যুদ্ধাপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক সমর্থন রয়েছে জানালেন আইনমন্ত্রী

'৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক সমর্থন রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে পাকিস্তান কিছুটা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছিল। পাকিস্তান বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে চেষ্টা করেছিল যুদ্ধবন্দীদের বিচার বন্ধ করতে।
কিন্তু আমরা বলেছি, বাংলাদেশ কোন যুদ্ধবন্দীর বিচার করছে না। বিচারের এ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে বলেছে, এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে কোন দেশের হস্তক্ষেপ করা সমীচীন হবে না। আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ এ কথা বলেছেন। স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারে মানবাধিকার সংগঠন 'অধিকার' আয়োজিত আলোচনাসভায় আইনমন্ত্রী আরও বলেন, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ সমর্থন জানিয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচারে বাংলাদেশ লাভবান হবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'অতীতের ঘটনার বিচারে আমরা ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (এ্যাক্ট) সংশোধন করেছি। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের বিচারের জন্য বিভিন্নভাবে বাংলাদেশ সহায়তা পাবে।
'অধিকার' সভাপতি সিআর আকবরের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ফোরাম এশিয়ার চেয়ারম্যান সুরোধ রাজ পাকুরেল, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত আরফ হেরেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ জমির, কোয়ালিশন ফর দি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (সিআইসিসি)-এর প্রোগ্রাম এ্যাসোসিয়েট রেবেকা ডিই লোজাডা।
বিকেলে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ সুপ্রীমকোর্টে সামসুল হক চৌধুরী হলে 'মুক্তিযুদ্ধ ও গণমুক্তি আন্দোলন' আয়োজিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আজ সময় ও জনগণের দাবি আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি বলেন, সরকারকে জনগণ যে ম্যান্ডেট দিয়েছে, জনগণ যা চায় সেটা হলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। সংসদের প্রথম অধিবেশনেই এটা সর্বসম্মতভাবে পাস হয়েছে। বাজেটে ১০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আগামী বাজেটেও থোক বরাদ্দ রাখা হবে। বিচার শীঘ্রই শুরম্ন হবে। বিচারের জন্য ইতোমধ্যে আনত্মর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি দেশের মধ্যে যে সমসত্ম সংগঠনের কাছে সাৰ্য-প্রমাণ রয়েছে, তাও পাব। ইতোমধ্যে যাচাইবাছাই শুরম্ন হয়েছে। আইজি পদে ছিলেন এমন যোগ্য ব্যক্তিদেরই তদনত্মকারী সংস্থা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে।
প্রসিকিউশন টিমও অভিজ্ঞ, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়েই করা হবে। জেলা ও হাইকোর্টে যাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদেরকেই নেয়া হবে। ট্রাইবু্যনালে যিনি হাইকোর্টের বিচারপতি আছেন তাঁকে চেয়ারম্যান করা হবে। তিনি বলেন, ট্রাইবু্যনালের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এটা দেশের জনগণের দাবি, সবার দাবি। বর্তমান সরকার আইনের শাসনে বিশ্বাসী। তাদের (যুদ্ধাপরাধী) বিচারে না আনা গেলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না। কোন অবস্থাতেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে না, কারও মনে যেন এমন সন্দেহের সৃষ্টি না হয়। আইন এবং ট্রাইবু্যনালে যারা থাকবে তারা অভিজ্ঞ ও আনত্মর্জাতিক মানের।
আইনমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে গেছি, সেখানে জামায়াতের কিছু লোক মানববন্ধন করেছে, যাতে বিচার না হয়। তারা নানাভাবে সংগঠিত হচ্ছে। বিদেশ থেকে আইনজীবী আনার চেষ্টা করছে। সেইভাবে তারা ফান্ডও করে রেখেছে। এ ব্যাপারে আইনজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ড. মোহাম্মদ সেলিমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, এ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম, এ্যাডভোকেট আব্দুল কুদ্দুস, এ্যাডভোকেট কেএম সাইফুদ্দিন, এ্যাডভোকেট মনসুরম্নল হক চৌধুরী, এ্যাডভোকেট মমতাজউদ্দিন আহমেদ (মেহেদী) এবং এ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মামুন।

No comments

Powered by Blogger.