পুষ্টিমানসমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাসে ভালো ঘুম

নিয়মিত ঘুমের অভাবে অতিরিক্ত খাবারের প্রতি আমাদের আসক্তি বাড়তে পারে। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস কি আমাদের ঘুমে বিঘ্ন ঘটাতে পারে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, পুষ্টিমানসমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাস মানুষের ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুম এবং পরিমিত খাদ্যাভ্যাস সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ হিসেবে পরিচিত। স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে পরিমিত খাবারের বিকল্প নেই। আর যারা প্রতি রাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমায়, তাদের সার্বিক সুস্থতার সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি।
অ্যাপেটাইট সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, অতিরিক্ত খাবার গ্রহণে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। এ ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই পর্যাপ্ত তথ্য পেয়েছেন। তবে খাদ্যাভ্যাস ঠিক কীভাবে ঘুমকে নিয়ন্ত্রণ করে সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ারম্যান স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকেরা এ ব্যাপারে অনুসন্ধান করেছেন। তাঁরা ২০০৭-০৮ সালের জাতীয় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিরীক্ষা জরিপে (এনএইচএএনইএস) অংশগ্রহণকারী চার হাজার ৫৪৮ জনের খাদ্যাভ্যাস ও ঘুমের তথ্য-উপাত্ত পর্যবেক্ষণ করেন। এতে দেখা যায়, প্রতি রাতে কম (পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা) ঘুমে অভ্যস্ত ব্যক্তিরা বেশি খাবার (ক্যালরি) গ্রহণ করে থাকে। স্বাভাবিক ঘুমে (সাত থেকে আট ঘণ্টা) অভ্যস্ত ব্যক্তিরা তুলনামূলক কম ক্যালরি গ্রহণ করে এবং একেবারে কম (সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা) অভ্যস্ত ব্যক্তিরা সবচেয়ে কম ক্যালরি গ্রহণ করে থাকে। আর স্বাভাবিক ঘুমে অভ্যস্ত ব্যক্তিদের খাদ্যাভ্যাসে সর্বোচ্চ পুষ্টিমান ও বৈচিত্র্য রয়েছে।
অনুকল্পভিত্তিক অপর এক গবেষণায় খাদ্যাভ্যাস মানুষের ঘুমের ওপর কমবেশি প্রভাব ফেলে। বেশি পানি পান করলে রাতে বারবার শৌচাগারে যাওয়া কিংবা মসলাদার খাবার গ্রহণের ফলে ঘুমের ব্যাঘাতের বিষয়টি সবারই জানা। কিন্তু খাদ্যাভ্যাস মানুষের ওপর প্রচ্ছন্ন আরও কিছু প্রভাব ফেলে বলে মনে করেন মার্কিন গবেষক মাইকেল গ্র্যান্ডার। অনিদ্রা থেকে স্থূলতার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। বৈচিত্র্যময়, সমন্বিত ও পুষ্টিমানসমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাস মানুষের ভালো ঘুম নিশ্চিত করতে পারে। এতে স্থূলতা ও হূদেরাগের ঝুঁকি হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে হয়তো একদিন সুনির্দিষ্ট খাদ্যতালিকা প্রণয়নে সমর্থ হবেন। টাইম ও সিএনএন।

No comments

Powered by Blogger.