রাজনীতি। এ রাজনীতি আমাদের এগিয়ে নিতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলনকে আবেগ দিয়ে দেখা চলবে না। সংগঠিত করার মাধ্যমে তা এগিয়ে নিতে হবে। আইনের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের সুরক্ষা দিতে হবে।
কাদের মোল্লার রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে দেশের জনগণকে অপমান করা হয়েছে। সার্বিকভাবে বিচার বিবেচনা করে রায় প্রদান করতে হবে। জয় বাংলার ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সামগ্রিক মনোজগতে আধিপত্য বিস্তার করাতে হবে। জামায়াতীদের প্রতিরোধে পাড়ায় মহল্লায় তাদের উৎখাত করতে হবে। তারা একটি বাসে আগুন লাগালে ইসলামী ব্যাংকের শাখা উৎখাত করতে হবে। তিনি বলেন ইতিহাসকে নিজের পক্ষে রাখার লড়াই করতে হবে।
অধ্যাপক মেজবাহ কামাল বলেন, সকল ধর্ম জাতিগোষ্ঠীর অধিকারের প্রশ্নে কবীর চৌধুরী ছিলেন অনমনীয়। তিনি রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধের পথ দেখিয়ে গেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল আমাদের অনেক অর্জন। দায়হীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পথ দেখিয়েছে এ ট্রাইব্যুনাল। আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, শাহবাগের আন্দোলন বিএনপির জন্য অশনি সঙ্কেত। তরুণ প্রজন্ম যেভাবে জামায়াত-শিবিরকে আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করেছে বিএনপি তেমনিভাবে আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদেও মধ্যে বক্তৃতা করেন শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক হারুন হাবিব, প্রজন্ম একাত্তরের সভাপতি সাংবাদিক শাহীন রেজা নূর।
শনিবার রাজধানীর বিলিয়া মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে এ আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতির বক্তৃতায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করলেও একে প্রতিফলিত করতে পারিনি। কিন্তু এটা ঘুচিয়ে দেয়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্ম কাঁধে নিয়েছে। নতুন প্রজন্মের এ আন্দোলন যাতে বিপথগামী হয়ে না পড়ে সেজন্য সঠিক নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধে সপক্ষ শক্তিকে এ আন্দোলন এগিয়ে নেয়ার দিকনির্দেশনা দিতে হবে।
অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও সাধারণ মানুষ একসঙ্গে চলতে পারে না। অধিকার আদায়ের যে সংগ্রাম শুরু হয়েছে তাকে থামানো যাবে না। যারা এ লড়াইয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে তাদের ঠাঁই হবে না। জামায়াতে ইসলামী একটি খুনীর দল। তারা এদেশে থাকতে পারবে না। তাদের সহযোগী হিসেবে বিএনপির এদেশে থাকার অধিকার নেই। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের ক্ষোভকে অস্বীকার করে কোন রায় দেয়া হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। রায়ের মাধ্যমে তাদের আর অপমান করা যাবে না।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও তদন্তকারী সংস্থাও হতাশ হয়েছে। আইনে রাষ্ট্রপক্ষেরও আপীলের সুযোগ রাখা হয়নি। তিনি বলেন রায়ে জামায়াতে ইসলামীকে একটি ক্রিমিনাল রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু আদালতের এই অভিমতের ভিত্তিতে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা যেতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের কাছে খবর রয়েছে আইনের দুর্বলতা দূর করতে সরকার সংশোধনী আনার চেষ্টা করছে। এটা করা হলে সরকার আপীল করতে পারবে।
স্মারক বক্তৃতায় লেখক গবেষক মুনতাসীর মামুন বলেন, ’৭১-এর পরে দেশে এ ধরনের গণজাগরণ আর ঘটেনি। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে জামায়াতকে যারা দায়হীনতা সৃষ্টি করেছে সেই বিএনপিও নৈতিক মানদণ্ডে অপরাধী। তিনি বলেন, মিডিয়াও যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি সময় সময় সহানুভূতি দেখিয়েছে। সাক্ষীদেরও সুরক্ষা দেয়া হয়নি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে মিডিয়াতে টকশোর নামে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের নিয়ে তামাশা করা হচ্ছে। এভাবে মিডিয়া পরোক্ষভাবে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়েছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিষয়টি একতরফা হতে হবে। সেখানে বিরোধীদের কোন স্থান হবে না। ট্রাইব্যুনালে কোন অসম্পূর্ণ রায় দেয়া যাবে না। ইতিহাসের দায় বিচারকদেরও মেটাতে হবে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও এক ধরনের রাজনীতি। এ রাজনীতি আমাদের এগিয়ে নিতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলনকে আবেগ দিয়ে দেখা চলবে না। সংগঠিত করার মাধ্যমে তা এগিয়ে নিতে হবে। আইনের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের সুরক্ষা দিতে হবে।
কাদের মোল্লার রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে দেশের জনগণকে অপমান করা হয়েছে। সার্বিকভাবে বিচার বিবেচনা করে রায় প্রদান করতে হবে। জয় বাংলার ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সামগ্রিক মনোজগতে আধিপত্য বিস্তার করাতে হবে। জামায়াতীদের প্রতিরোধে পাড়ায় মহল্লায় তাদের উৎখাত করতে হবে। তারা একটি বাসে আগুন লাগালে ইসলামী ব্যাংকের শাখা উৎখাত করতে হবে। তিনি বলেন ইতিহাসকে নিজের পক্ষে রাখার লড়াই করতে হবে।
অধ্যাপক মেজবাহ কামাল বলেন, সকল ধর্ম জাতিগোষ্ঠীর অধিকারের প্রশ্নে কবীর চৌধুরী ছিলেন অনমনীয়। তিনি রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধের পথ দেখিয়ে গেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল আমাদের অনেক অর্জন। দায়হীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পথ দেখিয়েছে এ ট্রাইব্যুনাল। আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, শাহবাগের আন্দোলন বিএনপির জন্য অশনি সঙ্কেত। তরুণ প্রজন্ম যেভাবে জামায়াত-শিবিরকে আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করেছে বিএনপি তেমনিভাবে আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদেও মধ্যে বক্তৃতা করেন শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক হারুন হাবিব, প্রজন্ম একাত্তরের সভাপতি সাংবাদিক শাহীন রেজা নূর।
No comments