ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডাকাতরা ট্রেন থেকে ৫ যাত্রীকে ফেলে দিয়েছে, হত ৪- তিন পুলিশ সাসপেন্ড

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকাগামী মেইল ট্রেন তিতাস কমিউটার ট্রেনে যাত্রীবেশী ডাকাতরা ভয়াবহ তা-ব চালিয়েছে। ডাকাতদল চলন্ত ট্রেন থেকে ৫ যাত্রীকে ফেলে দেয়ায় এক মহিলাসহ ৪ যাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
গুরুতর আহত হয়ে একজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতরা হলো বিজয়নগর উপজেলার মেরাসানী গ্রামের মন মিয়ার পুত্র খায়ের মিয়া (৪০), সুধ মিয়া (৪৮) ও মুসলিমা মিয়ার স্ত্রী শাহানা বেগম (৪৫) এবং অজ্ঞাত এক শিশু (১২)। পুলিশ ও আহত ট্রেন যাত্রী রুবেল মিয়া (৩৫) জানান, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে ঢাকাগামী তিতাস কমিউটার ট্রেনটি আখাউড়া রেলওয়ে জংশন থেকে ছেড়ে যায়। প্রায় আধা ঘণ্টা পর ট্রেনটি পাঘাচং রেলস্টেশনে আসে। তখন সেখান থেকে ৭/৮ জন যাত্রীবেশী ডাকাত ট্রেনে ওঠে। ডাকাতরা প্রথমে ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে থাকা একটি কক্ষে যাত্রীদের অবস্থা দেখে যায়। ঐ কক্ষে এক মহিলাসহ ৫ যাত্রী ছিল। ডাকাতরা যাত্রীদের ওপর প্রথমে লুটপাট ও হামলা চালায়। যাত্রীরা বাধা দিলে ডাকাতরা রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সোহাতা নামক স্থানে একজন, ভাদুঘর ডালিবাড়ি এলাকায় ২ জন এবং ভাদুঘর করুলিয়া ব্রিজের কাছে ২ জনকে ফেলে দেয়। এতে কুরুলিয়া ব্রিজের কাছে একজন পুরুষ ও মহিলা এবং সোহাতা গ্রামের কাছে ঘটনাস্থলেই ২ জনের মৃত্যু হয় এবং আহত অবস্থায় আমাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ট্রেন থেকে যাত্রী ফেলে দেয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনযাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ সুপার মোঃ মনিরুজ্জামান পিপিএম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবদুর রব ও আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুল ইসলাম নিহত সুধ মিয়া ও শাহানা বেগম বিদেশের ব্যাপারে ঢাকা যাচ্ছিলেন। তিতাস ট্রেনের পরিচালক কামাল হোসেন এবং চালক আবুল কালাম জানান, ডাকাতির ঘটনা আমরা শুনিনি। ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছার পর সংবাদ মাধ্যমে আমরা ওই ট্রেনে ডাকাতির খবর পাই। এর আগে কিছুই টের পাইনি। আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, খুনসহ ডাকাতির মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বিকেলে জেলা সদর হাসপাতালে নিহতদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ জানান, ট্রেনের নিরাপত্তার দায়িত্বে ৩ জন পুলিশ সদস্য ছিলেন। তাঁরা ডাকাতির বিষয়টি আঁচ করতে পারেননি। তার পরও বিভাগীয় ব্যবস্থা হিসেবে তাদের ৩ জনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.