ফিরে দেখা ২০১২- খান একাডেমী কথকতা by সালমান খান

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসী। তাঁর আইডিয়া বিনামূল্যে অনলাইন ভিডিও টিউটোরিয়াল িি.িশযধহধপধফবসু.ড়ৎম। তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত খান একাডেমী করেছে বিশ্ব জয়।
বাস করেন ইজিয়ানার নিউ অরলিয়েন্সে। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে অঙ্ক, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্স। এরপর হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে এমবিএ। বোঝাই যাচ্ছে সালমান অঙ্কে তুখোড়।
খান একাডেমীর শুরু ২০০৪ সালে। কাজিনকে অঙ্ক শিখাতে হবে। সালমান খান থাকেন অন্য শহরে। কী আর করা, আশ্রয় নিলেন অনলাইনের। বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইউটিউবে বোনকে অঙ্ক কষে বোঝাতে লাগলেন সালমান খান। প্রথমে বোনের মধ্যেই এই অঙ্ক শেখানোটা সীমাবদ্ধ থাকলেও ধীরে ধীরে বোনের বান্ধবীদের মধ্যেও বিষয়টি ছড়িয়ে যায়। দ্রুত বাড়তে থাকল শিক্ষার্থীর সংখ্যা। বর্তমানে এই শিক্ষার্থীর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে কয়েক কোটি। অন্য যে কোন শিক্ষকের চেয়ে তাঁর শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি।
ঠিক করলেন এবার পড়াবেন, শুধুই পড়াবেন। ২০০৯ সালে লোভনীয় চাকরিটাও ছেড়ে দিলেন। নিজের বাড়িতে ছোট্ট একটা কক্ষে এক কোটি ছাত্র নিয়ে শুরু হলো খান একাডেমি। অবশ্যই অনলাইনে। এক একটা টিউটোরিয়ালের সময় ১০ থেকে ২০ মিনিট। ইউটিউবে রয়েছে খান একাডেমির লাখ লাখ টিউটোরিয়াল। আজ তাঁর ছাত্র সংখ্যা কোটির ওপরে।
ইউটিউবে অঙ্ক শেখা আমেরীকায় এতটা জনপ্রিয় হয়েছে যে সেদেশের স্কুল শিক্ষার্থীরা আইপ্যাডের মাধ্যমে অঙ্ক শিখতে দ্বারস্থ হন খান একাডেমির। শুধু কী তাই! মাইক্রো সফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের সন্তানরাও তালিম নেন খান একাডেমী থেকে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সাময়িকী টাইমের দৃষ্টিতে ২০১২ সালের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন সালমান খান। টাইম ম্যাগাজিনে তাঁর ওপর যে নিবন্ধ ছাপা হয় তাও লিখে দেন বিল গেটস। ‘ওঁ একজন সত্যিকারের শিক্ষা উদ্যোক্তা। গণিত শেখানোর মধ্য দিয়ে ও শুরুটা করেছে, শিক্ষার ক্ষেত্রে ওর উদ্ভাবনের প্রভাবটা কিন্তু অগণিত!’ এই স্বীকৃতি দিয়েছেন বিল গেটসই।

ওবামার আরেক বিজয়
দ্বিতীয় মেয়াদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন বারাক ওবামা। তাঁর জন্য তো বটেই ক্ষমতাসীন ডেমক্র্যাটিক দলের জন্য এ এক বড় বিজয়। এ খবর সবারই জানা। এ বিজয় জেনেছে সারা বিশ্বের সব দেশের মানুষ। এক নম্বর ক্ষমতাধর দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বলে কথা!
ওবামার আরও এক বিজয় রয়েছে। তা সামাজিক যোগাযোগ সাইটে। নির্বাচনে জয়ের আনুষ্ঠানিক ফল জানার পর পরই বারাক ওবামা তাঁর টুইটার এ্যাকাউন্টে অগণিত ভক্ত-সমর্থকদের উদ্দেশে একটি ছবি পোস্ট করেন ও সেই সঙ্গে টুইট করেন ‘আরও চার বছর’। সঙ্গে সঙ্গেই পড়ে যায় ধুমিয়ে লাইক দেয়ার হিড়িক। তাঁর এই টুইটটি তাঁর ভক্তকুল ছাড়াও বিশ্বের নানা দেশের নানা প্রান্তের সামাজিক যোগাযোগ সাইট ব্যবহারকারীদের দ্বারা পুনঃটুইট হয়েছে, যা সামাজিক যোগাযোগ সাইটের ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান-এর নবেম্বর এক অনলাইন সংখ্যায় প্রকাশিত তথ্য মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই ছবিসমেত টুইটটি ৭ লাখবার পুনঃটুইট করা হয়েছে। শুধু ৩২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ ফেসবুকে ছবিটিতে লাইক দিয়েছেন! শুধু কী তাই! ৪ লাখ লোক নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ সাইটে ছবিটি শেয়ারও করেছেন। আর এই সামগ্রিক চিত্র সামাজিক যোগাযোগ সাইটের ইতিহাসে এক অনন্য রেকর্ড। এর আগে কোন ছবি বা টুইট এত এত বার পুনঃটুইটও হয়নি, লাইকও পায় নি এতসংখ্যক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলে কথা। লাইক, শেয়ার ও কমেন্ট-র এ সংখ্যা যে আরও এত বাড়বে তাতে আর বিস্ময়ের কী!
ওবামা যে ছবিসহ তাঁর ওই টুইটটি করেছেন, তাতে দেখা যায় মেঘাচ্ছন্ন, কিছুটা ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ পশ্চাদপটে ওবামা তাঁর স্ত্রী মিশেলের সঙ্গে আলিঙ্গনরত। এই ফটো টুইট করার ফলেই সমগ্র বিশ্বের মানুষ সরাসরি ও এক রকম প্রত্যক্ষভাবেই প্রেসিডেন্ট ওবামাকে বিজয়ী সম্ভাষণ জানানোর সুযোগ পেয়েছেন। উল্লেখ্য, বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘পিকচারস অব দ্য ইয়ার’ অর্থাৎ আলোকচিত্রের যে সালতামামি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতেও ঠাঁই করে নিয়েছে এই ছবিটি।

১০০ কোটির মাইলফলকে ফেসবুক
একবিংশ শতাব্দীতে যোগাযোগ প্রযুক্তির জয়জয়কার। আর এতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলো। সব প্রজন্মের কাছে বিশেষত তরুণ প্রজন্মের কাছে সামাজিক যোগাযোগ সাইট আজ অপরিহার্য এক বিষয়। ফেসবুক, টামব্লর, পিনটারেস্ট, ইনস্ট্রাগ্রাম, টুইটার, গুলগ প্লাস, আরও কত কী যে, তার যেন ইয়ত্তা নেই। এগুলোর মধ্যে ফেসবুক সবচেয়ে শক্তিশালী ও জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ সাইট হিসেবে স্বীকৃত। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ কোটির মাইলফলকে পৌঁছায়। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর এক পোস্টের মাধ্যমে এই সংবাদ জানিয়ে দেন। জানিয়ে দেন এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমেও। বিশ্বের সকল প্রান্তের মানুষের কাছে অচিরেই ফেসবুক পৌঁছে যাবে, এক শ’ কোটির মাইলফলকে পৌঁছানোর পর এমন প্রত্যাশাই ব্যক্ত করলেন ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা।

র্যাপ মিউজিশিয়ান সাইয়ের রেকর্ড
সাই। ৩৪ বছর বয়সী দক্ষিণ কোরীয় জনপ্রিয় পপতারকা, র্যাপ মিউজিশিয়ান ও কম্পোজার। দেশের গ-ি পেরিয়ে ইতোমধ্যে জনপ্রিয়তা কুড়াতে সক্ষম হয়েছেন পাশ্চাত্য মহলেও। সম্প্রতি গ্যাংনাম স্টাইল ব্যবহার করেই দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় এই পপতারকা, র্যাপ মিউজিশিয়ান বিশ্ব মাত করে ফেলেছেন। বিশ্ব মাত করেছেন গ্যাংনাম স্টাইল নাচসহযোগে গাওয়া ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ শিরোনামে তাঁর এক ভিডিও গানের মাধ্যমে। তাঁর গ্যাংনাম স্টাইল গানটি ইউটিউবে ১ বিলিয়ন অর্থাৎ ১০ কোটি মানুষ দেখেছেন, যা ইউটিউবে কোন পোস্ট দেখার দিক থেকে এক অনন্য রেকর্ড। এর আগে ইউটিউবে পোস্ট করা আর কোন ভিডিও ১ বিলিয়নের মাইলফলক পৌঁছতে পারেনি।
সাই-এর ইউটিউবে ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ শিরোনামের ভিডিও গানটি টপকে গেছে অপর এক জনপ্রিয় পপতারকার রেকর্ডকেও। এর আগে জাস্টিন বিবারের ‘বেবি’ শিরোনামের গানটি ছিল ইউটিউবে সবচেয়ে বেশিবার দেখা ভিডিও। সাই-এর ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ শুধু জাস্টিন বিবারের জনপ্রিয়তার দুর্গেই হানা দেয়নি, প্রথমবারের মতো টপকে গেছে ১ বিলিয়নের মাইলফলককে।
১৫ জুলাই গ্যাংনাম স্টাইল গানটি ইউটিউবে পোস্ট করা হয়। পাঁচ মাসেরও কম সময়ে ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ পৌঁছে যায় ১ বিলিয়নের মাইলফলকে। সত্যিই বিস্ময়কর! বিস্ময় মেনেছেন পপতারকা সাইও।
নবেম্বরে এমটিভি ইউরোপ মিউজিক এ্যাওয়ার্ডে তাঁর ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ শ্রেষ্ঠ ভিডিও ক্যাটাগরিতে পুরস্কার লাভ করে। এমটিভি সাই-এর সঙ্গে জুরে দেয় কিং অব ইউটিউব উপাধি। গ্যাংনাম স্টাইল ১ বিলিয়নের মাইলফলকে পৌঁছানো সারা বিশ্বে তাঁর জনপ্রিয়তাকে যে আরও বাড়িয়ে দেবে, এতে কোন সন্দেহ নেই।
ডিপ্রজন্ম ডেস্ক

No comments

Powered by Blogger.